০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে ২৩০ কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের ভাগ্য!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:২৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪১৯৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারের দরপতন ঠেকাতে সর্বনিম্ন বাজার মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে বিএসইসির এ সিদ্ধান্তে ধারাবাহিক দরপতন হয়ত কিছুটা আটকানো সম্ভব হয়েছে, তবে সেই সাথে আটকে গেছে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর ভাগ্য।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ক্রমেই ভারী হচ্ছে দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার সংখ্যা। গতকাল সোমবার (১৭ অক্টোবর ২০২২) পর্যন্ত  তালিকাভুক্ত ২১৮টির কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছিল। কোম্পানিগুলোর শেয়ার কোনভাবেই ফ্লোর প্রাইসের গন্ডি অতিক্রম করতে পারছে না। সেই সাথে আজ মঙ্গলবার সামান্য পতনেও ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছে আরও ১২ কোম্পানির শেয়ার। ফ্লোর প্রাইসে ফেরা ১২টি নিয়ে ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩০টিতে।

আজ নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে আসা ১২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন, আমরা নেটওয়ার্ক, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, ইস্টার্ণ ব্যাংক, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, যমুনা অয়েল, স্টাইলক্রাফট, এটলাস বাংলাদেশ, সমতা লেদার এবং বিএসআএম লিমিটেড।

বাজার সংশ্নিষ্টদের মতে, বর্তমান পুঁজিবাজারের লেনদেন ও সূচকের ওঠানামার সিংহভাগ গুটিকয়েক শেয়ারকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। সূচক বাড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো বেশিরভাগ শেয়ার দর হারানোয় তারা আর্থিক ক্ষতিতে পড়ছেন।

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন ডিএসই নির্ধারিত কোন কোম্পানির চূড়ান্ত ফ্লোর প্রাইস কতো!

অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই মনে করছেন, সূচক একদিকে আর বেশিরভাগ শেয়ারদর অন্যদিকে, যা সুষ্ঠু বাজারের চিত্র নয়। এ বাজারে অল্প কিছু মানুষ ব্যবসা করছেন। রাতারাতি কয়েকটি শেয়ারের দর হু-হু করে বাড়ছে। অথচ বেশিরভাগ শেয়ার দর হারাচ্ছে। সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচায় স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত লেনদেনের মাধ্যমে এমন দরের উত্থান ঘটছে- এমন কেউই মনে করছেন না। তারপরও এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন করছেন না।

এদিকে সিকিউরিটিজ হাউজ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারের কোম্পানির শেয়ার ও ফান্ডের ইউনিটে সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এতে শেয়ারের প্রকৃত বাজার মূল্য প্রতিফলিত হচ্ছে না। এছাড়া প্রত্যাশা অনুযায়ী শেয়ারের ক্রেতা বা বিক্রেতা না থাকায় বিনিয়োগ আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বিনিয়োগ আটকে যাওয়ার সম্ভাবনায় অনেক ব্যক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারী নতুন বিনিয়োগে আসছে না। একইসঙ্গে লেনদেন কমে যাওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর লোকসান ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এ পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদি হলে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে শাখা বন্ধের পাশাপাশি কর্মী ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিবে।

দায়িত্বশীলরা যদি মনে করেন, গুটিকয়েক ব্যক্তির লেনদেন ও তাঁদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের জন্য এ বাজার, তাহলে সিংহভাগ বিনিয়োগকারী এ বাজার থেকে ফের মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। এখন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে দরপতন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে, যা কোনো টেকসই পদক্ষেপ নয়।

আরও পড়ুন: ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও বিআইএফসি’র আর্থিক কেলেঙ্কারি: দায় এড়াতে পারে না বিএসইসি

