০৮:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পোশাক কারখানায় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে হুয়াওয়ে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪১৩৬ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে সম্প্রতি দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিনিধি ও সবচেয়ে বড় ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন বিজিএমইএ’র সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।

দেশের সাম্প্রতিক জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করতে এবং সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার পদক্ষেপ হিসেবে এ এমওইউ সই করা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও জীবাশ্ম জ্বালানি ও গ্যাস সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিকল্প জ্বালানি উৎসের ব্যবস্থা করা এবং সৌরবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশের দিকে যাত্রাকে ত্বরান্বিত করা অত্যন্ত জরুরি।

এ কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সমাধান নিশ্চিতে হুয়াওয়ের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করবে বিজিএমইএ। এ নিয়ে গত রোববার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে দু’পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং, দু’পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন। এসময় হুয়াওয়ে ও বিজিএমইএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ‘ক্রেতাদের বিকল্প খোঁজার সুযোগ করে দিচ্ছি আমরা’

এ চুক্তির অধীনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে পোশাক কারখানাগুলোকে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি’তে পরিণত করতে হুয়াওয়ে ও বিজিএমইএ একযোগে কাজ করবে। বিজিএমইএ’র তালিকাভুক্ত পোশাক কারখানাগুলোতে ওপেক্স ও ক্যাপেক্স দুইটি মডিউলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে হুয়াওয়ে। ওপেক্স মডিউলের ক্ষেত্রে কারখানার মালিকরা গ্রিড বিদ্যুতের তুলনায় কম খরচে বিদ্যুৎ পাবেন।

অন্যদিকে, ক্যাপেক্স মডিউলে (প্রথম) কারখানা মালিকরা বিনিয়োগকারীর সঙ্গে পেমেন্টের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে যেতে পারবে। পেমেন্ট সম্পন্ন হলে সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেমটির মালিকানা কারখানা মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এছাড়া চুক্তিতে ক্যাপেক্সের মডিউলে (দ্বিতীয়) আরেকটি বিকল্প রাখা হয়েছে। যার মাধ্যমে কারখানা মালিকরা নিজেরাই বিনিয়োগের মাধ্যমে কারখানার ছাদে সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেম স্থাপন করতে পারবেন এবং সৌর-জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারবেন। দুটি মডিউলের ক্ষেত্রেই হুয়াওয়ে ও কারখানাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনসহ পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করবে বিজিএমইএ।

হুয়াওয়ে ও বিজিএমইএ’র এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী পোশাক কারখানাগুলোর ছাদে ২ গিগাওয়াটের বেশি সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেম স্থাপনের সুযোগ রাখা হয়েছে, যা সবমিলিয়ে প্রতিবছর প্রায় ২৬০০ গিগাওয়াট আওয়ার নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপন্ন করতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে গ্রিড বিদ্যুতের ওপর চাপ কমে আসবে এবং দেশের চলমান বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে এ উদ্যোগ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

কারখানাগুলোতে এ সিস্টেম ব্যবহার করে প্রতিবছর ১ দশমিক ৪০ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমিয়ে আনা সম্ভব, যা প্রায় ২ দশমিক ১৪ মিলিয়ন (২১ লাখ ৪০ হাজার) গাছ লাগানোর সমান সুবিধা দিবে। এ ধরনের উদ্যোগ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর থেকে কারখানাগুলোর নির্ভরতা কমিয়ে আনবে এবং তুলনামূলক কম খরচে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, আরএমজি শিল্পক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস নির্ধারণ এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস করা বিজিএমইএর অন্যতম লক্ষ্য। তাই নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস এবং বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্মার্ট প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এ শিল্পের জন্য এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো এ শিল্পের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, তবে আর্থিক কারণে তারা প্রায়শই নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করে।

তবে, বিশ্বজুড়ে বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে বলা যায়, আরএমজি কারখানাগুলোর উৎপাদনের ক্ষেত্রে কার্বন পদচিহ্ন হ্রাস করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

এ ক্ষেত্রে ওপেক্স মডেল তাদের জন্য একটি আদর্শ মডেল হতে পারে। অন্যদিকে ক্যাপেক্স মডেলের মাধ্যমে কারখানাগুলো তাদের ছাদের অব্যবহৃত অংশ ব্যবহার করে সবুজ এবং নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন করতে পারবে এবং নিঃসৃত কার্বনের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

