১২:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

সাত ব্যাংকের ঋণমান কমিয়েছে মুডিস

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৫৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩
  • / ৪২০৫ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দেওয়ার এক দিন পর দেশের বেসরকারি খাতের সাত ব্যাংকের ঋণমান বা রেটিং কমিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস। ব্যাংকগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ণ ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক।

এর মধ্যে মার্কেন্টাইল ছাড়া অন্য ছয় ব্যাংকের ‘দীর্ঘমেয়াদি ডিপোজিট’ ও ‘ইস্যুয়ার রেটিং’ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩১ মে) এক বিবৃতিতে মুডিস ব্যাংকগুলোর ঋণমান কমানোর ঘোষণা দেয়। গত ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডিস।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউভ

বিবৃতিতে মুডিস জানিয়েছে, সাত ব্যাংকের মধ্যে এনসিসি ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের রেটিং বি-৩ থেকে বি-২ করা হয়েছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি আমানত ও ইস্যুয়ার রেটিং বি-৩ থেকে বি-২ করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ মে) মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর বিষয়ে বলেছে, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি রয়েছে। একই সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ কারণে মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ-৩ থেকে বিএ-১ এ নামিয়েছে।

মুডি’স যেসব ব্যাংকের রেটিং কমিয়েছে তার অন্যতম বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যখন একটি দেশের রেটিং খারাপ হয়, তখন সেই দেশের ভালো প্রতিষ্ঠানেরও রেটিং খারাপ হয়। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের রেটিং খারাপ হওয়ার কারণে ব্র্যাক ব্যাংকের রেটিংয়ে অবনমন হয়েছে।

ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরাও বলছেন, ডলার সংকটের কারণে দেশের ব্যাংকগুলো অনেক আগে থেকেই আমদানির এলসি দায় পরিশোধের চাপে আছে।

এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন জানান, কোনও দেশের ঋণমান কমিয়ে দিলে সেই দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণমানেও তার প্রভাব পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় বেসরকারি সাত ব্যাংকের ঋণমান কমানো হয়েছে।

কেউ কেউ বলছেন মুডি’স কর্তৃক দেশের ঋণমান কমিয়ে দেওয়ার প্রভাবে এলসি কমিশন ও ফি বেড়ে যাবে। বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের সুদহারও বাড়বে। এতদিন সুদহার ও কমিশন কমানোর জন্য যে দরকষাকষির সুযোগ ছিল, সেটিও কমে যাবে। এখন বিদেশি ব্যাংকগুলো এলসি ও বিদেশি ঋণের মেয়াদ বাড়াতে চাইবে না।

এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের ঋণমান ভালো হলে এলসির কমিশন ও ফি কম হয়। স্বল্প সুদে বিদেশি ঋণ আনা যায়। বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে দরকষাকষি করার সুযোগ থাকে। কিন্তু দেশের ঋণমান অবনমন করে দেওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এখন হয়তো এলসি কমিশন ও ফি বেড়ে যাবে। বিদেশি ঋণ নবায়ন করা কঠিন হবে। নবায়নের সময় সুদহারও বেড়ে যেতে পারে।

এর আগে গত ডিসেম্বরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের মান কমিয়ে দেয় মুডিস। তখন এক বার্তায় তারা জানিয়েছিল, এসআইবিএলের বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের মান বি-৩ থেকে নামিয়ে বি-২ করা হয়েছে এবং ব্যাংকটির বেসলাইন ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট (বিসিএ) বি-৩ থেকে নামিয়ে সিএএ-১ করা হয়। একই সঙ্গে এসআইবিএলের ঋণমানের পূর্বাভাসও পরিবর্তন করে। তখনই সাত ব্যাংকের ঋণমান পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডিস।

