০৬:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

ইন্টারনেট থেকে দূরে রেখে শিশুদের গড়ে তোলা যাবে না: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:০১:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৪১২১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জ্ঞানভান্ডার হচ্ছে ইন্টারনেট। জ্ঞানের এই জগৎ থেকে শিশুদের দূরে রেখে তাদের আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যাবে না। তবে তাদের জন্য ইন্টারনেটকে নিরাপদ করতে হবে। শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিক্ষক বা অভিভাবকের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ে ন্যূনতম ধারণা থাকলে তারা ছাত্র-ছাত্রী বা সন্তানের জন্য প্যারেন্টাইল গাইডেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে পারেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র আয়োজিত অনলাইনে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিতকরণ শীর্ষক ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহজাবিন হক, টিআইসির  অধ্যক্ষ মো. গোলাম ফারুক এবং আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

শিশু প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন খাতের বক্তারা তাদের বক্তব্য পেশ করেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সমন্বয়কারী অম্বিকা রায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কর্মকর্তা গোলাম মনোয়ার কামাল অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল যুগে তথ্য সম্পর্কে অসচেতনতা কাম্য হতে পারে না। তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে তথ্যযুগে অসহায়ভাবে নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে শিশুদের শারীরিক-মানসিক নিরাপত্তার ন্যায় ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়ে মা-বাবাকে অধিকতর যত্নশীল হতে হবে। একইভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকারা শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের জগৎটাকে যথাযথভাবে গাইড করবেন।

তিনি বলেন, যে অবস্থায় আমরা এখন বসবাস করছি, আগামী ১০ বছর পর সে অবস্থা বিরাজ করবে না। আগামী দিনের প্রযুক্তি হবে বিস্ময়কর। পঞ্চম শিল্পযুগের প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের ৭০ ভাগ তরুণ জনগোষ্ঠীকে তৈরি করতে হবে।

তিনি নতুন প্রজন্মকে অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে বলেন, নতুনদের সঠিকভাবে তৈরি করতে পারলে তারা বিস্ময়করভাবে সফল হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যত বেশি ডিজিটাল হই, তার পরও শিশুদের বিকাশে খেলার মাঠ, শ্রেণিকক্ষ লাগবেই।’ শিশুরা বড় সম্পদ উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘শিশুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি শিশুদের ডিজিটাল যন্ত্র থেকে সুরক্ষায় যেকোনো সুপারিশ ও পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে বলে আয়োজকদের আশ্বস্ত করেন।

মন্ত্রী নিরাপদ ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্নো সাইট ও ২ হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করেছি। ফেসবুক, ইউটিউট এবং টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে আমাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করার জন্য ফলপ্রসূ ভূমিকা আমরা রাখছি।’ তাদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষতিকর কনটেন্ট বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী প্রতিটি আইনের মতোই ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বর্ণনা করেন। তিনি অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেন, ডিজিটাল অপরাধ দশনে বা প্রতিরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন না করে কোনো উপায় ছিল না।

তিনি আরও বলেন, সভ্যসমাজে আইন তো থাকতেই হবে। সব মহলের মতামত নিয়ে আইনটি তৈরি করা হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করতে এ আইন একবারও ব্যবহার করা হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ানো গর্হিত কাজ উল্লেখ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসবের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিটিআরসির ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি জানান, বিটিআরসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের হাজার হাজার লিঙ্ক বন্ধ করতে রিপোর্ট করেছে। কিন্তু একটি লিঙ্কও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য নয়।

ঢাকা/বিএইচ

শেয়ার করুন

x

ইন্টারনেট থেকে দূরে রেখে শিশুদের গড়ে তোলা যাবে না: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী

আপডেট: ০১:০১:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জ্ঞানভান্ডার হচ্ছে ইন্টারনেট। জ্ঞানের এই জগৎ থেকে শিশুদের দূরে রেখে তাদের আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যাবে না। তবে তাদের জন্য ইন্টারনেটকে নিরাপদ করতে হবে। শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিক্ষক বা অভিভাবকের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ে ন্যূনতম ধারণা থাকলে তারা ছাত্র-ছাত্রী বা সন্তানের জন্য প্যারেন্টাইল গাইডেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে পারেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র আয়োজিত অনলাইনে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিতকরণ শীর্ষক ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহজাবিন হক, টিআইসির  অধ্যক্ষ মো. গোলাম ফারুক এবং আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

শিশু প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন খাতের বক্তারা তাদের বক্তব্য পেশ করেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সমন্বয়কারী অম্বিকা রায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কর্মকর্তা গোলাম মনোয়ার কামাল অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল যুগে তথ্য সম্পর্কে অসচেতনতা কাম্য হতে পারে না। তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে তথ্যযুগে অসহায়ভাবে নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে শিশুদের শারীরিক-মানসিক নিরাপত্তার ন্যায় ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়ে মা-বাবাকে অধিকতর যত্নশীল হতে হবে। একইভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকারা শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের জগৎটাকে যথাযথভাবে গাইড করবেন।

তিনি বলেন, যে অবস্থায় আমরা এখন বসবাস করছি, আগামী ১০ বছর পর সে অবস্থা বিরাজ করবে না। আগামী দিনের প্রযুক্তি হবে বিস্ময়কর। পঞ্চম শিল্পযুগের প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের ৭০ ভাগ তরুণ জনগোষ্ঠীকে তৈরি করতে হবে।

তিনি নতুন প্রজন্মকে অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে বলেন, নতুনদের সঠিকভাবে তৈরি করতে পারলে তারা বিস্ময়করভাবে সফল হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যত বেশি ডিজিটাল হই, তার পরও শিশুদের বিকাশে খেলার মাঠ, শ্রেণিকক্ষ লাগবেই।’ শিশুরা বড় সম্পদ উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘শিশুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি শিশুদের ডিজিটাল যন্ত্র থেকে সুরক্ষায় যেকোনো সুপারিশ ও পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে বলে আয়োজকদের আশ্বস্ত করেন।

মন্ত্রী নিরাপদ ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্নো সাইট ও ২ হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করেছি। ফেসবুক, ইউটিউট এবং টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে আমাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করার জন্য ফলপ্রসূ ভূমিকা আমরা রাখছি।’ তাদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে ক্ষতিকর কনটেন্ট বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী প্রতিটি আইনের মতোই ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বর্ণনা করেন। তিনি অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেন, ডিজিটাল অপরাধ দশনে বা প্রতিরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন না করে কোনো উপায় ছিল না।

তিনি আরও বলেন, সভ্যসমাজে আইন তো থাকতেই হবে। সব মহলের মতামত নিয়ে আইনটি তৈরি করা হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করতে এ আইন একবারও ব্যবহার করা হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ানো গর্হিত কাজ উল্লেখ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসবের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিটিআরসির ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি জানান, বিটিআরসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের হাজার হাজার লিঙ্ক বন্ধ করতে রিপোর্ট করেছে। কিন্তু একটি লিঙ্কও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য নয়।

ঢাকা/বিএইচ