০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিকালে নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে সরকার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • / ৪১৫০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: কর্মবিরতিতে যাওয়া নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে বিকালে বৈঠকে বসছে সরকার। আজ সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।

সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও নৌযান মালিকরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক (ট্রেড ইউনিয়ন, প্রশিক্ষণ ও সালিশী) মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন।

তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রী বিকেল ৩টায় শ্রম ভবনে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এবং বিকেল ৫টায় সাধারণ নৌ-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। উভয় বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও মালিকরাও থাকবেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবিতে গত শনিবার দিনগত রাত থেকে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা।

কর্মবিরতির কারণে সোমবারও সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলও।

আরও পড়ুন: দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু

নৌযান শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, প্রতি পাঁচ বছর পর নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার বিধান থাকলেও সর্বশেষ মজুরি কাঠামোর মেয়াদ গত বছরের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। কিন্তু নৌযান মালিকদের সংগঠনগুলো বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। এছাড়া গত ১৬ মাসে নৌ মন্ত্রণালয় ও শ্রম অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বহুবার দেন-দরবার করেও ফল পাওয়া যায়নি।

গত সাত বছরে (৬ বছর ৪ মাস) কয়েক দফা দ্রব্যমূল্য বেড়েছে জানিয়ে শ্রমিক নেতারা বলেন, মজুরি-ভাতা না বাড়ায় নৌযান শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এখন তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই সাধারণ শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছে।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম জানিয়েছেন, সোমবার বিকেল ৩টায় ঢাকায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হবে। তারা আশা করছেন এ বৈঠক ফলপ্রসূ হবে। এবং সেটি হলেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে। অন্যথায় চলমান কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে বন্দরে অবস্থান করা বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামা, পরিবহনের কাজ বন্ধ থাকলেও বন্দর জেটি, কন্টেইনার ও কার ইয়ার্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে মোংরা বন্দরের হাড়বাড়ীয়া ও ফেয়ারওয়ের বহির্নোঙরে অবস্থান করা সব বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সরকারের আমদানি করা গম ও সার বোঝাই জাহাজগুলো। সময় মতো এ পণ্য খালাস ও পরিবহন না হলে ক্ষতিতে পড়বেন কৃষকেরা।

নৌযান শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
# নৌযান শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
# ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস দিতে হবে।
# বাল্কহেডের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে হবে।
# বাংলাদেশের বন্দরসমূহ থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করতে হবে।
# চট্টগ্রাম বন্দরে প্রোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করতে হবে।
# চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
# কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ১০ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।
# কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করতে হবে।
# বাংলাদেশের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করতে হবে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

বিকালে নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে সরকার

আপডেট: ০১:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: কর্মবিরতিতে যাওয়া নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে বিকালে বৈঠকে বসছে সরকার। আজ সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।

সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও নৌযান মালিকরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক (ট্রেড ইউনিয়ন, প্রশিক্ষণ ও সালিশী) মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন।

তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রী বিকেল ৩টায় শ্রম ভবনে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এবং বিকেল ৫টায় সাধারণ নৌ-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। উভয় বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও মালিকরাও থাকবেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ বিভিন্ন দাবিতে গত শনিবার দিনগত রাত থেকে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা।

কর্মবিরতির কারণে সোমবারও সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলও।

আরও পড়ুন: দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু

নৌযান শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, প্রতি পাঁচ বছর পর নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার বিধান থাকলেও সর্বশেষ মজুরি কাঠামোর মেয়াদ গত বছরের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। কিন্তু নৌযান মালিকদের সংগঠনগুলো বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। এছাড়া গত ১৬ মাসে নৌ মন্ত্রণালয় ও শ্রম অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বহুবার দেন-দরবার করেও ফল পাওয়া যায়নি।

গত সাত বছরে (৬ বছর ৪ মাস) কয়েক দফা দ্রব্যমূল্য বেড়েছে জানিয়ে শ্রমিক নেতারা বলেন, মজুরি-ভাতা না বাড়ায় নৌযান শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এখন তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই সাধারণ শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছে।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম জানিয়েছেন, সোমবার বিকেল ৩টায় ঢাকায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হবে। তারা আশা করছেন এ বৈঠক ফলপ্রসূ হবে। এবং সেটি হলেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে। অন্যথায় চলমান কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে বন্দরে অবস্থান করা বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামা, পরিবহনের কাজ বন্ধ থাকলেও বন্দর জেটি, কন্টেইনার ও কার ইয়ার্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে মোংরা বন্দরের হাড়বাড়ীয়া ও ফেয়ারওয়ের বহির্নোঙরে অবস্থান করা সব বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সরকারের আমদানি করা গম ও সার বোঝাই জাহাজগুলো। সময় মতো এ পণ্য খালাস ও পরিবহন না হলে ক্ষতিতে পড়বেন কৃষকেরা।

নৌযান শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
# নৌযান শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
# ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস দিতে হবে।
# বাল্কহেডের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে হবে।
# বাংলাদেশের বন্দরসমূহ থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করতে হবে।
# চট্টগ্রাম বন্দরে প্রোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করতে হবে।
# চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
# কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ১০ লাখ টাকা ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।
# কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করতে হবে।
# বাংলাদেশের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করতে হবে।

ঢাকা/টিএ