০৩:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘নির্বাচনে কারচুপির ঘোষণা দাও, বাকিটা আমি দেখব’

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
  • / ৪১৫৮ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় থেকে যেতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তাই নির্বাচনে কারচুপি ও দুর্নীতি হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে বাকিটা তার (ট্রাম্প) ওপর ছেড়ে দিতে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছিলেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। গত ডিসেম্বরে টেলিফোনের মাধ্যমে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

হাতে লেখা চিরকুটের মাধ্যমে সম্প্রতি এই তথ্য সামনে এসেছে। গত ডিসেম্বরে ট্রাম্পের সঙ্গে সেই ফোনকলে অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে একজন ওই চিরকুটটি লিখেছিলেন। শুক্রবার (৩০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের ২৭ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে ফোনে কথা বলার সময় নির্বাচনে কারচুপি ও দুর্নীতি হয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ওই ফোনকলের একটি চিরকুট প্রকাশ করে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের হাউস ওভারসাইট কমিটি।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এই কমিটি জোর দিয়ে বলছে, গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দিতে ট্রাম্প কতোটা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছেন, তা এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে। একইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদেরও নিজের এই প্রচেষ্টায় শামিল করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আলজাজিরা জানিয়েছে, গত মাসে প্রকাশ্যে আনা বেশ কয়েকটি ইমেইলে দেখা যাচ্ছে যে- ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ‘ব্যাপক দুর্নীতির’ সন্ধানে তদন্ত শুরু করতে ক্ষমতার শেষ সপ্তাহগুলোতে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয়কে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠজনরা। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কি না সে বিষয়েও তদন্ত করেছিলেন ওই দফতরের ইন্সপেক্টর জেনারেল।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেনের সঙ্গে এই ফোনকলের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিচার্ড ডনোগউ। ট্রাম্প-রোজেনের কথোপকথনের কিছু অংশ নিয়ে সেসময় একটি চিরকুট (পিডিএফ) লিখেছিলেন ডনোগউ।

এই চিরকুটের তথ্য অনুযায়ী, ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেন টেলিফোনে ট্রাম্পকে জানান, ‘বিচার মন্ত্রণালয় (ডিওজে) নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করতে পারে না। একইসঙ্গে নির্বাচনের ফলাফলের দিকে আঙুলও তুলবে না ডিওজে।’

জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি এটা করবেন বলে (আমিও) আশা করি না। আপনারা শুধু এই ঘোষণা দেন যে- নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছে এবং বাকিটা আমার ও রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের ওপরে ছেড়ে দেন।’

ট্রাম্প এসময় নির্বাচনে ‘জালিয়াতি ও কারচুপির’ নিয়ে ‘বৈধ অভিযোগগুলোর’ বিষয়ে তদন্ত শুরু করতেও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

ডনোগউয়ের চিরকুটের তথ্য অনুযায়ী, রোজেন এসময় ট্রাম্পকে বলেন, ‘স্যার, আমরা কয়েক ডজন তদন্ত করেছি, শত শত মানুষের কথা শুনেছি। কিন্তু (আপনাদের পক্ষ থেকে) সামনে আনা প্রমাণগুলো বড় কোনো অভিযোগকেই সমর্থন করছে না।’

এসময় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, জেফ্রে রোজেন তার (ট্রাম্পের) মতো করে ‘যথাযথভাবে’ দায়িত্বপালন করছেন না। জবাবে রোজেন বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়িত্বপালন করছি। আপনি যেসব তথ্য পাচ্ছেন, তার বেশিরভাগই মিথ্যা।’ সূত্র: আলজাজিরা

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

‘নির্বাচনে কারচুপির ঘোষণা দাও, বাকিটা আমি দেখব’

আপডেট: ১২:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় থেকে যেতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তাই নির্বাচনে কারচুপি ও দুর্নীতি হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়ে বাকিটা তার (ট্রাম্প) ওপর ছেড়ে দিতে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছিলেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। গত ডিসেম্বরে টেলিফোনের মাধ্যমে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

হাতে লেখা চিরকুটের মাধ্যমে সম্প্রতি এই তথ্য সামনে এসেছে। গত ডিসেম্বরে ট্রাম্পের সঙ্গে সেই ফোনকলে অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে একজন ওই চিরকুটটি লিখেছিলেন। শুক্রবার (৩০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের ২৭ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে ফোনে কথা বলার সময় নির্বাচনে কারচুপি ও দুর্নীতি হয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ওই ফোনকলের একটি চিরকুট প্রকাশ করে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের হাউস ওভারসাইট কমিটি।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এই কমিটি জোর দিয়ে বলছে, গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দিতে ট্রাম্প কতোটা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছেন, তা এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে। একইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদেরও নিজের এই প্রচেষ্টায় শামিল করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আলজাজিরা জানিয়েছে, গত মাসে প্রকাশ্যে আনা বেশ কয়েকটি ইমেইলে দেখা যাচ্ছে যে- ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ‘ব্যাপক দুর্নীতির’ সন্ধানে তদন্ত শুরু করতে ক্ষমতার শেষ সপ্তাহগুলোতে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয়কে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠজনরা। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কি না সে বিষয়েও তদন্ত করেছিলেন ওই দফতরের ইন্সপেক্টর জেনারেল।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেনের সঙ্গে এই ফোনকলের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রিচার্ড ডনোগউ। ট্রাম্প-রোজেনের কথোপকথনের কিছু অংশ নিয়ে সেসময় একটি চিরকুট (পিডিএফ) লিখেছিলেন ডনোগউ।

এই চিরকুটের তথ্য অনুযায়ী, ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ্রে রোজেন টেলিফোনে ট্রাম্পকে জানান, ‘বিচার মন্ত্রণালয় (ডিওজে) নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করতে পারে না। একইসঙ্গে নির্বাচনের ফলাফলের দিকে আঙুলও তুলবে না ডিওজে।’

জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি এটা করবেন বলে (আমিও) আশা করি না। আপনারা শুধু এই ঘোষণা দেন যে- নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছে এবং বাকিটা আমার ও রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের ওপরে ছেড়ে দেন।’

ট্রাম্প এসময় নির্বাচনে ‘জালিয়াতি ও কারচুপির’ নিয়ে ‘বৈধ অভিযোগগুলোর’ বিষয়ে তদন্ত শুরু করতেও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

ডনোগউয়ের চিরকুটের তথ্য অনুযায়ী, রোজেন এসময় ট্রাম্পকে বলেন, ‘স্যার, আমরা কয়েক ডজন তদন্ত করেছি, শত শত মানুষের কথা শুনেছি। কিন্তু (আপনাদের পক্ষ থেকে) সামনে আনা প্রমাণগুলো বড় কোনো অভিযোগকেই সমর্থন করছে না।’

এসময় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, জেফ্রে রোজেন তার (ট্রাম্পের) মতো করে ‘যথাযথভাবে’ দায়িত্বপালন করছেন না। জবাবে রোজেন বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়িত্বপালন করছি। আপনি যেসব তথ্য পাচ্ছেন, তার বেশিরভাগই মিথ্যা।’ সূত্র: আলজাজিরা

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: