১১:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

জিআই পণ্য এখন ৯টি, ছয়টি নতুন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৪৪:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১৫০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে নিবন্ধিত এখন ৯টি। গত ফেব্রুয়ারিতে নতুন করে ছয়টি পণ্যের জিআই নিবন্ধন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৬ এপ্রিল মেধাস্বত্ব দিবসে সেসবের সনদ দেওয়ার কথা ছিল।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর (ডিপিডিটি) জানিয়েছে, জামদানি, ইলিশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আমের পরে এবার রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, শতরঞ্জি, চিনিগুঁড়া চাল, দিনাজপুরের কাটারিভোগ এবং বিজয়পুরের সাদা মাটি জিআই পেয়েছে।

ডিপিডিটি রেজিস্ট্রার আবদুস সাত্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নতুন ছয় পণ্যের জিআই অ্যাপ্রুভ হয়েছে। তবে ২৬ এপ্রিল মেধাস্বত্ব দিবসে বড় পরিসরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চূড়ান্ত সনদ দেয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে এক সময় হবে। কারণ ভার্চুয়ালি মেধাস্বত্ব দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান করলেও জিআই পাওয়া পণ্যের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সার্টিফিকেট দেয়া সম্ভব হবে না।’

আবদুস সাত্তার বলেন, এগুলোর জিআই আবেদন অনুমোদন করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে করোনারি পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে তারা তাদের নিজস্ব পণ্য টেককেয়ার করছে। আমরা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের স্ট্যান্ডার্ডগুলো যাচাই-বাছাই করে সনদ দিয়েছি। এখন সেটা তাদের বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য সুবিধা হবে। এখন থেকেই তারা এর সকল সুযোগ-সুবিধা পাবে।

প্রসঙ্গত, কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে ওই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়।

জিআই একটি পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ ট্রেডমার্ক যেমন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় পরিচিতি দেয়, জিআই একটি দেশের নির্দিষ্ট পণ্যকে পরিচিতি প্রদান করে। জিআই পণ্যের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বিশ্ববাজারে পণ্যটির ব্রান্ডিংয়ে, যা সমমানের অন্য যেকোনো পণ্য থেকে জিআই পণ্যকে এগিয়ে রাখে।

এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক সামগ্রী হিসেবে স্বীকৃতি পায় জামদানি। পরের বছর ইলিশ এবং ২০১৯ সালে ক্ষীরষাপাতি আমকে জিআই স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে তিনটি পণ্য এ তালিকায় ছিল। শেষ দফায় নতুন করে ছয়টি পণ্য যুক্ত হওয়ায় মোট জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ৯টিতে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বাবধান ও উদারীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ২৩টি চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য-সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস (ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)। এই চুক্তির ২৭.৩ (খ) ধারায় পৃথিবীর সব প্রাণ-প্রকৃতি-প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। এই চুক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রাকৃতিক ও মানুষের তৈরি এবং কৃষিজাত পণ্য দীর্ঘকাল ধরে উৎপাদিত হয়ে আসছে তার ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক আইন করে নিবন্ধন করে রাখার বিধান রয়েছে।

সূত্রঃ জাগোনিউজ

শেয়ার করুন

x
English Version

জিআই পণ্য এখন ৯টি, ছয়টি নতুন

আপডেট: ০৪:৪৪:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে নিবন্ধিত এখন ৯টি। গত ফেব্রুয়ারিতে নতুন করে ছয়টি পণ্যের জিআই নিবন্ধন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ২৬ এপ্রিল মেধাস্বত্ব দিবসে সেসবের সনদ দেওয়ার কথা ছিল।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর (ডিপিডিটি) জানিয়েছে, জামদানি, ইলিশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আমের পরে এবার রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, শতরঞ্জি, চিনিগুঁড়া চাল, দিনাজপুরের কাটারিভোগ এবং বিজয়পুরের সাদা মাটি জিআই পেয়েছে।

ডিপিডিটি রেজিস্ট্রার আবদুস সাত্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নতুন ছয় পণ্যের জিআই অ্যাপ্রুভ হয়েছে। তবে ২৬ এপ্রিল মেধাস্বত্ব দিবসে বড় পরিসরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চূড়ান্ত সনদ দেয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে এক সময় হবে। কারণ ভার্চুয়ালি মেধাস্বত্ব দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান করলেও জিআই পাওয়া পণ্যের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সার্টিফিকেট দেয়া সম্ভব হবে না।’

আবদুস সাত্তার বলেন, এগুলোর জিআই আবেদন অনুমোদন করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে করোনারি পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে তারা তাদের নিজস্ব পণ্য টেককেয়ার করছে। আমরা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের স্ট্যান্ডার্ডগুলো যাচাই-বাছাই করে সনদ দিয়েছি। এখন সেটা তাদের বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য সুবিধা হবে। এখন থেকেই তারা এর সকল সুযোগ-সুবিধা পাবে।

প্রসঙ্গত, কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে ওই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়।

জিআই একটি পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ ট্রেডমার্ক যেমন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় পরিচিতি দেয়, জিআই একটি দেশের নির্দিষ্ট পণ্যকে পরিচিতি প্রদান করে। জিআই পণ্যের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বিশ্ববাজারে পণ্যটির ব্রান্ডিংয়ে, যা সমমানের অন্য যেকোনো পণ্য থেকে জিআই পণ্যকে এগিয়ে রাখে।

এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক সামগ্রী হিসেবে স্বীকৃতি পায় জামদানি। পরের বছর ইলিশ এবং ২০১৯ সালে ক্ষীরষাপাতি আমকে জিআই স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে তিনটি পণ্য এ তালিকায় ছিল। শেষ দফায় নতুন করে ছয়টি পণ্য যুক্ত হওয়ায় মোট জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়াল ৯টিতে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বাবধান ও উদারীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ২৩টি চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য-সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস (ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)। এই চুক্তির ২৭.৩ (খ) ধারায় পৃথিবীর সব প্রাণ-প্রকৃতি-প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। এই চুক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রাকৃতিক ও মানুষের তৈরি এবং কৃষিজাত পণ্য দীর্ঘকাল ধরে উৎপাদিত হয়ে আসছে তার ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক আইন করে নিবন্ধন করে রাখার বিধান রয়েছে।

সূত্রঃ জাগোনিউজ