০৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আর্থিক খাতের পারফরম্যান্সে হিসাব কষছেন বিনিয়োগকারীরা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:২৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মে ২০২১
  • / ৪২৩১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ করোনার তান্ডব থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত লকডাউনে সীমিত পরিসরে পুঁজিবাজার চালু থাকলেও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে সাধারণত লেনদেন কম থাকে। বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক থাকে মুনাফা তুলে নেয়ার। কিন্তু এ সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। এর ফলে মুনাফার নতুন হিসাব-নিকাশ করছেন বিনিয়োগকারীরা। শেয়ার লেনদেনও বেশি করছেন। সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজারেই।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) গত সপ্তাহের লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে এমন তথ্য। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ৬ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বৃদ্ধি পায় ১২৬ দশমিক ৪০ পয়েন্ট, ডিএস৩০ ২৬ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট ও ডিএসইএস দুই দশমিক ৩৭ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ২৫৪টির, কমে ৬৯টির, অপরিবর্তিত থাকে ৪৮টির ও লেনদেন হয়নি চারটির।

বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আর্থিক খাতের শেয়ারের প্রতিই বেশি আগ্রহ তাদের। এছাড়া ওষুধ, খাদ্য ও নির্মাণ খাতের মৌলভিত্তির শেয়ারেও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন অনেকেই। বছর শেষ হওয়ায় ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অনেক কোম্পানি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এতে কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা বুঝতে পারছে তারা। আবার করোনা মহামারির মধ্যেও অনেকের ব্যবসা ভালো হয়েছে। সেসব কোম্পানির সক্ষমতা আছে ধরে নিয়ে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে শেয়ার কিনছেন। এভাবেই লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে।

অপরদিকে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ-পূর্ববর্তী সময়ে সাধারণত পুঁজিবাজারের সূচক নিম্নমুখী থাকে। অতীতে তাই দেখা গিয়েছে। এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। করোনা মহামারিতে সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে পুঁজিবাজার। অনেকেরই আয়ের খাত সংকুচিত হয়ে গেছে। তাদের একটি অংশ পুঁজিবাজারে সক্রিয় হয়েছেন। এতে লেনদেন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে শঙ্কার দিকটিও নজরে এনেছেন তারা। কারণ হিসেবে বলছেন, বিমা খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধির সাম্প্রতিক প্রবণতার কোনো যৌক্তিক কারণ পাওয়া যাচ্ছে না। হু-হু করে বাড়ছে কয়েকটির শেয়ারদর। ডিএসইর মোট লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ৩০ শতাংশ অবদান রাখে সাধারণ বিমা খাত। এতে অনেকেই প্রলুব্ধ হচ্ছেন। এটি শঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে বাজারের, বিশেষ করে ব্যক্তি আয়ের বিনিয়োগকারীদের।

শেয়ার লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ায় গত এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে ছয় হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। তথ্য বলছে, ডিএসইতে তালিকাভুক্ত শেয়ার ও ইউনিটের খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে শেয়ারদরে আগের চেয়ে গেইনারে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড আট দশমিক ২৩ শতাংশ, খাতভিত্তিক গেইনারে যা সর্বোচ্চ। এছাড়া জীবন বিমা খাত ছয় দশমিক ৬৬ শতাংশ, ব্যাংক চার দশমিক ৬৭ শতাংশ, এনবিএফআই চার দশমিক ৬৭ শতাংশ ও সাধারণ বিমা খাত শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ গেইনারে ছিল।

অপরদিকে অ-আর্থিক কোম্পানিগুলোয় মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে এসময়ে। জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাত এক দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রকৌশল এক দশমিক ১৮ শতাংশ এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ গেইনারে ছিল। অপরদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় লোকসান গুনে টেলিকম খাত শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ ও ওষুধ খাত শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ।

একক কোম্পানি হিসেবে গত সপ্তাহে ডিএসইতে শেয়ারদর বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০টির প্রথম অবস্থানে উঠে আসে মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় আলোচিত সময়ে ৪৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এছাড়া শীর্ষ ১০টিতে স্থান করে নেয় মালেক স্পিনিং মিলস, ম্যাকসনস স্পিনিং মিলস, ডেল্টা স্পিনার্স, ন্যাশনাল ফিড মিল, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি কমাশিয়াল ব্যাংক, জাহিন স্পিনিং, সায়হাম কটন মিলস ও রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস।

অপরদিকে শেয়ারদর হারানোর শীর্ষ তালিকায় উঠে আসে ইস্টার্ন ব্যাংক, সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ ও উত্তরা ব্যাংক।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