আরও পড়ুন: বাজেট পেশ করতে সংসদে অর্থমন্ত্রী

এদিকে বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দেওয়ার পরদিনই এর বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে বুধবার (৩১ মে) আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে ঋণসীমা বা ক্রেডিট লাইন স্থগিত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) আবুধাবি ইসলামিক ব্যাংক (এডিআইবি)। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের অন্তত ২০টি ব্যাংকের সঙ্গে ইউএইর বৃহৎ এ ব্যাংকটির ক্রেডিট লাইন রয়েছে। আবুধাবি ইসলামিক ব্যাংকের মতো বিশ্বের অন্য বৃহৎ ব্যাংকগুলোও বাংলাদেশে নিজেদের ঋণসীমা পুনর্বিবেচনার কথা জানাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ-সংক্রান্ত চিঠি প্রাপ্তির আশঙ্কা করছেন দেশের ব্যাংক নির্বাহীরা।

সাধারণত, বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পাদন ও দেশের ব্যবসায়ীদের বিদেশি মুদ্রায় ঋণ দেওয়ার জন্য বিদেশি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণসীমা নেওয়া হয়। এ ঋণসীমা ব্যবহার করেই আমদানি-রফতানি ঋণপত্রের (এলসি) নিশ্চয়তা দেয় দেশের ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি এর আওতায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি তহবিল এনে দেশের ব্যবসায়ীদের বিদেশি মুদ্রায়ও ঋণ দেওয়া হয়েছে।

দেশের বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি সবচেয়ে বেশি বিদেশি ঋণ এসেছে সিঙ্গাপুর থেকে। দেশটির বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ এসেছে ৩১২ কোটি ৫২ লাখ ডলার। দ্বিতীয় স্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিরও ২৩২ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের ঋণ দেশের বেসরকারি খাতে রয়েছে। বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি ঋণের উৎস অন্য দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ১০০ কোটি ২৯ লাখ, হংকং থেকে ৯২ কোটি ৫৬ লাখ, চীন থেকে ৮২ কোটি ৩৮ লাখ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৬৯ কোটি ৯৪ লাখ, ভারত থেকে ৬৫ কোটি ৬০ লাখ ও জার্মানি থেকে ৫৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার ঋণ এসেছে।

সব মিলিয়ে চলতি বছরের মার্চ শেষে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০৮ কোটি ডলার। তবে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি মিলিয়ে বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

সাত ব্যাংকের ঋণমান কমিয়েছে মুডিস

আপডেট: ১২:৫৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩

বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দেওয়ার এক দিন পর দেশের বেসরকারি খাতের সাত ব্যাংকের ঋণমান বা রেটিং কমিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস। ব্যাংকগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ণ ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক।

এর মধ্যে মার্কেন্টাইল ছাড়া অন্য ছয় ব্যাংকের ‘দীর্ঘমেয়াদি ডিপোজিট’ ও ‘ইস্যুয়ার রেটিং’ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩১ মে) এক বিবৃতিতে মুডিস ব্যাংকগুলোর ঋণমান কমানোর ঘোষণা দেয়। গত ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডিস।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউভ

বিবৃতিতে মুডিস জানিয়েছে, সাত ব্যাংকের মধ্যে এনসিসি ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের রেটিং বি-৩ থেকে বি-২ করা হয়েছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি আমানত ও ইস্যুয়ার রেটিং বি-৩ থেকে বি-২ করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ মে) মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর বিষয়ে বলেছে, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি রয়েছে। একই সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ কারণে মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ-৩ থেকে বিএ-১ এ নামিয়েছে।

মুডি’স যেসব ব্যাংকের রেটিং কমিয়েছে তার অন্যতম বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যখন একটি দেশের রেটিং খারাপ হয়, তখন সেই দেশের ভালো প্রতিষ্ঠানেরও রেটিং খারাপ হয়। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের রেটিং খারাপ হওয়ার কারণে ব্র্যাক ব্যাংকের রেটিংয়ে অবনমন হয়েছে।

ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরাও বলছেন, ডলার সংকটের কারণে দেশের ব্যাংকগুলো অনেক আগে থেকেই আমদানির এলসি দায় পরিশোধের চাপে আছে।

এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন জানান, কোনও দেশের ঋণমান কমিয়ে দিলে সেই দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণমানেও তার প্রভাব পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় বেসরকারি সাত ব্যাংকের ঋণমান কমানো হয়েছে।

