ওয়ালটন বাংলাদেশের আইকন: বাণিজ্যমন্ত্রী
- আপডেট: ০৬:৫১:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩
- / ৪১৯৮ বার দেখা হয়েছে
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীকে এটিএস এক্সপোতে ফুলের তোঁড়া দিয়ে ̄ স্বাগত জানাচ্ছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্টিধজ পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেছেন, ওয়ালটন বাংলাদেশের আইকন। আমাদের কাছে একটা বিষ্ময় ও আলোকবর্তিতা। এমন কোনো নিত্য প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য নেই যা ওয়ালটন তৈরি করছে না। ওয়ালটনের জন্য দেশের বিলিয়ন ডলারের আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। প্রচুর পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের রপ্তানি আয় ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে ওয়ালটন।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ওয়ালটন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভান্সড কম্পোনেন্টস অ্যান্ড টেকনোলজি (এটিএস) এক্সপো-২০২৩’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ অনুষ্ঠান চলবে ১২ আগস্ট (শনিবার) পর্যন্ত।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
অনুষ্ঠানে টিপু মুনশী বলেন, ওয়ালটন যদি দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন না করতো তবে বিলিয়ন ডলারের খরচ করে তা আমদানি করতো হতো। ওয়ালটনের স্বপ্নবাজ উদ্যোক্তাদের জন্য দেশের মানুষ এখন সাশ্রয়ী মূল্যে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য কিনতে পাচ্ছেন। তারা প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা একান্ত জরুরি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিলিয়ন ডলারের আমদানি ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি ওয়ালটন দেশের রপ্তানি আয়েও অবদান রাখছে। তারা ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির টার্গেট নিয়েছে। ওয়ালটন যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নতি করছে ও বিশ্ববাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরির যে যাত্রা শুরু করছে তাতে সফল হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম ও নিশাত তাসনিম শুচী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি সামীর সাত্তার, ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল. আউসান জেআর, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রমূখ।
এটিএস এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ালটনের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম। সঞ্চালনায় ছিলেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ওয়ালটনের উচ্চ প্রশিক্ষিত দক্ষ প্রকৌশলীরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজে ৫০ হাজারের বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস তৈরি করছে। এসব কম্পোনেন্টস দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোও যেন কাজে লাগাতে পারে সেজন্য এটিএস এক্সপো আয়োজনের এই উদ্যোগ। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যদি একে অন্যের তৈরি কম্পোনেন্টস ব্যবহার করে তবে উৎপাদন ব্যয় অনেক কমবে। দেশীয় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ও সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পাবে। আমরা সবাই যদি একত্রে কাজ করি তবে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দ্রুত অর্জন হবে।
ওয়ালটনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম একক কোনো বাংলাদেশী ব্র্যান্ড তার টেকনোলজি ও সলিউশন দিয়ে সক্ষমতা প্রদর্শনের আয়োজন করেছে। এটিএস এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্পখাত, দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা তুলে ধরা হচ্ছে। সরকারের নীতি সহায়তা ও মানুষের আস্থা বজায় থাকলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে ওয়ালটন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশের যে উত্থান তার পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ওয়ালটন। তারা দেশে হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কারিগরি ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য এখন দেশের ভেতরেই কর্মসংস্থান তৈরি করেছে ওয়ালটন। উদ্ভাবন ও গবেষণায় ওয়ালটন বহুদূর এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে ইলেকট্রনিক্স পণ্য নেই। সব জায়গায় ইলেকট্রনিক্স পণ্যের উপস্থিতি রয়েছে। বাংলাদেশে ব্যবসাবান্ধব পলিসি এবং শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ ওয়ালটন। সরকারের ব্যবসাবান্ধব পলিসির কারনেই ওয়ালটনের মতো প্রতিষ্ঠান এই পর্যায়ে আসতে পেরেছে। ওয়ালটন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের অনেক দেশে তাদের পণ্য রপ্তানি করছে। এটা বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়।
ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার বলেন, ওয়ালটন এখন দেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড। তারা দেশেই ইলেকট্রনিক্স পণ্য, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও সলিউশনস উৎপাদন করছে। তারা দেশের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পখাতেও সার্ভিস দিচ্ছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটনের প্রবৃদ্ধি গর্ব করার মতো। বিশ্ববাজারে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত পণ্যের পরিচিতিতে বিশেষ অবদান রাখছে ওয়ালটন।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ওয়ালটন ৫০ হাজারের বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস তৈরি করছে তা সত্যিকার অর্থে এক বিশাল ব্যাপার। বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি ওয়ালটনের হাত ধরে বহুদূর এগিয়ে যাবে।
ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল. আউসান জেআর বলেন, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে ওয়ালটন। ফিলিপাইনের বাজারেও ওয়ালটনের ব্যবসা সম্প্রসারণের আহবান জানান তিনি।
এটিএস এক্সপোতে ৪টি ক্যাটাগরিতে মোট ২১টি স্টলে ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিকমানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস এবং টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হবে। এগুলোর অধিকাংশই প্রায় সব প্রকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধাপে প্রধান কাঁচামাল ও কম্পোনেন্টস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নিজস্ব চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমদানি বিকল্প গুণগতমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও টেস্টিং সলিউশনস দেওয়ার মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশীয় শিল্পের ক্ষমতায়নে অবদান রাখতে পারে ওয়ালটন।
ঢাকা/টিএ