আর্থিক খাতের পারফরম্যান্সে হিসাব কষছেন বিনিয়োগকারীরা

আপডেট: ০৩:২৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মে ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ করোনার তান্ডব থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত লকডাউনে সীমিত পরিসরে পুঁজিবাজার চালু থাকলেও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে সাধারণত লেনদেন কম থাকে। বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক থাকে মুনাফা তুলে নেয়ার। কিন্তু এ সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। এর ফলে মুনাফার নতুন হিসাব-নিকাশ করছেন বিনিয়োগকারীরা। শেয়ার লেনদেনও বেশি করছেন। সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজারেই।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) গত সপ্তাহের লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে এমন তথ্য। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ৬ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বৃদ্ধি পায় ১২৬ দশমিক ৪০ পয়েন্ট, ডিএস৩০ ২৬ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট ও ডিএসইএস দুই দশমিক ৩৭ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ২৫৪টির, কমে ৬৯টির, অপরিবর্তিত থাকে ৪৮টির ও লেনদেন হয়নি চারটির।

বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আর্থিক খাতের শেয়ারের প্রতিই বেশি আগ্রহ তাদের। এছাড়া ওষুধ, খাদ্য ও নির্মাণ খাতের মৌলভিত্তির শেয়ারেও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন অনেকেই। বছর শেষ হওয়ায় ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অনেক কোম্পানি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এতে কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা বুঝতে পারছে তারা। আবার করোনা মহামারির মধ্যেও অনেকের ব্যবসা ভালো হয়েছে। সেসব কোম্পানির সক্ষমতা আছে ধরে নিয়ে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে শেয়ার কিনছেন। এভাবেই লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে।

অপরদিকে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ-পূর্ববর্তী সময়ে সাধারণত পুঁজিবাজারের সূচক নিম্নমুখী থাকে। অতীতে তাই দেখা গিয়েছে। এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। করোনা মহামারিতে সীমিত পরিসরে খোলা রয়েছে পুঁজিবাজার। অনেকেরই আয়ের খাত সংকুচিত হয়ে গেছে। তাদের একটি অংশ পুঁজিবাজারে সক্রিয় হয়েছেন। এতে লেনদেন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে শঙ্কার দিকটিও নজরে এনেছেন তারা। কারণ হিসেবে বলছেন, বিমা খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধির সাম্প্রতিক প্রবণতার কোনো যৌক্তিক কারণ পাওয়া যাচ্ছে না। হু-হু করে বাড়ছে কয়েকটির শেয়ারদর। ডিএসইর মোট লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ৩০ শতাংশ অবদান রাখে সাধারণ বিমা খাত। এতে অনেকেই প্রলুব্ধ হচ্ছেন। এটি শঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে বাজারের, বিশেষ করে ব্যক্তি আয়ের বিনিয়োগকারীদের।

শেয়ার লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ায় গত এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে ছয় হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। তথ্য বলছে, ডিএসইতে তালিকাভুক্ত শেয়ার ও ইউনিটের খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে শেয়ারদরে আগের চেয়ে গেইনারে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড আট দশমিক ২৩ শতাংশ, খাতভিত্তিক গেইনারে যা সর্বোচ্চ। এছাড়া জীবন বিমা খাত ছয় দশমিক ৬৬ শতাংশ, ব্যাংক চার দশমিক ৬৭ শতাংশ, এনবিএফআই চার দশমিক ৬৭ শতাংশ ও সাধারণ বিমা খাত শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ গেইনারে ছিল।

অপরদিকে অ-আর্থিক কোম্পানিগুলোয় মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে এসময়ে। জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাত এক দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রকৌশল এক দশমিক ১৮ শতাংশ এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ গেইনারে ছিল। অপরদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় লোকসান গুনে টেলিকম খাত শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ ও ওষুধ খাত শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ।

একক কোম্পানি হিসেবে গত সপ্তাহে ডিএসইতে শেয়ারদর বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০টির প্রথম অবস্থানে উঠে আসে মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় আলোচিত সময়ে ৪৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এছাড়া শীর্ষ ১০টিতে স্থান করে নেয় মালেক স্পিনিং মিলস, ম্যাকসনস স্পিনিং মিলস, ডেল্টা স্পিনার্স, ন্যাশনাল ফিড মিল, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি কমাশিয়াল ব্যাংক, জাহিন স্পিনিং, সায়হাম কটন মিলস ও রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস।

অপরদিকে শেয়ারদর হারানোর শীর্ষ তালিকায় উঠে আসে ইস্টার্ন ব্যাংক, সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ ও উত্তরা ব্যাংক।

ঢাকা/এসএ