১০:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

৩৫ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি ডেল্টা লাইফের, মামলা দায়ের

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:১৬:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৪৩ বার দেখা হয়েছে

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রায় ৩৫ দশমিক ১৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় আজ ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।

ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক জনাব সায়মা পারভীন এর নেতৃত্বে একটি দল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ২০১৩ সালের জানুয়ারি হতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত করে। ভ্যাট গোয়েন্দার দল তদন্তের স্বার্থে দলিলাদি দাখিলের জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে তলব করে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিলকৃত বার্ষিক সিএ রিপোর্ট, প্রতিবেদন, দাখিলপত্র (মূসক-১৯) এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমাকৃত ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিলাদি হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আড়াআড়ি যাচাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

এই প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য বিমার উপর ৪০ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৪১১ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। এতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৯ কোটি ৮০ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৯ টাকার ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ১১ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৮ টাকা সুদ হিসেবে প্রযোজ্য হবে।

তদন্ত অনুসারে নিরীক্ষা মেয়াদে সিএ ফার্মের রিপোর্ট মোতাবেক উৎসে ভ্যাট ৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৮০৩ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাট এর পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৩ লাখ ১৩ হাজার ২৪৯ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৫ হাজার ৪৪৬ টাকার ফাঁকি উৎঘাটিত হয়। উৎসে কর্তনের উপর প্রযোজ্য এই ফাঁকিকৃত ভ্যাটের উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার ১৬৯ টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য হবে।

অন্যদিকে, তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৮০ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ২০ লাখ ৫৫ হাজার ১০১ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৭৪ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকার ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপরও ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ২ কোটি ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮১ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য হবে।

বর্ণিত তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ১৬ কোটি ২৪ লাখ ২৭ হাজার ৯০৫ টাকা এবং সুদ বাবদ ১৮ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৮২৮ টাকাসহ ৩৫ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭৩৩ টাকা পরিহারের তথ্য উদঘাটিত হয়।

তদন্তে আরো দেখা যায় যে, প্রতিষ্ঠানটি সরকারের ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে নানা ধরণের জালিয়াতি ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, যা ভ্যাট আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে উদ্ঘাটিত পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরে প্রেরণ করা হবে।

শেয়ার করুন

x
English Version

৩৫ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি ডেল্টা লাইফের, মামলা দায়ের

আপডেট: ০৫:১৬:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রায় ৩৫ দশমিক ১৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় আজ ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।

ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক জনাব সায়মা পারভীন এর নেতৃত্বে একটি দল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ২০১৩ সালের জানুয়ারি হতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত করে। ভ্যাট গোয়েন্দার দল তদন্তের স্বার্থে দলিলাদি দাখিলের জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে তলব করে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিলকৃত বার্ষিক সিএ রিপোর্ট, প্রতিবেদন, দাখিলপত্র (মূসক-১৯) এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমাকৃত ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিলাদি হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আড়াআড়ি যাচাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

এই প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য বিমার উপর ৪০ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৪১১ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। এতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৯ কোটি ৮০ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৯ টাকার ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ১১ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৮ টাকা সুদ হিসেবে প্রযোজ্য হবে।

তদন্ত অনুসারে নিরীক্ষা মেয়াদে সিএ ফার্মের রিপোর্ট মোতাবেক উৎসে ভ্যাট ৬ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৮০৩ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাট এর পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৩ লাখ ১৩ হাজার ২৪৯ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৫ হাজার ৪৪৬ টাকার ফাঁকি উৎঘাটিত হয়। উৎসে কর্তনের উপর প্রযোজ্য এই ফাঁকিকৃত ভ্যাটের উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার ১৬৯ টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য হবে।

অন্যদিকে, তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে ১ কোটি ৪৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৮০ টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ২০ লাখ ৫৫ হাজার ১০১ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৭৪ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকার ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির উপরও ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ২ কোটি ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮১ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য হবে।

বর্ণিত তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ১৬ কোটি ২৪ লাখ ২৭ হাজার ৯০৫ টাকা এবং সুদ বাবদ ১৮ কোটি ৯২ লাখ ৬২ হাজার ৮২৮ টাকাসহ ৩৫ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭৩৩ টাকা পরিহারের তথ্য উদঘাটিত হয়।

তদন্তে আরো দেখা যায় যে, প্রতিষ্ঠানটি সরকারের ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে নানা ধরণের জালিয়াতি ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, যা ভ্যাট আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে উদ্ঘাটিত পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরে প্রেরণ করা হবে।