০৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ফের সূচকের পতনে হতাশায় বিনিয়োগকারীরা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:১৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
  • / ৪১৫৬ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) একদিন পরে ফের সূচকের দরপতন পুঁজিবাজারে। আজ সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার ডিএসইর সব ধরনের মূল্য সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এমন পতনে হতাশায় বিনিয়োগকারীরা। এদিন ডিএসইতে টাকার অংকে লেনদেন নামমাত্র বেড়েছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্রে লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পুঁজিবাজারকে পতন থেকে বাচাতে দেয়া এক গুচ্ছ সিদ্ধান্তও বাজারে আস্থা ফেরাতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদেরকে নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নানা ঘোষণায় যে উত্থান হয়েছিল, সেটি টিকল না এক দিনও।

সোমবার ১১৮ পয়েন্ট সূচক বাড়ার সুখ স্মৃতি নিয়ে লেনদেন শুরু করা পুঁজিবাজারে মঙ্গলবার পতন হলো ৫০ পয়েন্ট।

লেনদেন শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগেও সূচক পড়ে যায় ৭১ পয়েন্ট। তবে শেষ সময়ের সমন্বয়ে এই সূচক সেখান থেকে ২১ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন।

গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া বড় দরপতনে যে চিত্র প্রতিদিন দেখা গেছে, সেটি দেখা গেল আবার। এদিনও এক পর্যায়ে সূচক বেড়ে গিয়ে আশা তৈরি করেও পরে হতাশ করেছে বিনিয়োগকারীদেরকে।

শেয়ারদর ও সূচকের পতন হয়েছে মূলত শেষের দিকে, এতে বোঝা যায়, দেড় দিনের উত্থানের সুযোগে মুনাফা তুলে নিয়েছে বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে, এমন আশায় শেয়ার ধরে না রেখে যে মুনাফা হয়েছে, সেটিই নিয়ে নিয়েছে তারা।

ঈদের অবসর শেষে টানা আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের পর রোববার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে।

বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।

এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশও দেন মন্ত্রী।

এই বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ১১৮ পয়েন্টের উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে শঙ্কা রয়ে গিয়েছিল, সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় লেনদেনেই। বাজারে সক্রিয় না হয়ে আরও অপেক্ষার নীতি নেয়ায় লেনদেন কমে যায় অনেকটাই।

সূচক পতনের দিন লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কিছুটা বাড়ে। আগের দিন লেনদেন ছিল ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। সেটি হয়েছে ৬৬০ কোটি ৪৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

আগের দিন প্রায় সাড়ে তিন’শ কোম্পানির দর বাড়লেও আজ কমে যায় পৌনে তিন’শ কোম্পানির দর।

আজ ডিএসইতে ৩৭৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫টির, কমেছে ২৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির।

এর মধ্যে তথ্য প্রযুক্তি, সিরামিকস, চামড়া, টেলিযোগাযোগ, ভ্রমণ ও অবসর, কাগজ ও প্রকাশনা খাতের সব শেয়ারই দর হারিয়েছে।

প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন ছাড়া বাকি সব খাতেই দর হারিয়েছে সিংহভাগ কোম্পানি।

মঙ্গলবার ডিএসইতে ৬৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগেরদিন থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বেশি।  গতকাল  ডিএসইতে ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৫০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২১১ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে  ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট কমে  দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৯৫ পয়েন্টে।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)ও সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। আজ সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১২৯ পয়েন্ট কমেছে। এদিন সিএসইতে ১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

ফের সূচকের পতনে হতাশায় বিনিয়োগকারীরা

আপডেট: ০৩:১৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) একদিন পরে ফের সূচকের দরপতন পুঁজিবাজারে। আজ সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার ডিএসইর সব ধরনের মূল্য সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এমন পতনে হতাশায় বিনিয়োগকারীরা। এদিন ডিএসইতে টাকার অংকে লেনদেন নামমাত্র বেড়েছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্রে লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পুঁজিবাজারকে পতন থেকে বাচাতে দেয়া এক গুচ্ছ সিদ্ধান্তও বাজারে আস্থা ফেরাতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদেরকে নিয়ে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নানা ঘোষণায় যে উত্থান হয়েছিল, সেটি টিকল না এক দিনও।

সোমবার ১১৮ পয়েন্ট সূচক বাড়ার সুখ স্মৃতি নিয়ে লেনদেন শুরু করা পুঁজিবাজারে মঙ্গলবার পতন হলো ৫০ পয়েন্ট।

লেনদেন শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগেও সূচক পড়ে যায় ৭১ পয়েন্ট। তবে শেষ সময়ের সমন্বয়ে এই সূচক সেখান থেকে ২১ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন।

গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া বড় দরপতনে যে চিত্র প্রতিদিন দেখা গেছে, সেটি দেখা গেল আবার। এদিনও এক পর্যায়ে সূচক বেড়ে গিয়ে আশা তৈরি করেও পরে হতাশ করেছে বিনিয়োগকারীদেরকে।

শেয়ারদর ও সূচকের পতন হয়েছে মূলত শেষের দিকে, এতে বোঝা যায়, দেড় দিনের উত্থানের সুযোগে মুনাফা তুলে নিয়েছে বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে, এমন আশায় শেয়ার ধরে না রেখে যে মুনাফা হয়েছে, সেটিই নিয়ে নিয়েছে তারা।

ঈদের অবসর শেষে টানা আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট সূচকের পতনের পর রোববার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বসেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে।

বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে।

এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার নির্দেশও দেন মন্ত্রী।

এই বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ১১৮ পয়েন্টের উত্থান হলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে শঙ্কা রয়ে গিয়েছিল, সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় লেনদেনেই। বাজারে সক্রিয় না হয়ে আরও অপেক্ষার নীতি নেয়ায় লেনদেন কমে যায় অনেকটাই।

সূচক পতনের দিন লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কিছুটা বাড়ে। আগের দিন লেনদেন ছিল ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। সেটি হয়েছে ৬৬০ কোটি ৪৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

আগের দিন প্রায় সাড়ে তিন’শ কোম্পানির দর বাড়লেও আজ কমে যায় পৌনে তিন’শ কোম্পানির দর।

আজ ডিএসইতে ৩৭৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫টির, কমেছে ২৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির।

এর মধ্যে তথ্য প্রযুক্তি, সিরামিকস, চামড়া, টেলিযোগাযোগ, ভ্রমণ ও অবসর, কাগজ ও প্রকাশনা খাতের সব শেয়ারই দর হারিয়েছে।

প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন ছাড়া বাকি সব খাতেই দর হারিয়েছে সিংহভাগ কোম্পানি।

মঙ্গলবার ডিএসইতে ৬৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগেরদিন থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বেশি।  গতকাল  ডিএসইতে ৬৫৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৫০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২১১ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে  ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট কমে  দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৯৫ পয়েন্টে।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)ও সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। আজ সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১২৯ পয়েন্ট কমেছে। এদিন সিএসইতে ১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ঢাকা/টিএ