০৪:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

ডিএসই থেকে পদত্যাগ করলেন তারিক আমিন ভূঁইয়া

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ অগাস্ট ২০২২
  • / ৪২০২ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পদত্যাগ করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া। বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সাথে সৃষ্ট টানাপোড়েনের প্রেক্ষিতে তিনি পদত্যাগ করেন।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাতে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইউনূসুর রহমানের কাছে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। ডিএসইর নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, সোমবার (২২ আগস্ট) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমতো ১২৭ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেন এমডি। এরমধ্যে ছয় (৩ জন জিএম ও ৩ জন এজিএম) কর্মকর্তাকে আইনের বাইরে গিয়ে পদোন্নতি দেন তিনি। আর তাতে পরিচালনা পর্ষদ তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। পর্ষদের চাপের মুখে তিনি পদত্যাগ করেছেন।

ডি-মিউচুয়ালাইজেশন (স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদাকরণ) আইন অনুসারে, জনবল কাঠামোতে স্টক এক্সচেঞ্জে সিনিয়র কোনো পদ নেই। নতুন পদ সৃষ্টি করতে হলে প্রথমে বোর্ডের অনুমোদন লাগবে। পরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এ ধরনের কোনো অনুমোদন নেয়নি।

অন্যদিকে ডিএসইর নিয়ম অনুসারে ডিজিএম পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে এনআরসির সুপারিশ লাগে। কমিটি যাচাই বাছাই করে পদোন্নতির সুপারিশ করে। কিন্তু কাউকে তোয়াক্কা না করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক একক ইচ্ছায় এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এছাড়াও ডিএসইতে ডাটা সেন্টার গড়ে তুলতে কাজ করছিলেন এমডি। এই সেন্টার গড়ে তুলতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের একটি গ্রুপের পরিকল্পনা ছিল ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করার। কিন্তু তারিক আমিন ভূঁইয়া সেই প্রকল্পটি মাত্র ৪০ কোটি টাকা সমাপ্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই অনুসারে কাজও করছিলেন। ফলে পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের গ্রুপটি তার ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল।

এ ব্যাপারে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনূসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তিন বছরের জন্য ডিএসইর এমডি হিসেবে যোগদান করেন তারিক আমিন ভূঁইয়া। মঙ্গলবার তিনি ই-মেইলে আমাকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

দেড় পৃষ্ঠার পদত্যাগপত্র তিনি লিখেছেন, ১৩ মাস সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা সমস্যার কারণে পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করতে পারেননি। আগামী অক্টোবরের শেষে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছি।

ইউনুসুর রহমান বলেন, তিনি চিঠিতে যা লিখেছেন, তার সারসংক্ষেপ হলো- যেভাবে তিনি কাজ করতে চাচ্ছিলেন, সেভাবে কাজ করতে পারছেন না। তাই এ অবস্থায় তিনি আর সংস্থাটির এমডির দায়িত্বে থাকতে চাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ডিএসই রেগুলেশন ২০১৩ অর্থাৎ ডি-মিউচ্যুালাইজেশন আইন অনুসারে, একক ক্ষমতা বলে এমডি প্রতিষ্ঠানটির এজিএম থেকে জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হিসেবে কাউকে পদোন্নতি দিতে পারেন না। পদোন্নতি দিতে হলে তাকে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এমডি তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে ৩ জন এজিএমকে জিএম পদে পদোন্নতি দিয়েছেন। একইভাবে তিনজন জিএমকে সিনিয়র জিএম করেছেন। আমরা এই ছয় জনের পদোন্নতি বাতিলের জন্য এমডিকে নির্দেশ দিয়েছি।

এই নির্দেশ দেওয়ার পর মঙ্গলবার সিনিয়র তিন জিএমের পদোন্নতি বাতিল করে চিঠি দিয়েছেন এমডি। কিন্তু এজিএম থেকে জিএম হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া তিনজনকে পদ বাতিলের চিঠি দেননি।

প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী তারিক আমিন ভূঁইয়া গত বছরের ২৫ জুলাই ডিএসইর এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১৩ মাসের মাথায় পদত্যাগ করলেন তিনি। প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞ এই ব্যক্তিকে তিন বছরের জন্য ডিএসইর এমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর আগের মাত্র ১১ মাস দায়িত্ব পালন করে এমডি পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন কাজী ছানাউল হক। তার আগে ডি-মিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী ডিএসইর দ্বিতীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কেএএম মাজেদুর রহমান। আর ডি-মিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী প্রথম এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএসইসির সাবেক কমিশনার অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা।

