০১:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

শীতকালে ব্যথা প্রতিরোধে যা করবেন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:৩২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৫৯ বার দেখা হয়েছে

বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতেই দরজায় কড়া নাড়ছে শীতের আমেজ। ঘাসের ডগায় জমছে শিশির বিন্দু, পায়ের স্পর্শে অনুভূত হচ্ছে ঠাণ্ডা। শীতে বাড়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা। যারা দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের অনেকে শীতকালের শুরুতেই ভীত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যান। কারণ শীতকালে তাদের ব্যথার সমস্যাটি গভীর হয় এবং কষ্ট বেড়ে যায়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শীতকালে অনেকের হাত, পা, কোমর ও ঘাড় ব্যথায় আক্রান্ত হয়। মূলত যাদের বয়স বেশি, তারা এ ধরণের ব্যথায় ভোগেন, অন্যান্য বয়সের মানুষেরও এ ধরনের ব্যথা থাকতে পারে। বিশেষ করে যাদের হাড়-ক্ষয় রয়েছে কিংবা আগে থেকেই আঘাতপ্রাপ্ত, তাদের শীতের শুরুতেই অনেক বেশি সচেতন হয়ে যাওয়া উচিত।

এ ধরনের রোগের উপসর্গ, কারণ ও প্রতিকার নিয়ে এক স্বাস্থ্য-বিষয়ক অনুষ্ঠানে কথা বলেছেনে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অর্থোপেডিকস, হ্যান্ড অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ।

শীতকালে হাত-পায়ে ব্যথার কারণ ও প্রতিরোধের করণীয় নিয়ে ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ বলেন, শীতে শরীরে জড়তা বেশি থাকে। গরমে আবার শরীর অনেক বেশি রিলাক্স বা ফ্লেক্সিবল থাকে। পাশাপাশি শীতে বাতাসের চাপ কমে যায়, অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। শীতকালে নিশ্বাসের সঙ্গে অল্প পরিমাণ অক্সিজেন পাওয়া যায়, যাতে শরীর আরও বেশি স্থবির হয়ে পড়ে। এ কারণে শীতে হাত ও পায়ের দিকে রক্তসঞ্চালন কমে যায়। ফলে জয়েন্টগুলোয় প্রদাহ বেড়ে ব্যথা হয়। এ ছাড়া ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য অনেক সময় জয়েন্ট ও মাংসপেশী শক্ত হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ বলেন, শীতকালে শরীরে অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিন-ডি এর পরিমাণ কমে যায়। কারণ হিসেবে তিনি জানান, এ সময় দিন ছোট, আবার সকাল ১০টার পর যে রোদ হয়, তা শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করে না। যার অভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড় ও জয়েন্টের সমস্যা সৃষ্টি করে। এ ছাড়া যারা অবেসিটিতে ভুগছেন, শীত শুরুতে তাদের এ ধরনের ব্যথাও বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, ভিটামিন-ডি’র অভাব শুধু হাড়ের ব্যথা বাড়ায় না, এটি বর্তমানে করোনা প্রতিরোধেও কার্যকর। আমরা দেখেছি, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি, সি, ইর অভাব, তাদের করোনা আক্রমণ করলে ক্ষতিটা বেশি হয়।

শীতে হাত, পা বা গাঁটের ব্যথা থেকে মুক্তির বিষয়ে ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ বলেন, ব্যথার জায়গাগুলোয় দিনে অন্তত দুবার গরম সেঁক দিলে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। যথেষ্ট গরম কাপড় পরে শীত থেকে হাড় ও জয়েন্টকে রক্ষা করতে হবে। হালকা ব্যায়াম এই ব্যথা উপশমে বেশ কার্যকর। বাইরে যাওয়া সম্ভব না হলে ঘরেই ব্যায়াম করতে হবে। যাদের আগে থেকেই এ ব্যথা আছে, তাদের শীতকালে কঠোর ব্যায়াম না করাই ভালো।

আরো পড়ুন: ইঁদুরের উৎপাত ঠেকাতে মাথার চুল ও রান্নার উপকরণের ব্যবহার

শীতকালে উপযুক্ত খাবার খেলে আরথ্রাইটিস বা বাত ব্যথার তীব্রতা কমে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য সতেজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া উচিত। গাজর, শসা, মুলা ইত্যাদি সবজি ব্যথা সৃষ্টিকারী পদার্থকে শরীর থেকে সহজেই বের করে দেয়। এ সময় রসুন বেশ উপকারী, এতে ব্যথা কমানোর উপকরণ রয়েছে। সকালে খালি পেটে রসুন খেলে রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জোড়ায় রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে বলে ব্যথা অনেকাংশে কম অনুভূত হয়। এ ছাড়া ব্যথা থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, এ এবং সি সেবন করতে হবে।

ঢাকা/কেএ

শেয়ার করুন

x
English Version

শীতকালে ব্যথা প্রতিরোধে যা করবেন

আপডেট: ০৩:৩২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতেই দরজায় কড়া নাড়ছে শীতের আমেজ। ঘাসের ডগায় জমছে শিশির বিন্দু, পায়ের স্পর্শে অনুভূত হচ্ছে ঠাণ্ডা। শীতে বাড়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা। যারা দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের অনেকে শীতকালের শুরুতেই ভীত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যান। কারণ শীতকালে তাদের ব্যথার সমস্যাটি গভীর হয় এবং কষ্ট বেড়ে যায়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শীতকালে অনেকের হাত, পা, কোমর ও ঘাড় ব্যথায় আক্রান্ত হয়। মূলত যাদের বয়স বেশি, তারা এ ধরণের ব্যথায় ভোগেন, অন্যান্য বয়সের মানুষেরও এ ধরনের ব্যথা থাকতে পারে। বিশেষ করে যাদের হাড়-ক্ষয় রয়েছে কিংবা আগে থেকেই আঘাতপ্রাপ্ত, তাদের শীতের শুরুতেই অনেক বেশি সচেতন হয়ে যাওয়া উচিত।

এ ধরনের রোগের উপসর্গ, কারণ ও প্রতিকার নিয়ে এক স্বাস্থ্য-বিষয়ক অনুষ্ঠানে কথা বলেছেনে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অর্থোপেডিকস, হ্যান্ড অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ।

শীতকালে হাত-পায়ে ব্যথার কারণ ও প্রতিরোধের করণীয় নিয়ে ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ বলেন, শীতে শরীরে জড়তা বেশি থাকে। গরমে আবার শরীর অনেক বেশি রিলাক্স বা ফ্লেক্সিবল থাকে। পাশাপাশি শীতে বাতাসের চাপ কমে যায়, অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। শীতকালে নিশ্বাসের সঙ্গে অল্প পরিমাণ অক্সিজেন পাওয়া যায়, যাতে শরীর আরও বেশি স্থবির হয়ে পড়ে। এ কারণে শীতে হাত ও পায়ের দিকে রক্তসঞ্চালন কমে যায়। ফলে জয়েন্টগুলোয় প্রদাহ বেড়ে ব্যথা হয়। এ ছাড়া ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য অনেক সময় জয়েন্ট ও মাংসপেশী শক্ত হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ বলেন, শীতকালে শরীরে অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিন-ডি এর পরিমাণ কমে যায়। কারণ হিসেবে তিনি জানান, এ সময় দিন ছোট, আবার সকাল ১০টার পর যে রোদ হয়, তা শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করে না। যার অভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হাড় ও জয়েন্টের সমস্যা সৃষ্টি করে। এ ছাড়া যারা অবেসিটিতে ভুগছেন, শীত শুরুতে তাদের এ ধরনের ব্যথাও বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, ভিটামিন-ডি’র অভাব শুধু হাড়ের ব্যথা বাড়ায় না, এটি বর্তমানে করোনা প্রতিরোধেও কার্যকর। আমরা দেখেছি, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি, সি, ইর অভাব, তাদের করোনা আক্রমণ করলে ক্ষতিটা বেশি হয়।

শীতে হাত, পা বা গাঁটের ব্যথা থেকে মুক্তির বিষয়ে ডা. কৃষ্ণ প্রিয় দাশ বলেন, ব্যথার জায়গাগুলোয় দিনে অন্তত দুবার গরম সেঁক দিলে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। যথেষ্ট গরম কাপড় পরে শীত থেকে হাড় ও জয়েন্টকে রক্ষা করতে হবে। হালকা ব্যায়াম এই ব্যথা উপশমে বেশ কার্যকর। বাইরে যাওয়া সম্ভব না হলে ঘরেই ব্যায়াম করতে হবে। যাদের আগে থেকেই এ ব্যথা আছে, তাদের শীতকালে কঠোর ব্যায়াম না করাই ভালো।

আরো পড়ুন: ইঁদুরের উৎপাত ঠেকাতে মাথার চুল ও রান্নার উপকরণের ব্যবহার

শীতকালে উপযুক্ত খাবার খেলে আরথ্রাইটিস বা বাত ব্যথার তীব্রতা কমে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য সতেজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া উচিত। গাজর, শসা, মুলা ইত্যাদি সবজি ব্যথা সৃষ্টিকারী পদার্থকে শরীর থেকে সহজেই বের করে দেয়। এ সময় রসুন বেশ উপকারী, এতে ব্যথা কমানোর উপকরণ রয়েছে। সকালে খালি পেটে রসুন খেলে রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জোড়ায় রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে বলে ব্যথা অনেকাংশে কম অনুভূত হয়। এ ছাড়া ব্যথা থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, এ এবং সি সেবন করতে হবে।

ঢাকা/কেএ