০২:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঋণ পুনর্গঠনের বিশেষ সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংক

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:২১:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
  • / ১০৩৪২ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতাদের জন্য বিশেষ নীতি-সহায়তার সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো এখন নিজ নিজ বিবেচনায় ৫০ কোটি টাকার নিচের ঋণ পুনঃতপশিল বা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে ডাউনপেমেন্ট, মেয়াদসহ বিভিন্ন শর্তশিথিল করতে পারবে। শিগগির এ বিষয়ে একটি সমন্বিত সার্কুলার জারি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পুনর্গঠনের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে সে সময় কোনো নির্দিষ্ট নীতিগত কাঠামো নির্ধারণ করা হয়নি। পরবর্তীতে কমিটি পুনর্গঠিত হয় এবং এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা পড়েছে ১,২০০-রও বেশি আবেদন। কোনো কোনো কেসে ২৮টি পর্যন্ত ব্যাংক জড়িত রয়েছে। এত সংখ্যক আবেদন নিষ্পত্তি সময়সাপেক্ষ হওয়ায়, নতুন কমিটি ব্যাংকগুলোকেই পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে। কেবল জটিল কেসগুলোই বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে খেলাপি ঋণ মোকাবিলায় কঠোর অবস্থানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে ব্যাংকগুলো নানা পদ্ধতিতে খেলাপি ঋণ আড়াল করলেও এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে গত এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায়—মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ হঠাৎ ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতির পাশাপাশি লভ্যাংশ দিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন থেকে কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ যদি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, সে ব্যাংক মুনাফা করলেও লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত কঠোর হলেও, ব্যবসা খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য নির্ধারিত নীতিমালার আওতায় ঋণ পুনর্গঠনের ছাড় দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। এর ফলে ব্যাংকগুলো এখন খেলাপি ঋণ কমাতে আরও সক্রিয় হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘৪০ বছরের ব্যবসা জীবনে এমন সংকট আর আসেনি’

বিগত সরকার আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ দিয়েছিল। কখনও মাত্র দুই শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১২ বছরের জন্য পুনঃতফসিল সুবিধা, আবার কখনও করোনাকে অজুহাত দেখিয়ে ঋণ খেলাপির তালিকায় না দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এতে একটি গোষ্ঠী নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করেও পুনঃতফসিল সুবিধা নিয়ে গেছে। গত পাঁচ বছরে প্রায় ২ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ২০২৪ সালেই হয়েছে ৫৬ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা এবং ২০২৩ সালে রেকর্ড ৯১ হাজার ২২১ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল হয়।

এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইছে, একটি সুস্পষ্ট কাঠামোর অধীনে নীতি-সহায়তা কার্যকর করতে। এর অংশ হিসেবেই আসছে সার্বিক নির্দেশনা সংবলিত সার্কুলার।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

ঋণ পুনর্গঠনের বিশেষ সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংক

আপডেট: ১০:২১:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতাদের জন্য বিশেষ নীতি-সহায়তার সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো এখন নিজ নিজ বিবেচনায় ৫০ কোটি টাকার নিচের ঋণ পুনঃতপশিল বা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে ডাউনপেমেন্ট, মেয়াদসহ বিভিন্ন শর্তশিথিল করতে পারবে। শিগগির এ বিষয়ে একটি সমন্বিত সার্কুলার জারি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পুনর্গঠনের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে সে সময় কোনো নির্দিষ্ট নীতিগত কাঠামো নির্ধারণ করা হয়নি। পরবর্তীতে কমিটি পুনর্গঠিত হয় এবং এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা পড়েছে ১,২০০-রও বেশি আবেদন। কোনো কোনো কেসে ২৮টি পর্যন্ত ব্যাংক জড়িত রয়েছে। এত সংখ্যক আবেদন নিষ্পত্তি সময়সাপেক্ষ হওয়ায়, নতুন কমিটি ব্যাংকগুলোকেই পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে। কেবল জটিল কেসগুলোই বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে খেলাপি ঋণ মোকাবিলায় কঠোর অবস্থানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে ব্যাংকগুলো নানা পদ্ধতিতে খেলাপি ঋণ আড়াল করলেও এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে গত এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায়—মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ হঠাৎ ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতির পাশাপাশি লভ্যাংশ দিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন থেকে কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ যদি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, সে ব্যাংক মুনাফা করলেও লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত কঠোর হলেও, ব্যবসা খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য নির্ধারিত নীতিমালার আওতায় ঋণ পুনর্গঠনের ছাড় দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। এর ফলে ব্যাংকগুলো এখন খেলাপি ঋণ কমাতে আরও সক্রিয় হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘৪০ বছরের ব্যবসা জীবনে এমন সংকট আর আসেনি’

বিগত সরকার আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ দিয়েছিল। কখনও মাত্র দুই শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১২ বছরের জন্য পুনঃতফসিল সুবিধা, আবার কখনও করোনাকে অজুহাত দেখিয়ে ঋণ খেলাপির তালিকায় না দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এতে একটি গোষ্ঠী নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করেও পুনঃতফসিল সুবিধা নিয়ে গেছে। গত পাঁচ বছরে প্রায় ২ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ২০২৪ সালেই হয়েছে ৫৬ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা এবং ২০২৩ সালে রেকর্ড ৯১ হাজার ২২১ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল হয়।

এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইছে, একটি সুস্পষ্ট কাঠামোর অধীনে নীতি-সহায়তা কার্যকর করতে। এর অংশ হিসেবেই আসছে সার্বিক নির্দেশনা সংবলিত সার্কুলার।

ঢাকা/এসএইচ