০২:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

বিনিয়োগকারীদের কাছে ইএসজি রিপোর্টিংয়ের গুরুত্ব বাড়ছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
  • / ৪১৮১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইএসজি রিপোর্টিং নামে টেকসই রিপোর্টিং এর গুরুত্ব বাড়ছে। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ইএসজি (Environmental, Social and Corporate Governance) রিপোর্টকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ইএসজি রিপোর্টিংয়ের প্রসার ঘটানো দরকার।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

নেদারল্যান্ড ভিত্তিক গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভ (জিআরআই)  ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে জুম প্লাটফর্মে জিআরআই বাংলাদেশের রিপোর্টারদের সাথে ২য় গোলটেবিল আলোচনায় আলোচকরা এ কথা বলেছেন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক ও সংস্থাটির জিআরআই বিষয়ক দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিন রহমান সূচনা বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দেশে সাসটেইনেবল রিপোর্টিং এর কোনো আইনী বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ৫০ টির মতো তালিকাভুক্ত কোম্পানি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে ইএসজি রিপোর্টিং প্রকাশ করে, যা মোট তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রায় ১৪% শতাংশ।  এর হার বাড়ানো প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া বলেন, জিআরআই দক্ষিণ এশিয়া এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ গত ৫ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং জিআরআই ২০১৮ সাল থেকে জিআরআই সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং মডেল অনুযায়ী ইএসজি ডিসক্লোজার এবং এর সুবিধার জন্য তালিকাভুক্ত, অতালিকাভুক্ত এবং বড় কোম্পানীগুলোকে একত্রিত করতে একসঙ্গে কাজ করছে। আমি বিশ্বাস করি যে, সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের সহযোগিতা আমাদের স্থায়িত্বের সমস্যাগুলোর সমাধান করার বিষয়ে আলোকপাত করবে এবং এর রিপোর্টিং আমাদের পৃথিবীকে আরও সতেজ ও বাসযোগ্য করে তুলবে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মহামারী স্বত্তেও জিআরআই ভিত্তিক প্রতিবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি অভাবনীয় বিষয়। আমরা আশা করছি যে, আরো অনেক কোম্পানি প্রতিবেদন তৈরীতে তাদের যাত্রা শুরু করবে এবং তাদের কোম্পানিকে আরও টেকসই উপায়ে পরিচালনা করতে সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে ডিএসই প্রোগ্রামের জিআরআই রিপোর্টিং ব্যবহার করবে।

তিনি বলেন, আমরা সম্প্রতি এমন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি যে, যেসব কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে জিআরআই রিপোর্টিং এর জন্য অতিরিক্ত পয়েন্ট থাকবে এমন ১০ থেকে ১৫ টি কোম্পানিকে পুরস্কৃত করা হবে। আমার বিশ্বাস, এতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে আরও বেশি জিআরআই রিপোর্টিং করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। ডিএসই নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় এই ধরনের কর্মসূচী অব্যাহত রাখবে এবং সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য স্থায়িত্ব প্রতিবেদন নির্দেশিকা তৈরি করবে।
বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখনকার বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো ব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পরিবেশগত, সামাজিক এবং সরকারী বিষয়গুলি বিবেচনা করে। কারণ খরচ হ্রাস, উচ্চ উৎপাদনশীলতা এবং সর্বোত্তম বিনিয়োগের উপর তাদের প্রভাব রয়েছে৷ ইএসজি রিপোর্টিং সে সকল বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারে যারা শুধুমাত্র একটি কোম্পানির আর্থিক কর্মক্ষমতার পাশাপাশি নৈতিক বিষয়গুলির বিবেচনা করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক এবং ইস্যুকারী কোম্পানিগুলির জন্য ইএসজি রিপোর্টিং এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, উন্নত দেশের তালিকাভুক্ত কোম্পানির পাশাপাশি ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা ইত্যাদির মতো কিছু উন্নত অর্থনীতির দেশের জন্য ইএসজি রিপোর্টিং বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে অল্প সংখ্যক কোম্পানি ইএসজি রিপোর্টিং পালন করে। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এখন বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক ও স্টেকহোল্ডারদের ইএসজি রিপোর্টকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার সময় এসেছে।

জিআরআই দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক ড. অদিতি হালদার বলেন, জিআরআই থেকে আমরা বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের মতো অংশীদারের সাথে সহযোগিতা এবং কাজ করতে পেরে খুবই গর্বিত, যারা আমাদের সাথে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বাংলাদেশে টেকসই প্রতিবেদন তৈরিতে একটি মূলধারার অনুশীলন করার ব্যাপারে আমাদের সর্বত্র সহযোগিতা প্রদান করছে। আমরা প্রায় অনেকগুলি নীতির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রভাব তৈরি করেছি যেমন: ১৬৭টি দেশে ১৬৮টি নীতি, ২৫০টি বৃহত্তম কোম্পানির ৭৫ শতাংশ আমাদের জিআরআইর মান অনুসরণ করে।

অনুষ্ঠানটিতে আরও বক্তব্য প্রদান করেন পাওয়ারগ্রীড (ভারত) এর সাবেক প্রধান মহাব্যবস্থাপক ড. আর কে শ্রীভাস্তবা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিঃ এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ তৌহিদুল আলম খান, আদানি এন্টারপ্রাইজ লিঃ (ভারত) এর চীফ সাসটেইনিবিলিটি অফিসার পারভিন আনান্ত।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

বিনিয়োগকারীদের কাছে ইএসজি রিপোর্টিংয়ের গুরুত্ব বাড়ছে

আপডেট: ১১:১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইএসজি রিপোর্টিং নামে টেকসই রিপোর্টিং এর গুরুত্ব বাড়ছে। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ইএসজি (Environmental, Social and Corporate Governance) রিপোর্টকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ইএসজি রিপোর্টিংয়ের প্রসার ঘটানো দরকার।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

নেদারল্যান্ড ভিত্তিক গ্লোবাল রিপোর্টিং ইনিশিয়েটিভ (জিআরআই)  ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে জুম প্লাটফর্মে জিআরআই বাংলাদেশের রিপোর্টারদের সাথে ২য় গোলটেবিল আলোচনায় আলোচকরা এ কথা বলেছেন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে ডিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক ও সংস্থাটির জিআরআই বিষয়ক দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আল আমিন রহমান সূচনা বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, দেশে সাসটেইনেবল রিপোর্টিং এর কোনো আইনী বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ৫০ টির মতো তালিকাভুক্ত কোম্পানি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে ইএসজি রিপোর্টিং প্রকাশ করে, যা মোট তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রায় ১৪% শতাংশ।  এর হার বাড়ানো প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া বলেন, জিআরআই দক্ষিণ এশিয়া এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ গত ৫ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং জিআরআই ২০১৮ সাল থেকে জিআরআই সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং মডেল অনুযায়ী ইএসজি ডিসক্লোজার এবং এর সুবিধার জন্য তালিকাভুক্ত, অতালিকাভুক্ত এবং বড় কোম্পানীগুলোকে একত্রিত করতে একসঙ্গে কাজ করছে। আমি বিশ্বাস করি যে, সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের সহযোগিতা আমাদের স্থায়িত্বের সমস্যাগুলোর সমাধান করার বিষয়ে আলোকপাত করবে এবং এর রিপোর্টিং আমাদের পৃথিবীকে আরও সতেজ ও বাসযোগ্য করে তুলবে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মহামারী স্বত্তেও জিআরআই ভিত্তিক প্রতিবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা একটি অভাবনীয় বিষয়। আমরা আশা করছি যে, আরো অনেক কোম্পানি প্রতিবেদন তৈরীতে তাদের যাত্রা শুরু করবে এবং তাদের কোম্পানিকে আরও টেকসই উপায়ে পরিচালনা করতে সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে ডিএসই প্রোগ্রামের জিআরআই রিপোর্টিং ব্যবহার করবে।

তিনি বলেন, আমরা সম্প্রতি এমন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি যে, যেসব কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে জিআরআই রিপোর্টিং এর জন্য অতিরিক্ত পয়েন্ট থাকবে এমন ১০ থেকে ১৫ টি কোম্পানিকে পুরস্কৃত করা হবে। আমার বিশ্বাস, এতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে আরও বেশি জিআরআই রিপোর্টিং করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। ডিএসই নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় এই ধরনের কর্মসূচী অব্যাহত রাখবে এবং সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য স্থায়িত্ব প্রতিবেদন নির্দেশিকা তৈরি করবে।
বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখনকার বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো ব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পরিবেশগত, সামাজিক এবং সরকারী বিষয়গুলি বিবেচনা করে। কারণ খরচ হ্রাস, উচ্চ উৎপাদনশীলতা এবং সর্বোত্তম বিনিয়োগের উপর তাদের প্রভাব রয়েছে৷ ইএসজি রিপোর্টিং সে সকল বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারে যারা শুধুমাত্র একটি কোম্পানির আর্থিক কর্মক্ষমতার পাশাপাশি নৈতিক বিষয়গুলির বিবেচনা করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক এবং ইস্যুকারী কোম্পানিগুলির জন্য ইএসজি রিপোর্টিং এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, উন্নত দেশের তালিকাভুক্ত কোম্পানির পাশাপাশি ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা ইত্যাদির মতো কিছু উন্নত অর্থনীতির দেশের জন্য ইএসজি রিপোর্টিং বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে অল্প সংখ্যক কোম্পানি ইএসজি রিপোর্টিং পালন করে। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এখন বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক ও স্টেকহোল্ডারদের ইএসজি রিপোর্টকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার সময় এসেছে।

জিআরআই দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক ড. অদিতি হালদার বলেন, জিআরআই থেকে আমরা বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের মতো অংশীদারের সাথে সহযোগিতা এবং কাজ করতে পেরে খুবই গর্বিত, যারা আমাদের সাথে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বাংলাদেশে টেকসই প্রতিবেদন তৈরিতে একটি মূলধারার অনুশীলন করার ব্যাপারে আমাদের সর্বত্র সহযোগিতা প্রদান করছে। আমরা প্রায় অনেকগুলি নীতির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রভাব তৈরি করেছি যেমন: ১৬৭টি দেশে ১৬৮টি নীতি, ২৫০টি বৃহত্তম কোম্পানির ৭৫ শতাংশ আমাদের জিআরআইর মান অনুসরণ করে।

অনুষ্ঠানটিতে আরও বক্তব্য প্রদান করেন পাওয়ারগ্রীড (ভারত) এর সাবেক প্রধান মহাব্যবস্থাপক ড. আর কে শ্রীভাস্তবা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিঃ এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ তৌহিদুল আলম খান, আদানি এন্টারপ্রাইজ লিঃ (ভারত) এর চীফ সাসটেইনিবিলিটি অফিসার পারভিন আনান্ত।

ঢাকা/টিএ