০৮:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ব্যাংক থেকে ঋণ কমলেও, বাড়ছে সঞ্চয়পত্রে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:১৫:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মে ২০২১
  • / ৪১৫৪ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক দুই উপায়ে ঋণ নেয় সরকার। তবে বর্তমানে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ কমলেও বেড়েছে সঞ্চয়পত্রে। সংশ্লিষ্ট সূূূূত্রে এ  তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়, তা থেকে দুই থেকে তিন গুণ বেশি নেয়া হয়। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেয়ার লক্ষ্য প্রাক্কলন করে ২০ হাজার কোটি টাকা।

অথচ, আলোচ্য অর্থবছরের পাঁচ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ নেয়া হয়। রাজস্ব আদায় কমে হওয়ায় ঋণ বেশি নিতে হচ্ছে বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এর ফলে মাত্রাতিরিক্ত সুদ গুণতে হচ্ছে সরকারকে। সাধারণত সঞ্চয়পত্রে সুদহার ব্যাংক ঋণের চেয়ে বেশি।

তবে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার প্রবণতা কিছুটা কমলেও আগের ঋণ পরিশোধ করায় বর্তমানে এ খাতে পুঞ্জিভূত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যার বিপরীতে নিয়মিত সুদ দিতে হচ্ছে সরকারকে।

প্রসঙ্গত, গত অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৭২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার।

এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ বাড়ছে। করোনাকালে গত অর্থবছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন বা ৮০০ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ পাওয়া গেছে, যা এযাবত কালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আগে সরকার গড়ে বছরে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেত। সরকার আশা করছে, এবার ৯ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ পাওয়া যাবে।

বিদেশি ঋণের সুদ হার নমনীয় হওয়ায় এটি বেশি করে সংগ্রহের পরামর্শ দেন অর্থনীতিবিদরা। যে পরিমাণ ঋণ জমেছে তার বিপরীতে বছরে গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি ডলার সুদ পরিশোধ করতে হয় সরকারকে। তবে একথাও সত্যি বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বেড়েছে। এ কারণে ঋণের পরিমাণও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দেশীয় উৎস থেকে নেয়া ঋণের সুদের হার অনেক বেশি – গড়ে ১১ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ। আর বিদেশি ঋণের জন্য মাত্র ১ থেকে দেড় শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়। অর্থাৎ দেশীয় ঋণের খরচ অনেক বেশি। এ কারণেই সুদ অনেক বেড়ে যায়।’

ইআরডি সূত্রে জানা যায়, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ। দেশের ক্রেডিট রেটিংও ভালো।

আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস, মুডিস এবং ফিচ রেটিংসের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো, যাকে স্থিতিশীল ইকোনমি হিসেবে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাগুলো। কোনো দেশকে ঋণ দেওয়া কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ, তারই মূল্যায়ন ক্রেডিট রেটিং।

ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি ঋণ একদিকে বাড়ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও কয়েক গুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ কখনও খেলাপি হয় নি। ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে উন্নয়ন সহযোগীরা ঋণ দিতে আগ্রহী।

ঢাকা/এমআর

শেয়ার করুন

x
English Version

ব্যাংক থেকে ঋণ কমলেও, বাড়ছে সঞ্চয়পত্রে

আপডেট: ১০:১৫:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মে ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক দুই উপায়ে ঋণ নেয় সরকার। তবে বর্তমানে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ কমলেও বেড়েছে সঞ্চয়পত্রে। সংশ্লিষ্ট সূূূূত্রে এ  তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়, তা থেকে দুই থেকে তিন গুণ বেশি নেয়া হয়। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেয়ার লক্ষ্য প্রাক্কলন করে ২০ হাজার কোটি টাকা।

অথচ, আলোচ্য অর্থবছরের পাঁচ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ নেয়া হয়। রাজস্ব আদায় কমে হওয়ায় ঋণ বেশি নিতে হচ্ছে বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এর ফলে মাত্রাতিরিক্ত সুদ গুণতে হচ্ছে সরকারকে। সাধারণত সঞ্চয়পত্রে সুদহার ব্যাংক ঋণের চেয়ে বেশি।

তবে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার প্রবণতা কিছুটা কমলেও আগের ঋণ পরিশোধ করায় বর্তমানে এ খাতে পুঞ্জিভূত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যার বিপরীতে নিয়মিত সুদ দিতে হচ্ছে সরকারকে।

প্রসঙ্গত, গত অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৭২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার।

এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ বাড়ছে। করোনাকালে গত অর্থবছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন বা ৮০০ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ পাওয়া গেছে, যা এযাবত কালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আগে সরকার গড়ে বছরে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেত। সরকার আশা করছে, এবার ৯ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ পাওয়া যাবে।

বিদেশি ঋণের সুদ হার নমনীয় হওয়ায় এটি বেশি করে সংগ্রহের পরামর্শ দেন অর্থনীতিবিদরা। যে পরিমাণ ঋণ জমেছে তার বিপরীতে বছরে গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি ডলার সুদ পরিশোধ করতে হয় সরকারকে। তবে একথাও সত্যি বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বেড়েছে। এ কারণে ঋণের পরিমাণও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দেশীয় উৎস থেকে নেয়া ঋণের সুদের হার অনেক বেশি – গড়ে ১১ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ। আর বিদেশি ঋণের জন্য মাত্র ১ থেকে দেড় শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়। অর্থাৎ দেশীয় ঋণের খরচ অনেক বেশি। এ কারণেই সুদ অনেক বেড়ে যায়।’

ইআরডি সূত্রে জানা যায়, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ। দেশের ক্রেডিট রেটিংও ভালো।

আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস, মুডিস এবং ফিচ রেটিংসের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো, যাকে স্থিতিশীল ইকোনমি হিসেবে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাগুলো। কোনো দেশকে ঋণ দেওয়া কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ, তারই মূল্যায়ন ক্রেডিট রেটিং।

ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি ঋণ একদিকে বাড়ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও কয়েক গুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ কখনও খেলাপি হয় নি। ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে উন্নয়ন সহযোগীরা ঋণ দিতে আগ্রহী।

ঢাকা/এমআর