ঢাকা/এসআর

শেয়ার করুন

x

ডিএসই থেকে পদত্যাগ করলেন তারিক আমিন ভূঁইয়া

আপডেট: ১১:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ অগাস্ট ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পদত্যাগ করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া। বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সাথে সৃষ্ট টানাপোড়েনের প্রেক্ষিতে তিনি পদত্যাগ করেন।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাতে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইউনূসুর রহমানের কাছে ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। ডিএসইর নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, সোমবার (২২ আগস্ট) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমতো ১২৭ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেন এমডি। এরমধ্যে ছয় (৩ জন জিএম ও ৩ জন এজিএম) কর্মকর্তাকে আইনের বাইরে গিয়ে পদোন্নতি দেন তিনি। আর তাতে পরিচালনা পর্ষদ তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। পর্ষদের চাপের মুখে তিনি পদত্যাগ করেছেন।

ডি-মিউচুয়ালাইজেশন (স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদাকরণ) আইন অনুসারে, জনবল কাঠামোতে স্টক এক্সচেঞ্জে সিনিয়র কোনো পদ নেই। নতুন পদ সৃষ্টি করতে হলে প্রথমে বোর্ডের অনুমোদন লাগবে। পরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এ ধরনের কোনো অনুমোদন নেয়নি।

অন্যদিকে ডিএসইর নিয়ম অনুসারে ডিজিএম পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে এনআরসির সুপারিশ লাগে। কমিটি যাচাই বাছাই করে পদোন্নতির সুপারিশ করে। কিন্তু কাউকে তোয়াক্কা না করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক একক ইচ্ছায় এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এছাড়াও ডিএসইতে ডাটা সেন্টার গড়ে তুলতে কাজ করছিলেন এমডি। এই সেন্টার গড়ে তুলতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের একটি গ্রুপের পরিকল্পনা ছিল ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করার। কিন্তু তারিক আমিন ভূঁইয়া সেই প্রকল্পটি মাত্র ৪০ কোটি টাকা সমাপ্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই অনুসারে কাজও করছিলেন। ফলে পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের গ্রুপটি তার ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল।

এ ব্যাপারে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনূসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তিন বছরের জন্য ডিএসইর এমডি হিসেবে যোগদান করেন তারিক আমিন ভূঁইয়া। মঙ্গলবার তিনি ই-মেইলে আমাকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

দেড় পৃষ্ঠার পদত্যাগপত্র তিনি লিখেছেন, ১৩ মাস সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা সমস্যার কারণে পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করতে পারেননি। আগামী অক্টোবরের শেষে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছি।

ইউনুসুর রহমান বলেন, তিনি চিঠিতে যা লিখেছেন, তার সারসংক্ষেপ হলো- যেভাবে তিনি কাজ করতে চাচ্ছিলেন, সেভাবে কাজ করতে পারছেন না। তাই এ অবস্থায় তিনি আর সংস্থাটির এমডির দায়িত্বে থাকতে চাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ডিএসই রেগুলেশন ২০১৩ অর্থাৎ ডি-মিউচ্যুালাইজেশন আইন অনুসারে, একক ক্ষমতা বলে এমডি প্রতিষ্ঠানটির এজিএম থেকে জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হিসেবে কাউকে পদোন্নতি দিতে পারেন না। পদোন্নতি দিতে হলে তাকে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এমডি তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে ৩ জন এজিএমকে জিএম পদে পদোন্নতি দিয়েছেন। একইভাবে তিনজন জিএমকে সিনিয়র জিএম করেছেন। আমরা এই ছয় জনের পদোন্নতি বাতিলের জন্য এমডিকে নির্দেশ দিয়েছি।

এই নির্দেশ দেওয়ার পর মঙ্গলবার সিনিয়র তিন জিএমের পদোন্নতি বাতিল করে চিঠি দিয়েছেন এমডি। কিন্তু এজিএম থেকে জিএম হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া তিনজনকে পদ বাতিলের চিঠি দেননি।

প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী তারিক আমিন ভূঁইয়া গত বছরের ২৫ জুলাই ডিএসইর এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১৩ মাসের মাথায় পদত্যাগ করলেন তিনি। প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞ এই ব্যক্তিকে তিন বছরের জন্য ডিএসইর এমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর আগের মাত্র ১১ মাস দায়িত্ব পালন করে এমডি পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন কাজী ছানাউল হক। তার আগে ডি-মিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী ডিএসইর দ্বিতীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কেএএম মাজেদুর রহমান। আর ডি-মিউচুয়ালাইজেশন পরবর্তী প্রথম এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএসইসির সাবেক কমিশনার অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা।

ঢাকা/এসআর