০১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্ব পুঁজিবাজারে থাকলেও বাংলাদেশ নেই ব্যবসা সফল ২২ কোম্পানি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫৯:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১
  • / ৪৯৯২ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশে ২২টি বহুজাতিক ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠান সফলতার সঙ্গে ব্যবসা করছে। ওই কোম্পানিগুলো বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে। তবে তারা দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয়। আর ২০১০ সালের পর কেবলমাত্র একটি বহুজাতিক কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) আয়োজিত ‘বিআইসিএম রিসার্চ সেমিনার-৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সেমিনারে গবেষণাপত্র উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানানো হয়। বিআইসিএম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিআইসিএম’র সহযোগী অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন।

ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) মহাসচিব মো. রিয়াদ মতিন।

বিআইসিএম’র পরিচালক (স্টাডিজ) ওয়াজিদ হাসান শাহ্ সেমিনারে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন।

সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়াতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সম্ভাব্য ভূমিকার বিষয়ে করণীয় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী প্রায় সকল বড় বহুজাতিক কোম্পানিকে বিবেচনায় নিয়ে দেখা যাচ্ছে, ২০১০ সালের পর রবি ব্যতিত আর কোনো বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়নি। অনেক বহুজাতিক কোম্পানি জনগণের কাছে সামান্য পরিমাণে শেয়ার ছেড়েছেন। কমপক্ষে ১১টি বহুজাতিক ব্যাংক এবং ১১টি বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সফলভাবে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। যারা কমপক্ষে একটি দেশে তালিকাভুক্ত কিন্তু বাংলাদেশে তালিকাভুক্ত নয়।

গবেষণায় শেয়ার বাজারের গভীরতা বাড়াতে- করের হার হ্রাস করা; কমানো করের পুনঃবিনিয়োগ নিশ্চিত করা; অতালিকাভূক্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যাংক লোনের সুদের হার দ্বিগুণ বা বৃদ্ধি করা; শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক কোম্পানি যেগুলো অন্য দেশে তালিকাভুক্ত কিন্তু বাংলাদেশে নয়, সেগুলো ও অন্য বহুজাতিক কোম্পানি এবং বাপেক্সককে তালিকাভুক্তি নিশ্চিত করা; পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি; জনগণের কাছে আরও বেশি শেয়ার ছাড়ার ব্যবস্থা করা; সুশাসন নিশ্চিত করা; দেশে নতুন আসা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভূক্তির শর্ত দেওয়া এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।

আলোচনায় মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান মার্কেটে বিদ্যমান বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর তালিকাভূক্তিতে অনীহার বড় কারণ রেগুলেটরি ব্যাপারে না জড়িয়ে অপেক্ষাকৃত স্বাধীন থাকার মনোভাব। এই সীমাবদ্ধতা দূরীকরণে বিভিন্ন সেমিনার বা ওয়ার্কশপ আয়োজন করা, আইনত বাধ্যবাধকতা এবং কর ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করা যেতে পারে।

রিয়াদ মতিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক নানা প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরে বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি মার্কেটে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করার জন্যে শুধু কর নীতিমালার ওপর ভরসা না করে অন্যান্য সুবিধাদির ব্যাপারেও জোর দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুবর্ণ বড়ুয়া মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দক্ষ মার্কেটিং টিম তৈরির মাধ্যমে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার বর্তমান বিএসইসি কমিশনের নেতৃত্বে ধারাবাহিকভাবে সকল বাধা দূর করে বেশি সংখ্যক বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভূক্তির মাধ্যমে পূঁজিবাজারের উন্নতির ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সেমিনারে বিআইসিএমের অনুষদ সদস্য, কর্মকর্তা এবং অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এইচকে

শেয়ার করুন

x
English Version

বিশ্ব পুঁজিবাজারে থাকলেও বাংলাদেশ নেই ব্যবসা সফল ২২ কোম্পানি

আপডেট: ১০:৫৯:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশে ২২টি বহুজাতিক ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠান সফলতার সঙ্গে ব্যবসা করছে। ওই কোম্পানিগুলো বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে। তবে তারা দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয়। আর ২০১০ সালের পর কেবলমাত্র একটি বহুজাতিক কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) আয়োজিত ‘বিআইসিএম রিসার্চ সেমিনার-৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সেমিনারে গবেষণাপত্র উপস্থাপনকালে এ তথ্য জানানো হয়। বিআইসিএম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিআইসিএম’র সহযোগী অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন।

ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) মহাসচিব মো. রিয়াদ মতিন।

বিআইসিএম’র পরিচালক (স্টাডিজ) ওয়াজিদ হাসান শাহ্ সেমিনারে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন।

সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়াতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সম্ভাব্য ভূমিকার বিষয়ে করণীয় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী প্রায় সকল বড় বহুজাতিক কোম্পানিকে বিবেচনায় নিয়ে দেখা যাচ্ছে, ২০১০ সালের পর রবি ব্যতিত আর কোনো বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়নি। অনেক বহুজাতিক কোম্পানি জনগণের কাছে সামান্য পরিমাণে শেয়ার ছেড়েছেন। কমপক্ষে ১১টি বহুজাতিক ব্যাংক এবং ১১টি বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সফলভাবে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। যারা কমপক্ষে একটি দেশে তালিকাভুক্ত কিন্তু বাংলাদেশে তালিকাভুক্ত নয়।

গবেষণায় শেয়ার বাজারের গভীরতা বাড়াতে- করের হার হ্রাস করা; কমানো করের পুনঃবিনিয়োগ নিশ্চিত করা; অতালিকাভূক্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যাংক লোনের সুদের হার দ্বিগুণ বা বৃদ্ধি করা; শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক কোম্পানি যেগুলো অন্য দেশে তালিকাভুক্ত কিন্তু বাংলাদেশে নয়, সেগুলো ও অন্য বহুজাতিক কোম্পানি এবং বাপেক্সককে তালিকাভুক্তি নিশ্চিত করা; পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি; জনগণের কাছে আরও বেশি শেয়ার ছাড়ার ব্যবস্থা করা; সুশাসন নিশ্চিত করা; দেশে নতুন আসা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভূক্তির শর্ত দেওয়া এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।

আলোচনায় মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান মার্কেটে বিদ্যমান বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর তালিকাভূক্তিতে অনীহার বড় কারণ রেগুলেটরি ব্যাপারে না জড়িয়ে অপেক্ষাকৃত স্বাধীন থাকার মনোভাব। এই সীমাবদ্ধতা দূরীকরণে বিভিন্ন সেমিনার বা ওয়ার্কশপ আয়োজন করা, আইনত বাধ্যবাধকতা এবং কর ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করা যেতে পারে।

রিয়াদ মতিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক নানা প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরে বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি মার্কেটে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করার জন্যে শুধু কর নীতিমালার ওপর ভরসা না করে অন্যান্য সুবিধাদির ব্যাপারেও জোর দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুবর্ণ বড়ুয়া মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দক্ষ মার্কেটিং টিম তৈরির মাধ্যমে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

ইনস্টিটিউটের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার বর্তমান বিএসইসি কমিশনের নেতৃত্বে ধারাবাহিকভাবে সকল বাধা দূর করে বেশি সংখ্যক বহুজাতিক কোম্পানির তালিকাভূক্তির মাধ্যমে পূঁজিবাজারের উন্নতির ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সেমিনারে বিআইসিএমের অনুষদ সদস্য, কর্মকর্তা এবং অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এইচকে