০৬:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

অনিয়ম-দূর্নীতির শীর্ষে ১০ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৩৬:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ মে ২০১৮
  • / ৪৬১৯ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফআই) অনিয়ম-দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ খাতের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে ২৯টিই সমস্যাগ্রস্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ সময়ে গ্রিন জোন বা নিরাপদ স্থানে রয়েছে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০টি রেড জোন বা নাজুক পরিস্থিতিতে এবং ১৯টি ইয়েলো জোনে অবস্থান করছে।

এর আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শেষে ৩টি কোম্পানি গ্রীণ; ১৭টি ইয়েলো এবং ১৩টি কোম্পানি রেড জোনে ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট ৩১ ডিসেম্বর-২০১৭ এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি সহনশীল সক্ষমতা (স্ট্রেস টেস্টিং) মূল্যায়ন করে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

মূলত আর্থিক খাতের চারটি ঝুঁকি পর্যালোচনা করে প্রতিষ্ঠানগুলোর জোন নির্বাচন করা হয়। চারটি ঝুঁকি হলো: ঋণ; সুদের হার; তহবিল ব্যয় এবং তারল্য।

আর্থিকখাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক খাতে অস্থিরতা সত্ত্বেও ৩টি প্রাতিষ্ঠান রেড জোন থেকে বেরিয়ে এসেছে। যা ইতিবাচক। তবে এখনো ১০টি কোম্পানি রেড ও ১৯টি ইয়েলো জোনে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ নজরদারী প্রয়োজন।

আমানত ও ঋণের সুদহারের ব্যবধান বা স্প্রেড কমে যাওয়া, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়া, প্রত্যাশা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে না পারা এবং শেয়ারবাজারে দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণেই এনবিএফআই খাতে দুর্বলতা বেড়েছে। তবে গ্রিন জোনে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা ও আর্থিক সক্ষমতা দুটোই বাড়ছে।

প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ঝুঁকি সহনশিলের সক্ষমতার ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন ভাগে চিহ্নিত করা হয়। যারা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে তাদের রেড জোনে রাখা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকে। তবে গাহকের স্বার্থে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঝুঁকি কাটিয়ে উঠার জন্য তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট খেলাপি ঋণ হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। যা সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। দেখা যাচ্ছে তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৯.১০ শতাংশ।

৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে আর্থি প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ ও লিজ হিসেবে মোট ৬১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ৭.৩০ শতাংশ খেলাপি।

২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ইকুইটির বিপরীতে গড় আয় (আরওই) হয়েছে ১৫.২০ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শেষে আরওই ছিল ৪.৪০ শতাংশ। ইকুইটি থেকে আয় বেড়েছে। একইভাবে ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে সম্পদের বিপরীতে আয় (আরওএ) হয়েছে ২ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে আরওএ ছিল ০.৬০ শতাংশ।

৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ৪.৫০ শতাংশ হারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূলধন জমা (সিআরআর) প্রায় ৭০০ কোটি টাকা এবং ২.৩০ শতাংশ হারে সংবিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) ৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে তালিকাভুক্ত লিজিং কোম্পানিগুলোর গড় ডিভিডেন্ডের ঘোষণার পরিমান ১৫.৪৩ শতাংশ। যা আগের বছরও একই পরিমাণ ছিল। এ সময়ে ৩টি কোম্পানি কোন ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

শেয়ার করুন

x
English Version

অনিয়ম-দূর্নীতির শীর্ষে ১০ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

আপডেট: ০৬:৩৬:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ মে ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফআই) অনিয়ম-দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ খাতের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে ২৯টিই সমস্যাগ্রস্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ সময়ে গ্রিন জোন বা নিরাপদ স্থানে রয়েছে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০টি রেড জোন বা নাজুক পরিস্থিতিতে এবং ১৯টি ইয়েলো জোনে অবস্থান করছে।

এর আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শেষে ৩টি কোম্পানি গ্রীণ; ১৭টি ইয়েলো এবং ১৩টি কোম্পানি রেড জোনে ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট ৩১ ডিসেম্বর-২০১৭ এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি সহনশীল সক্ষমতা (স্ট্রেস টেস্টিং) মূল্যায়ন করে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

মূলত আর্থিক খাতের চারটি ঝুঁকি পর্যালোচনা করে প্রতিষ্ঠানগুলোর জোন নির্বাচন করা হয়। চারটি ঝুঁকি হলো: ঋণ; সুদের হার; তহবিল ব্যয় এবং তারল্য।

আর্থিকখাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক খাতে অস্থিরতা সত্ত্বেও ৩টি প্রাতিষ্ঠান রেড জোন থেকে বেরিয়ে এসেছে। যা ইতিবাচক। তবে এখনো ১০টি কোম্পানি রেড ও ১৯টি ইয়েলো জোনে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ নজরদারী প্রয়োজন।

আমানত ও ঋণের সুদহারের ব্যবধান বা স্প্রেড কমে যাওয়া, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়া, প্রত্যাশা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে না পারা এবং শেয়ারবাজারে দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণেই এনবিএফআই খাতে দুর্বলতা বেড়েছে। তবে গ্রিন জোনে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা ও আর্থিক সক্ষমতা দুটোই বাড়ছে।

প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ঝুঁকি সহনশিলের সক্ষমতার ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন ভাগে চিহ্নিত করা হয়। যারা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে তাদের রেড জোনে রাখা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকে। তবে গাহকের স্বার্থে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঝুঁকি কাটিয়ে উঠার জন্য তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট খেলাপি ঋণ হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। যা সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। দেখা যাচ্ছে তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৯.১০ শতাংশ।

৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে আর্থি প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ ও লিজ হিসেবে মোট ৬১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ৭.৩০ শতাংশ খেলাপি।

২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ইকুইটির বিপরীতে গড় আয় (আরওই) হয়েছে ১৫.২০ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শেষে আরওই ছিল ৪.৪০ শতাংশ। ইকুইটি থেকে আয় বেড়েছে। একইভাবে ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে সম্পদের বিপরীতে আয় (আরওএ) হয়েছে ২ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে আরওএ ছিল ০.৬০ শতাংশ।

৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ৪.৫০ শতাংশ হারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূলধন জমা (সিআরআর) প্রায় ৭০০ কোটি টাকা এবং ২.৩০ শতাংশ হারে সংবিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) ৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষে তালিকাভুক্ত লিজিং কোম্পানিগুলোর গড় ডিভিডেন্ডের ঘোষণার পরিমান ১৫.৪৩ শতাংশ। যা আগের বছরও একই পরিমাণ ছিল। এ সময়ে ৩টি কোম্পানি কোন ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হয়েছে।