পোশাক কারখানায় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে হুয়াওয়ে

আপডেট: ১২:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে সম্প্রতি দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতিনিধি ও সবচেয়ে বড় ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন বিজিএমইএ’র সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।

দেশের সাম্প্রতিক জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করতে এবং সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার পদক্ষেপ হিসেবে এ এমওইউ সই করা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও জীবাশ্ম জ্বালানি ও গ্যাস সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিকল্প জ্বালানি উৎসের ব্যবস্থা করা এবং সৌরবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশের দিকে যাত্রাকে ত্বরান্বিত করা অত্যন্ত জরুরি।

এ কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সমাধান নিশ্চিতে হুয়াওয়ের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করবে বিজিএমইএ। এ নিয়ে গত রোববার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে দু’পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। বিজিএমইএ’র প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং, দু’পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন। এসময় হুয়াওয়ে ও বিজিএমইএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ‘ক্রেতাদের বিকল্প খোঁজার সুযোগ করে দিচ্ছি আমরা’

এ চুক্তির অধীনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে পোশাক কারখানাগুলোকে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি’তে পরিণত করতে হুয়াওয়ে ও বিজিএমইএ একযোগে কাজ করবে। বিজিএমইএ’র তালিকাভুক্ত পোশাক কারখানাগুলোতে ওপেক্স ও ক্যাপেক্স দুইটি মডিউলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে হুয়াওয়ে। ওপেক্স মডিউলের ক্ষেত্রে কারখানার মালিকরা গ্রিড বিদ্যুতের তুলনায় কম খরচে বিদ্যুৎ পাবেন।

অন্যদিকে, ক্যাপেক্স মডিউলে (প্রথম) কারখানা মালিকরা বিনিয়োগকারীর সঙ্গে পেমেন্টের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে যেতে পারবে। পেমেন্ট সম্পন্ন হলে সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেমটির মালিকানা কারখানা মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এছাড়া চুক্তিতে ক্যাপেক্সের মডিউলে (দ্বিতীয়) আরেকটি বিকল্প রাখা হয়েছে। যার মাধ্যমে কারখানা মালিকরা নিজেরাই বিনিয়োগের মাধ্যমে কারখানার ছাদে সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেম স্থাপন করতে পারবেন এবং সৌর-জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারবেন। দুটি মডিউলের ক্ষেত্রেই হুয়াওয়ে ও কারখানাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনসহ পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করবে বিজিএমইএ।

হুয়াওয়ে ও বিজিএমইএ’র এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী পোশাক কারখানাগুলোর ছাদে ২ গিগাওয়াটের বেশি সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেম স্থাপনের সুযোগ রাখা হয়েছে, যা সবমিলিয়ে প্রতিবছর প্রায় ২৬০০ গিগাওয়াট আওয়ার নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপন্ন করতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে গ্রিড বিদ্যুতের ওপর চাপ কমে আসবে এবং দেশের চলমান বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে এ উদ্যোগ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

কারখানাগুলোতে এ সিস্টেম ব্যবহার করে প্রতিবছর ১ দশমিক ৪০ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমিয়ে আনা সম্ভব, যা প্রায় ২ দশমিক ১৪ মিলিয়ন (২১ লাখ ৪০ হাজার) গাছ লাগানোর সমান সুবিধা দিবে। এ ধরনের উদ্যোগ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর থেকে কারখানাগুলোর নির্ভরতা কমিয়ে আনবে এবং তুলনামূলক কম খরচে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, আরএমজি শিল্পক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস নির্ধারণ এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস করা বিজিএমইএর অন্যতম লক্ষ্য। তাই নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস এবং বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্মার্ট প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এ শিল্পের জন্য এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো এ শিল্পের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, তবে আর্থিক কারণে তারা প্রায়শই নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করে।

তবে, বিশ্বজুড়ে বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে বলা যায়, আরএমজি কারখানাগুলোর উৎপাদনের ক্ষেত্রে কার্বন পদচিহ্ন হ্রাস করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

এ ক্ষেত্রে ওপেক্স মডেল তাদের জন্য একটি আদর্শ মডেল হতে পারে। অন্যদিকে ক্যাপেক্স মডেলের মাধ্যমে কারখানাগুলো তাদের ছাদের অব্যবহৃত অংশ ব্যবহার করে সবুজ এবং নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন করতে পারবে এবং নিঃসৃত কার্বনের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।

ঢাকা/টিএ