তবে ফ্লোর প্রাইস ইস্যুতে অনড় রয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক সেমিনারে তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস দেওয়া বিষয়টি আমিও পছন্দ করি না। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এটি আমাদের দিতে হয়েছে। তা না হলে বাজারের দরপতন হয়ে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন বলেন, করোনার মহামারি থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় দেশে প্রথমবার ২০২০ সালে ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সীমা) দিয়েছি। এরপর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আশা করছি বাজার স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবা পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২১৮টি। যা প্রতিদিনেই বেড়ে চলছে। এমতাবস্থায় দেখার বিষয় হচ্ছে এই ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কততে যেয়ে থামে। যার বর্তমান অবস্থান ২৩০টি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারের দরপতন ঠেকাতে সর্বনিম্ন বাজার মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপর শেয়ার দাম বাড়ায়-কমায় ফ্লোর প্রাইসের নিচে থাকা কোম্পানির সংখ্যাও ওঠানামা করতে থাকে।

বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, শেষ ৫ কার্যদিবসের (রোববার-বৃহস্পতিবার) ক্লোজিং প্রাইসের গড় দর হবে প্রতিটি সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস। এর উপরে সিকিউরিটিজের দর স্বাভাবিক হারে ওঠানামা করতে পারবে। ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। তবে কোম্পানির বোনাস শেয়ার বা রাইট শেয়ারের কারণে ফ্লোর প্রাইসে থাকা সিকিউরিটিজের দর সমন্বয় হবে।

নতুন শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রথম দিনের লেনদেনের ক্লোজিং প্রাইসকে ফ্লোর প্রাইস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

অন্যদিকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনার বাইরে থাকবে এসএমই বোর্ড। অর্থাৎ এসএমইতে বিদ্যমান নিয়মে ওঠানামা করবে।

এর আগে ২০২০ সালে দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে পুঁজিবাজারে ধস ঠেকাতে ওই বছরের ১৯ মার্চ সেই সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।

এরপরে ৩ ধাপে বর্তমান কমিশন ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছিল। প্রথম দফায় ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। এরপরে ওই বছরের ৩ জুন ফ্লোর প্রাইসে থাকা বাকি ৩০ কোম্পানি থেকে নির্দেশনাটি তুলে নেয় বিএসইসি। তৃতীয় ধাপে এসে ১৭ জুন পুঁজিবাজার থেকে পুরোপুরি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় কমিশন।

ঢাকা/এইচকে

শেয়ার করুন

x
English Version

ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে ২৩০ কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের ভাগ্য!

আপডেট: ১২:২৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারের দরপতন ঠেকাতে সর্বনিম্ন বাজার মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে বিএসইসির এ সিদ্ধান্তে ধারাবাহিক দরপতন হয়ত কিছুটা আটকানো সম্ভব হয়েছে, তবে সেই সাথে আটকে গেছে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর ভাগ্য।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ক্রমেই ভারী হচ্ছে দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার সংখ্যা। গতকাল সোমবার (১৭ অক্টোবর ২০২২) পর্যন্ত  তালিকাভুক্ত ২১৮টির কোম্পানি ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছিল। কোম্পানিগুলোর শেয়ার কোনভাবেই ফ্লোর প্রাইসের গন্ডি অতিক্রম করতে পারছে না। সেই সাথে আজ মঙ্গলবার সামান্য পতনেও ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছে আরও ১২ কোম্পানির শেয়ার। ফ্লোর প্রাইসে ফেরা ১২টি নিয়ে ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩০টিতে।

আজ নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে আসা ১২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন, আমরা নেটওয়ার্ক, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, ইস্টার্ণ ব্যাংক, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, যমুনা অয়েল, স্টাইলক্রাফট, এটলাস বাংলাদেশ, সমতা লেদার এবং বিএসআএম লিমিটেড।

বাজার সংশ্নিষ্টদের মতে, বর্তমান পুঁজিবাজারের লেনদেন ও সূচকের ওঠানামার সিংহভাগ গুটিকয়েক শেয়ারকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। সূচক বাড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো বেশিরভাগ শেয়ার দর হারানোয় তারা আর্থিক ক্ষতিতে পড়ছেন।

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন ডিএসই নির্ধারিত কোন কোম্পানির চূড়ান্ত ফ্লোর প্রাইস কতো!

অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই মনে করছেন, সূচক একদিকে আর বেশিরভাগ শেয়ারদর অন্যদিকে, যা সুষ্ঠু বাজারের চিত্র নয়। এ বাজারে অল্প কিছু মানুষ ব্যবসা করছেন। রাতারাতি কয়েকটি শেয়ারের দর হু-হু করে বাড়ছে। অথচ বেশিরভাগ শেয়ার দর হারাচ্ছে। সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচায় স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত লেনদেনের মাধ্যমে এমন দরের উত্থান ঘটছে- এমন কেউই মনে করছেন না। তারপরও এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন করছেন না।

এদিকে সিকিউরিটিজ হাউজ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারের কোম্পানির শেয়ার ও ফান্ডের ইউনিটে সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এতে শেয়ারের প্রকৃত বাজার মূল্য প্রতিফলিত হচ্ছে না। এছাড়া প্রত্যাশা অনুযায়ী শেয়ারের ক্রেতা বা বিক্রেতা না থাকায় বিনিয়োগ আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বিনিয়োগ আটকে যাওয়ার সম্ভাবনায় অনেক ব্যক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারী নতুন বিনিয়োগে আসছে না। একইসঙ্গে লেনদেন কমে যাওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর লোকসান ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এ পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদি হলে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে শাখা বন্ধের পাশাপাশি কর্মী ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিবে।

দায়িত্বশীলরা যদি মনে করেন, গুটিকয়েক ব্যক্তির লেনদেন ও তাঁদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের জন্য এ বাজার, তাহলে সিংহভাগ বিনিয়োগকারী এ বাজার থেকে ফের মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। এখন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে দরপতন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে, যা কোনো টেকসই পদক্ষেপ নয়।

আরও পড়ুন: ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও বিআইএফসি’র আর্থিক কেলেঙ্কারি: দায় এড়াতে পারে না বিএসইসি

তবে ফ্লোর প্রাইস ইস্যুতে অনড় রয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক সেমিনারে তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস দেওয়া বিষয়টি আমিও পছন্দ করি না। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এটি আমাদের দিতে হয়েছে। তা না হলে বাজারের দরপতন হয়ে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন বলেন, করোনার মহামারি থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় দেশে প্রথমবার ২০২০ সালে ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সীমা) দিয়েছি। এরপর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আশা করছি বাজার স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবা পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২১৮টি। যা প্রতিদিনেই বেড়ে চলছে। এমতাবস্থায় দেখার বিষয় হচ্ছে এই ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কততে যেয়ে থামে। যার বর্তমান অবস্থান ২৩০টি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারের দরপতন ঠেকাতে সর্বনিম্ন বাজার মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপর শেয়ার দাম বাড়ায়-কমায় ফ্লোর প্রাইসের নিচে থাকা কোম্পানির সংখ্যাও ওঠানামা করতে থাকে।

বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, শেষ ৫ কার্যদিবসের (রোববার-বৃহস্পতিবার) ক্লোজিং প্রাইসের গড় দর হবে প্রতিটি সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস। এর উপরে সিকিউরিটিজের দর স্বাভাবিক হারে ওঠানামা করতে পারবে। ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। তবে কোম্পানির বোনাস শেয়ার বা রাইট শেয়ারের কারণে ফ্লোর প্রাইসে থাকা সিকিউরিটিজের দর সমন্বয় হবে।

নতুন শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রথম দিনের লেনদেনের ক্লোজিং প্রাইসকে ফ্লোর প্রাইস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

অন্যদিকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনার বাইরে থাকবে এসএমই বোর্ড। অর্থাৎ এসএমইতে বিদ্যমান নিয়মে ওঠানামা করবে।

এর আগে ২০২০ সালে দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে পুঁজিবাজারে ধস ঠেকাতে ওই বছরের ১৯ মার্চ সেই সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।

এরপরে ৩ ধাপে বর্তমান কমিশন ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছিল। প্রথম দফায় ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। এরপরে ওই বছরের ৩ জুন ফ্লোর প্রাইসে থাকা বাকি ৩০ কোম্পানি থেকে নির্দেশনাটি তুলে নেয় বিএসইসি। তৃতীয় ধাপে এসে ১৭ জুন পুঁজিবাজার থেকে পুরোপুরি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় কমিশন।

ঢাকা/এইচকে