কেউ কেউ বলছেন মুডি’স কর্তৃক দেশের ঋণমান কমিয়ে দেওয়ার প্রভাবে এলসি কমিশন ও ফি বেড়ে যাবে। বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের সুদহারও বাড়বে। এতদিন সুদহার ও কমিশন কমানোর জন্য যে দরকষাকষির সুযোগ ছিল, সেটিও কমে যাবে। এখন বিদেশি ব্যাংকগুলো এলসি ও বিদেশি ঋণের মেয়াদ বাড়াতে চাইবে না।

এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের ঋণমান ভালো হলে এলসির কমিশন ও ফি কম হয়। স্বল্প সুদে বিদেশি ঋণ আনা যায়। বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে দরকষাকষি করার সুযোগ থাকে। কিন্তু দেশের ঋণমান অবনমন করে দেওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এখন হয়তো এলসি কমিশন ও ফি বেড়ে যাবে। বিদেশি ঋণ নবায়ন করা কঠিন হবে। নবায়নের সময় সুদহারও বেড়ে যেতে পারে।

এর আগে গত ডিসেম্বরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের মান কমিয়ে দেয় মুডিস। তখন এক বার্তায় তারা জানিয়েছিল, এসআইবিএলের বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের মান বি-৩ থেকে নামিয়ে বি-২ করা হয়েছে এবং ব্যাংকটির বেসলাইন ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট (বিসিএ) বি-৩ থেকে নামিয়ে সিএএ-১ করা হয়। একই সঙ্গে এসআইবিএলের ঋণমানের পূর্বাভাসও পরিবর্তন করে। তখনই সাত ব্যাংকের ঋণমান পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডিস।

আরও পড়ুন: বাজেট পেশ করতে সংসদে অর্থমন্ত্রী

এদিকে বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দেওয়ার পরদিনই এর বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে বুধবার (৩১ মে) আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে ঋণসীমা বা ক্রেডিট লাইন স্থগিত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) আবুধাবি ইসলামিক ব্যাংক (এডিআইবি)। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের অন্তত ২০টি ব্যাংকের সঙ্গে ইউএইর বৃহৎ এ ব্যাংকটির ক্রেডিট লাইন রয়েছে। আবুধাবি ইসলামিক ব্যাংকের মতো বিশ্বের অন্য বৃহৎ ব্যাংকগুলোও বাংলাদেশে নিজেদের ঋণসীমা পুনর্বিবেচনার কথা জানাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ-সংক্রান্ত চিঠি প্রাপ্তির আশঙ্কা করছেন দেশের ব্যাংক নির্বাহীরা।

সাধারণত, বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পাদন ও দেশের ব্যবসায়ীদের বিদেশি মুদ্রায় ঋণ দেওয়ার জন্য বিদেশি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণসীমা নেওয়া হয়। এ ঋণসীমা ব্যবহার করেই আমদানি-রফতানি ঋণপত্রের (এলসি) নিশ্চয়তা দেয় দেশের ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি এর আওতায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি তহবিল এনে দেশের ব্যবসায়ীদের বিদেশি মুদ্রায়ও ঋণ দেওয়া হয়েছে।

দেশের বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি সবচেয়ে বেশি বিদেশি ঋণ এসেছে সিঙ্গাপুর থেকে। দেশটির বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ এসেছে ৩১২ কোটি ৫২ লাখ ডলার। দ্বিতীয় স্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিরও ২৩২ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের ঋণ দেশের বেসরকারি খাতে রয়েছে। বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি ঋণের উৎস অন্য দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ১০০ কোটি ২৯ লাখ, হংকং থেকে ৯২ কোটি ৫৬ লাখ, চীন থেকে ৮২ কোটি ৩৮ লাখ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৬৯ কোটি ৯৪ লাখ, ভারত থেকে ৬৫ কোটি ৬০ লাখ ও জার্মানি থেকে ৫৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার ঋণ এসেছে।

সব মিলিয়ে চলতি বছরের মার্চ শেষে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০৮ কোটি ডলার। তবে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি মিলিয়ে বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার।

ঢাকা/এসএ