০৮:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করলে সিঙ্গাপুর যেতে হবে না: প্রধান উপদেষ্টা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:২৬:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১০২১৭ বার দেখা হয়েছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে আমাদের যে বিপুল সম্পদ রয়েছে, তা আমরা কখনোই সঠিকভাবে ব্যবহার করিনি। আমরা যদি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করতে পারি, তাহলে আমাদের আর সিঙ্গাপুর যেতে হবে না।

গতকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদে স্বাক্ষর শেষে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে সম্পদ আছে, সেটি আমরা এতদিন ব্যবহার করতে পারিনি। আমি বারবার উল্লেখ করেছি, বঙ্গোপসাগরে আমাদের যে অংশ রয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশেরই অংশ। কিন্তু আমরা কখনো খেয়াল করিনি, এই অংশে আমরা কী করছি। অথচ এটি অত্যন্ত সম্পদশালী একটি অঞ্চল।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা বলছি, এখন সময় এসেছে এই সম্পদকে পূর্ণভাবে ব্যবহার করার। আমরা এগিয়ে যেতে চাই, আমরা আর তর্ক-বিতর্কের মধ্যে থাকতে চাই না। আজকের এই সনদের মাধ্যমে সেই তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটবে। আমরা নিয়ম মতো চলে যাব। আমরা এখন নিয়মমাফিক চলার জন্য প্রস্তুত হয়েছি। আজকে যে স্বাক্ষর হলো, বহু আলোচনার মধ্য দিয়ে; এটি আমাদের পথ দেখিয়ে দেবে। সেই পথেই আমরা এগিয়ে যাব, সমুদ্রে যে সম্পদ আছে আমরা তা ব্যবহার করতে পারব।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমি বারবার বলছি- আমরা যদি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করতে পারি, তাহলে সারা বিশ্বের জাহাজ আমাদের বন্দরে ভিড়বে। আমাদের পণ্য সিঙ্গাপুরে খালাস করে আবার দেশে আনতে হবে না। অন্যান্য দেশের পণ্যও সিঙ্গাপুরে খালাস করে ঘুরিয়ে আনতে হবে না; তারা সরাসরি আমাদের বন্দরে নিয়ে আসতে পারবে। আমরা অন্য দেশগুলোকেও আমাদের বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিতে পারব। এখান থেকে তারাও তাদের মালামাল খালাস করতে পারবে। কাজেই এটি আমাদের জন্য এক বিশাল সুযোগ।

তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরের মাছেরও রয়েছে এক বিশাল ভান্ডার। কিন্তু অন্য দেশের মাঝিরা এসে আমাদের সাগর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখি, কিছুই করতে পারি না। আমাদের সম্পদ তারা নিয়ে যায়, অথচ আমরা নিজেরা তা আহরণ করতে পারি না। এখান থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে। বঙ্গোপসাগর ও এর উপকূলীয় অঞ্চলকে কেন্দ্র করে আমরা পুরো বাংলাদেশকে বদলে দিতে পারি। যদি আমাদের পরিকল্পনায় মাতারবাড়ি, কক্সবাজার ও মহেশখালীকে একযোগে আধুনিকভাবে উন্নত করা যায়, তাহলে পুরো এলাকা নতুন সিঙ্গাপুরে পরিণত হবে। তখন আর কাউকে বাইরে যেতে হবে না, বরং সব দেশের মানুষ এখানে আসবে। আমরা এই অঞ্চলকে ঘিরে একটি আঞ্চলিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারব।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা নেপাল, ভুটান এবং ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি; শুধু এই বন্দরকে কেন্দ্র করে, এই যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেই। এতে তারা যেমন সমৃদ্ধ হবে, আমরাও সমৃদ্ধ হব। কাজেই আমাদের সামনে বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করলে সিঙ্গাপুর যেতে হবে না: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট: ১০:২৬:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে আমাদের যে বিপুল সম্পদ রয়েছে, তা আমরা কখনোই সঠিকভাবে ব্যবহার করিনি। আমরা যদি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করতে পারি, তাহলে আমাদের আর সিঙ্গাপুর যেতে হবে না।

গতকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদে স্বাক্ষর শেষে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে সম্পদ আছে, সেটি আমরা এতদিন ব্যবহার করতে পারিনি। আমি বারবার উল্লেখ করেছি, বঙ্গোপসাগরে আমাদের যে অংশ রয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশেরই অংশ। কিন্তু আমরা কখনো খেয়াল করিনি, এই অংশে আমরা কী করছি। অথচ এটি অত্যন্ত সম্পদশালী একটি অঞ্চল।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা বলছি, এখন সময় এসেছে এই সম্পদকে পূর্ণভাবে ব্যবহার করার। আমরা এগিয়ে যেতে চাই, আমরা আর তর্ক-বিতর্কের মধ্যে থাকতে চাই না। আজকের এই সনদের মাধ্যমে সেই তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটবে। আমরা নিয়ম মতো চলে যাব। আমরা এখন নিয়মমাফিক চলার জন্য প্রস্তুত হয়েছি। আজকে যে স্বাক্ষর হলো, বহু আলোচনার মধ্য দিয়ে; এটি আমাদের পথ দেখিয়ে দেবে। সেই পথেই আমরা এগিয়ে যাব, সমুদ্রে যে সম্পদ আছে আমরা তা ব্যবহার করতে পারব।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমি বারবার বলছি- আমরা যদি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করতে পারি, তাহলে সারা বিশ্বের জাহাজ আমাদের বন্দরে ভিড়বে। আমাদের পণ্য সিঙ্গাপুরে খালাস করে আবার দেশে আনতে হবে না। অন্যান্য দেশের পণ্যও সিঙ্গাপুরে খালাস করে ঘুরিয়ে আনতে হবে না; তারা সরাসরি আমাদের বন্দরে নিয়ে আসতে পারবে। আমরা অন্য দেশগুলোকেও আমাদের বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিতে পারব। এখান থেকে তারাও তাদের মালামাল খালাস করতে পারবে। কাজেই এটি আমাদের জন্য এক বিশাল সুযোগ।

তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরের মাছেরও রয়েছে এক বিশাল ভান্ডার। কিন্তু অন্য দেশের মাঝিরা এসে আমাদের সাগর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখি, কিছুই করতে পারি না। আমাদের সম্পদ তারা নিয়ে যায়, অথচ আমরা নিজেরা তা আহরণ করতে পারি না। এখান থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে। বঙ্গোপসাগর ও এর উপকূলীয় অঞ্চলকে কেন্দ্র করে আমরা পুরো বাংলাদেশকে বদলে দিতে পারি। যদি আমাদের পরিকল্পনায় মাতারবাড়ি, কক্সবাজার ও মহেশখালীকে একযোগে আধুনিকভাবে উন্নত করা যায়, তাহলে পুরো এলাকা নতুন সিঙ্গাপুরে পরিণত হবে। তখন আর কাউকে বাইরে যেতে হবে না, বরং সব দেশের মানুষ এখানে আসবে। আমরা এই অঞ্চলকে ঘিরে একটি আঞ্চলিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারব।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা নেপাল, ভুটান এবং ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি; শুধু এই বন্দরকে কেন্দ্র করে, এই যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেই। এতে তারা যেমন সমৃদ্ধ হবে, আমরাও সমৃদ্ধ হব। কাজেই আমাদের সামনে বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