০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

টিএসসির নববর্ষের উৎসবের ৭ লাঞ্ছনাকারী এখনো অধরা  

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:২৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১০২ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ ছয় বছর আগে ২০১৫ সালের বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।

ওই ঘটনায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে মো. কামাল নামে একজনকে আসামি করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে।

২০১৭ সালের জুন মাসে কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষীর জন্য দিন নির্ধারণ করেন আদালত। কিন্তু অভিযোগ গঠনের প্রায় চার বছর পরও আজ পর্যন্ত ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে কোনো সাক্ষীই আদালতে সাক্ষ্য দিতে উপস্থিত হননি। সাক্ষী না আসায় ঝুলে আছে আলোচিত ওই মামলার বিচার কার্যক্রম। বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় করা মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হলেও তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। পুলিশের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো। বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আদালতের সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নিয়মিত আদালত চালু হলে সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির করার চেষ্টা করবো। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তি করবো।’

কামালের আইনজীবী আনিছুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলার আসামি কামাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাকে জোর করে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি একজন সাধারণ মানুষ। ঘটনায় আটজন জড়িত ছিল। মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিনের পর দিন পার হচ্ছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরীহ কামালকে মামলায় ফাঁসিয়েছেন। এখন আদালতে কোনো সাক্ষীই উপস্থিত হচ্ছে না। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো। সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হলে তাদের জেরা করব। আমার আসামি কামাল এ মামলায় খালাস পাবে- এটা আমার আশা।’

২০১৫ সালের বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। নারীদের লাঞ্ছনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আটজনকে শনাক্তের পর গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক একমাত্র কামালকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে। এ মামলায় সাক্ষী করা হয় ৩৪ জনকে।

সূত্রঃ জাগোনিউজ

শেয়ার করুন

x
English Version

টিএসসির নববর্ষের উৎসবের ৭ লাঞ্ছনাকারী এখনো অধরা  

আপডেট: ১১:২৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ ছয় বছর আগে ২০১৫ সালের বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।

ওই ঘটনায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে মো. কামাল নামে একজনকে আসামি করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে।

২০১৭ সালের জুন মাসে কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষীর জন্য দিন নির্ধারণ করেন আদালত। কিন্তু অভিযোগ গঠনের প্রায় চার বছর পরও আজ পর্যন্ত ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে কোনো সাক্ষীই আদালতে সাক্ষ্য দিতে উপস্থিত হননি। সাক্ষী না আসায় ঝুলে আছে আলোচিত ওই মামলার বিচার কার্যক্রম। বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় করা মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হলেও তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। পুলিশের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো। বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আদালতের সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নিয়মিত আদালত চালু হলে সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির করার চেষ্টা করবো। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তি করবো।’

কামালের আইনজীবী আনিছুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলার আসামি কামাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাকে জোর করে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি একজন সাধারণ মানুষ। ঘটনায় আটজন জড়িত ছিল। মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিনের পর দিন পার হচ্ছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরীহ কামালকে মামলায় ফাঁসিয়েছেন। এখন আদালতে কোনো সাক্ষীই উপস্থিত হচ্ছে না। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো। সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হলে তাদের জেরা করব। আমার আসামি কামাল এ মামলায় খালাস পাবে- এটা আমার আশা।’

২০১৫ সালের বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। নারীদের লাঞ্ছনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আটজনকে শনাক্তের পর গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক একমাত্র কামালকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে। এ মামলায় সাক্ষী করা হয় ৩৪ জনকে।

সূত্রঃ জাগোনিউজ