১০:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

হেফাজতে ইসলামের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৫২:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১৬৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। আজ রোববার রাত ১১টায় এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতের কার্যক্রম শুরু হবে।

গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ–সহিংসতার পর হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ১৯ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ–সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৬৯ হাজারের বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় প্রতিদিনই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের নেতা–কর্মী ও সমর্থকরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দিলেন বাবুনগরী।

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির একাংশের সঙ্গে বিরোধের মধ্যে গত বছরের ১৫ নভেম্বর এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। জুনায়েদ বাবুনগরী নেতৃত্বাধীন কমিটিতে শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী এবং তাঁর অনুসারী কাউকে রাখা হয়নি।

গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করে ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ–সহিংসতা করে আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম। কয়েক মাস আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় নেমেছিল সংগঠনটি। এরপর গত মাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এলে তাঁর সফরের বিরোধিতা করে তারা।

মোদির সফরের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়। এ সময় সংঘাত–সহিংসতায় সরকারি হিসেবে ১৭ জন নিহত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের অন্যান্য স্থানে ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এই ঘটনার রেশ যেতে না যেতেই গত ৩ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে দ্বিতীয় স্ত্রীসহ ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন। হেফাজতের নেতা–কর্মীরা সেখানে হামলা চালিয়ে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেন। মূলত এরপর থেকে হেফাজতের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা দৃশ্যমান হয়। ১১ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর হেফাজতের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তারের ধারাবাহিকতায় ১৮ এপ্রিল আলোচিত মামুনুল হককে ধরা হয়।

এর পরদিন রাতে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাসায় যান। তাঁরা অযথা কাউকে হয়রানি–গ্রেপ্তার না করার দাবি জানান। এ ছাড়া হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে নয় বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছিলেন হেফাজত নেতারা।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রোববার দুপুরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের হেফাজত সম্পর্কে বলেছেন, যতই আপসের চেষ্টা করা হোক না কেন, সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি পেতে হবে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

হেফাজতে ইসলামের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

আপডেট: ১১:৫২:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন সংগঠনের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। আজ রোববার রাত ১১টায় এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার পরামর্শে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতের কার্যক্রম শুরু হবে।

গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ–সহিংসতার পর হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ১৯ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ–সহিংসতার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৬৯ হাজারের বেশি জনকে আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলায় প্রতিদিনই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের নেতা–কর্মী ও সমর্থকরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দিলেন বাবুনগরী।

হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনটির একাংশের সঙ্গে বিরোধের মধ্যে গত বছরের ১৫ নভেম্বর এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। জুনায়েদ বাবুনগরী নেতৃত্বাধীন কমিটিতে শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী এবং তাঁর অনুসারী কাউকে রাখা হয়নি।

গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করে ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ–সহিংসতা করে আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম। কয়েক মাস আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় নেমেছিল সংগঠনটি। এরপর গত মাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এলে তাঁর সফরের বিরোধিতা করে তারা।

মোদির সফরের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়। এ সময় সংঘাত–সহিংসতায় সরকারি হিসেবে ১৭ জন নিহত হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের অন্যান্য স্থানে ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এই ঘটনার রেশ যেতে না যেতেই গত ৩ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে দ্বিতীয় স্ত্রীসহ ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন। হেফাজতের নেতা–কর্মীরা সেখানে হামলা চালিয়ে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেন। মূলত এরপর থেকে হেফাজতের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা দৃশ্যমান হয়। ১১ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর হেফাজতের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তারের ধারাবাহিকতায় ১৮ এপ্রিল আলোচিত মামুনুল হককে ধরা হয়।

এর পরদিন রাতে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাসায় যান। তাঁরা অযথা কাউকে হয়রানি–গ্রেপ্তার না করার দাবি জানান। এ ছাড়া হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে নয় বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছিলেন হেফাজত নেতারা।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রোববার দুপুরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের হেফাজত সম্পর্কে বলেছেন, যতই আপসের চেষ্টা করা হোক না কেন, সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি পেতে হবে।

ঢাকা/এসএ