০৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

জিম্বাবুয়ের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশের পেসাররা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:৩০:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৭২ বার দেখা হয়েছে

সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বরাবরই অনভিজ্ঞ পেস আক্রমণে আস্থা রাখে বাংলাদেশ। দলে জায়গা করে দেওয়া হয় তরুণ সম্ভাবনাময়ী পেসারদের। তারাও নিজেদের উজার করে দেন। তবে কদিন পরই লম্বা সময় বোলিংয়ের ধকল সামলে উঠতে না পেরে ঝরে যান। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন এক সংস্কৃতিই গড়ে উঠেছে।

এর ফলে টেস্ট ক্রিকেটে ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পরিপূর্ণ একটি পেস বোলিং ইউনিট তৈরি করতে পারেনি টাইগাররা। দীর্ঘদিন ধরেই সেই আক্ষেপে পুড়তে হচ্ছে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্টকে। সর্বশেষ কবে বাংলাদেশের পেসাররা এক টেস্টে ২০ উইকেট নিয়েছেন সেই পরিসংখ্যান ঘাটতে হলেও অনেকদূর যেতে হবে।

সেই সঙ্গে দেশের বাইরে টাইগার পেসারদের পারফরম্যান্স এখনও নবীনের মতো। গেল ৫ বছরে ১২ জন পেসারকে টেস্ট খেলিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ শহীদ, মুস্তাফিজুর রহমান, কামরুল ইসলাম রাব্বি, শুভাশিষ রায়, তাসকিন আহমেদ, আবু জায়েদ রাহি, খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন, শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেনরা।

শহীদ, রাব্বি, শুভাশীষরা এখন বাংলাদেশ দলের আঙিনাতেই নেই। লম্বা বিরতি দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলছেন শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন এবং রুবেল হোসেন। টেস্ট দলে এখন প্রায় নিয়মিত মুখ রাহী, এবাদতরা। এ ছাড়া ইনজুরির কারণে এক বছরেরও বেশি সময় টেস্ট খেলা হয়নি খালেদ আহমেদের। অফ ফর্ম কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন তাসকিন। যদিও ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের প্রাথমিক দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে আছেন তরুণ উদীয়মান পেসার শরিফুল ইসলামও।

বৈশ্বিক পরিসংখ্যান বিবেচনায় বাংলাদেশের পেসাররা অনেকটাই পিছিয়ে। ২০১৫ সাল থেকে কমপক্ষে ১০ টেস্ট খেলেছে. এমন দেশের পেসারদের গড় হিসেব করলে দেখা যায় সেরাদের তালিকায় একেবারে তলানিতে অবস্থান মুস্তাফিজ-রাহিদের। যেখানে জিম্বাবুয়ের পেসারদের চেয়েও বেশি গড়ে উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। এই সময়ের মাঝে বাংলাদেশ মোট ৩১টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। যেখানে ১২জন পেসার খেলেও উইকেট তুলেছেন মোটে ১০০টি। উইকেট প্রতি বাংলাদেশের পেসাররা খরচা করেছেন ৫৪.৮৩ রান করে। যেখানে কিনা ১৩ টেস্ট খেলা জিম্বাবুয়ের পেসাররা ৪৪.৯৮ গড়ে নিয়েছেন ৬৮ উইকেট। এ তালিকায় দাপট দেখিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররা।

৫২ টেস্ট খেলে প্রোটিয়া পেসারদের সংগ্রহ ৬৪৮ উইকেট। কাগিসো রাবাদা-লুঙ্গি এনগিদিদের গড় ২৪.১৯। উপমহাদেশের দল হয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের সঙ্গে লড়াই করেছেন জসপ্রিত বুমরাহ-ইশান্ত শর্মা-মোহাম্মদ শামিদের নিয়ে গড়া ভারত। ৬০ টেস্ট খেলে ৫২১ উইকেট নিয়েছেন ভারতের পেসাররা। দুই নম্বরে থাকা ভারতীয় পেসারদের গড় ২৫.৮৭। অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা উইকেট প্রতি খরচা করেছেন ২৬.৮০ রান। এই সময়ে ৬২ টেস্ট খেলে ৭৩৬ উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিন্স-মিচেল স্টার্ক-জশ হ্যাজেলউডরা। এই তালিকারে চারে রয়েছে ইংল্যান্ড।

২০১৫ সাল থেকে ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ উইকেটেরই মালিক দুই অভিজ্ঞ পেসার জেমস অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড। তাঁদের নিয়ে গড়া ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণ উইকেট প্রতি রান দিয়েছে ২৭.৪৪ করে। এই সময়ের মধ্যে ৭৮ টেস্টে তাঁরা উইকেট তুলে নিয়েছে ৯৩১টি। গেল পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন ইংলিশ পেসাররাই। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের পেসাররা ২৮.৬৭ গড়ে উইকেট ৬৫০ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা ৩১.৫০ গড়ে ৪৩১ উইকেট, পাকিস্তানের পেসাররা ৩২.৭৮ গড়ে ৪০৪ উইকেট এবং শ্রীলঙ্কার পেসাররা ৩৫.৮৮ গড়ে ৪০০ উইকেট তুলে নিয়েছেন।

শেয়ার করুন

x
English Version

জিম্বাবুয়ের চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশের পেসাররা

আপডেট: ০১:৩০:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১

সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বরাবরই অনভিজ্ঞ পেস আক্রমণে আস্থা রাখে বাংলাদেশ। দলে জায়গা করে দেওয়া হয় তরুণ সম্ভাবনাময়ী পেসারদের। তারাও নিজেদের উজার করে দেন। তবে কদিন পরই লম্বা সময় বোলিংয়ের ধকল সামলে উঠতে না পেরে ঝরে যান। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন এক সংস্কৃতিই গড়ে উঠেছে।

এর ফলে টেস্ট ক্রিকেটে ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পরিপূর্ণ একটি পেস বোলিং ইউনিট তৈরি করতে পারেনি টাইগাররা। দীর্ঘদিন ধরেই সেই আক্ষেপে পুড়তে হচ্ছে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্টকে। সর্বশেষ কবে বাংলাদেশের পেসাররা এক টেস্টে ২০ উইকেট নিয়েছেন সেই পরিসংখ্যান ঘাটতে হলেও অনেকদূর যেতে হবে।

সেই সঙ্গে দেশের বাইরে টাইগার পেসারদের পারফরম্যান্স এখনও নবীনের মতো। গেল ৫ বছরে ১২ জন পেসারকে টেস্ট খেলিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ শহীদ, মুস্তাফিজুর রহমান, কামরুল ইসলাম রাব্বি, শুভাশিষ রায়, তাসকিন আহমেদ, আবু জায়েদ রাহি, খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন, শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেনরা।

শহীদ, রাব্বি, শুভাশীষরা এখন বাংলাদেশ দলের আঙিনাতেই নেই। লম্বা বিরতি দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলছেন শফিউল ইসলাম, আল আমিন হোসেন এবং রুবেল হোসেন। টেস্ট দলে এখন প্রায় নিয়মিত মুখ রাহী, এবাদতরা। এ ছাড়া ইনজুরির কারণে এক বছরেরও বেশি সময় টেস্ট খেলা হয়নি খালেদ আহমেদের। অফ ফর্ম কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন তাসকিন। যদিও ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের প্রাথমিক দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে আছেন তরুণ উদীয়মান পেসার শরিফুল ইসলামও।

বৈশ্বিক পরিসংখ্যান বিবেচনায় বাংলাদেশের পেসাররা অনেকটাই পিছিয়ে। ২০১৫ সাল থেকে কমপক্ষে ১০ টেস্ট খেলেছে. এমন দেশের পেসারদের গড় হিসেব করলে দেখা যায় সেরাদের তালিকায় একেবারে তলানিতে অবস্থান মুস্তাফিজ-রাহিদের। যেখানে জিম্বাবুয়ের পেসারদের চেয়েও বেশি গড়ে উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। এই সময়ের মাঝে বাংলাদেশ মোট ৩১টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। যেখানে ১২জন পেসার খেলেও উইকেট তুলেছেন মোটে ১০০টি। উইকেট প্রতি বাংলাদেশের পেসাররা খরচা করেছেন ৫৪.৮৩ রান করে। যেখানে কিনা ১৩ টেস্ট খেলা জিম্বাবুয়ের পেসাররা ৪৪.৯৮ গড়ে নিয়েছেন ৬৮ উইকেট। এ তালিকায় দাপট দেখিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররা।

৫২ টেস্ট খেলে প্রোটিয়া পেসারদের সংগ্রহ ৬৪৮ উইকেট। কাগিসো রাবাদা-লুঙ্গি এনগিদিদের গড় ২৪.১৯। উপমহাদেশের দল হয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের সঙ্গে লড়াই করেছেন জসপ্রিত বুমরাহ-ইশান্ত শর্মা-মোহাম্মদ শামিদের নিয়ে গড়া ভারত। ৬০ টেস্ট খেলে ৫২১ উইকেট নিয়েছেন ভারতের পেসাররা। দুই নম্বরে থাকা ভারতীয় পেসারদের গড় ২৫.৮৭। অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা উইকেট প্রতি খরচা করেছেন ২৬.৮০ রান। এই সময়ে ৬২ টেস্ট খেলে ৭৩৬ উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিন্স-মিচেল স্টার্ক-জশ হ্যাজেলউডরা। এই তালিকারে চারে রয়েছে ইংল্যান্ড।

২০১৫ সাল থেকে ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ উইকেটেরই মালিক দুই অভিজ্ঞ পেসার জেমস অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রড। তাঁদের নিয়ে গড়া ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণ উইকেট প্রতি রান দিয়েছে ২৭.৪৪ করে। এই সময়ের মধ্যে ৭৮ টেস্টে তাঁরা উইকেট তুলে নিয়েছে ৯৩১টি। গেল পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন ইংলিশ পেসাররাই। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের পেসাররা ২৮.৬৭ গড়ে উইকেট ৬৫০ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা ৩১.৫০ গড়ে ৪৩১ উইকেট, পাকিস্তানের পেসাররা ৩২.৭৮ গড়ে ৪০৪ উইকেট এবং শ্রীলঙ্কার পেসাররা ৩৫.৮৮ গড়ে ৪০০ উইকেট তুলে নিয়েছেন।