০৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

পাচারকৃত অর্থ ফেরতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৩৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১০১৯৫ বার দেখা হয়েছে

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারসহ বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এসব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো চুক্তি করবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা অংশ নেন। এতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ওমর ফারুক খান বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক ল’-ফার্ম ও অ্যাসেট রিকভারি প্রতিষ্ঠান (মোট ১২টি) এনগেজ করলে তারা টাকাগুলো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারবে। কিছু ব্যাংক লিড ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে, একাধিক ব্যাংক মিলে কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে। পাশাপাশি বাইরের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা হবে। এরপর দেখা হবে সেই টাকা কীভাবে ডিপোজিট করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, সিআইডি প্রাথমিকভাবে মোট ১১টি স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর নাম শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে নাসা, এস আলমসহ আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এনডিএ (গোপনীয়তার চুক্তি) করে আমরা স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করবো। মূল উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশ থেকে যে টাকা গিয়েছে (পাচার হয়েছে) সেগুলো রিকভার করা (ফিরিয়ে আনা)।

এবি ব্যাংকের এমডি মিজানুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংকের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। এটি একটি ‘টোটাল ব্যাংকিং’ কনসেপ্ট, যেখানে বহু ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনা ছিল। সভায় প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল, যা প্রায় ৩০টি সংস্থার সঙ্গে আলাপচারিতার ইঙ্গিত দেয়।

পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মানি-লন্ডারিং সংক্রান্ত প্রেক্ষাপটে ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে গোপনীয়তার চুক্তি করে ফরেন অ্যাসেট রিকভারির কাজ করতে বলা হবে।

পাচার অর্থ উদ্ধারে আগে কাজ করা আন্তর্জাতিক চারটি সংস্থার নামও উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি, ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সংস্থা তথ্য আহরণে সফলতা পেয়েছে এবং এখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন অবিলম্বে ওই ১২ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

পাচারকৃত অর্থ ফেরতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

আপডেট: ০৪:৩৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারসহ বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এসব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো চুক্তি করবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা অংশ নেন। এতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ওমর ফারুক খান বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক ল’-ফার্ম ও অ্যাসেট রিকভারি প্রতিষ্ঠান (মোট ১২টি) এনগেজ করলে তারা টাকাগুলো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারবে। কিছু ব্যাংক লিড ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে, একাধিক ব্যাংক মিলে কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে। পাশাপাশি বাইরের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা হবে। এরপর দেখা হবে সেই টাকা কীভাবে ডিপোজিট করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, সিআইডি প্রাথমিকভাবে মোট ১১টি স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর নাম শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে নাসা, এস আলমসহ আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এনডিএ (গোপনীয়তার চুক্তি) করে আমরা স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ শুরু করবো। মূল উদ্দেশ্য হলো, বাংলাদেশ থেকে যে টাকা গিয়েছে (পাচার হয়েছে) সেগুলো রিকভার করা (ফিরিয়ে আনা)।

এবি ব্যাংকের এমডি মিজানুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংকের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। এটি একটি ‘টোটাল ব্যাংকিং’ কনসেপ্ট, যেখানে বহু ব্যাংককে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনা ছিল। সভায় প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল, যা প্রায় ৩০টি সংস্থার সঙ্গে আলাপচারিতার ইঙ্গিত দেয়।

পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মানি-লন্ডারিং সংক্রান্ত প্রেক্ষাপটে ওই ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে গোপনীয়তার চুক্তি করে ফরেন অ্যাসেট রিকভারির কাজ করতে বলা হবে।

পাচার অর্থ উদ্ধারে আগে কাজ করা আন্তর্জাতিক চারটি সংস্থার নামও উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি, ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সংস্থা তথ্য আহরণে সফলতা পেয়েছে এবং এখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন অবিলম্বে ওই ১২ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে।

ঢাকা/এসএইচ