১১:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাসা-বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:৩৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪
  • / ৪১৪৭ বার দেখা হয়েছে

দৈনন্দিন চাহিদার মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস অন্যতম। আধুনিক জীবনযাত্রায় গ্যাস এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রয়োজনীয় এই গ্যাস ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেই যত বিপদ। ছোট ছোট দুর্ঘটনা থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়ে থাকে। ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাসা বা বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা, সেটি জানা জরুরি। সমস্যা শনাক্ত করতে পারলে ঝুঁকি রোধ করা সম্ভব হয়। এ জন্য গ্যাস লিকেজ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এবার তাহলে কনস্টেলোশনের এক প্রতিবেদনের বরাত গ্যাস লিকেজ শনাক্ত এবং সমাধানের উপায় জেনে নেয়া যাক।

গ্যাস লিকেজের লক্ষণ:

পচা ডিমের মতো দুর্গন্ধ: কয়েক প্রকার হাইড্রোকার্বনের এক ধরনের মিশ্রণ হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। প্রকৃত অর্থে এটি গন্ধহীন হলেও এতে মার্কেপ্টেন নামক একপ্রকার গান্ধব পদার্থ যুক্ত করা হয়। ফলে গন্ধ হয়ে থাকে। এ কারণে বাসা-বাড়িতে কোথাও গ্যাস লিকেজ হলে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ আসে নাকে। এ থেকে সহজেই বুঝতে পারা যায় কোথাও গ্যাস লিকেজ রয়েছে।

হিস হিস শব্দ: পাইপে বা সিলিন্ডারে উচ্চ চাপে গ্যাস আবদ্ধ থাকে। এ জন্য গ্যাস লিকেজ হলে পাইপ বা সিলিন্ডারের উচ্চ চাপের জায়গা থেকে গ্যাস ক্রমশ বের হতে থাকে। এ কারণে গ্যাস বের হওয়ার সময় প্রচুর হিস হিস শব্দ হয়। এ ধরনের শব্দ হলে সতর্ক হতে হবে।

বাসা-বাড়ির ছোট ছোট গাছ মরে যায়: বাসা-বাড়িতে অনেকেই ছোট ছোট গাছ রাখেন সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু গ্যাস যদি লিকেজ থাকে তাহলে বাগানের বা সৌন্দর্যের জন্য আনা ছোট ছোট গাছগুলো মরে যেতে থাকে। এ থেকেও বুঝতে পারেন গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা।

বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা: গ্যাস লিকেজ হলে অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমশ কমে যায়। এতে শরীর চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন পায় না। যা থেকে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব ও মাথাব্যথার মতো নানা শারীরিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গ্যাস লিকেজ হলে করণীয়:

স্থান ত্যাগ করা: বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে বা শনাক্ত করতে পারলে তাৎক্ষণিক ওই জায়গা ত্যাগ করে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে। ঘর থেকে দূরত্বে ফাঁকা জায়গায় আশ্রয় নিতে পারেন।

আগুন জ্বালানো ও বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালু না করা: আবদ্ধ ঘরে যদি কখনো গ্যাস লিকেজ হয় তাহলে তা ঘরে বা রুমে জমে থাকে। এ অবস্থায় ছোট্ট একটি আগুনের ফুলকি বা শিখা থেকেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে। এ জন্য লিকেজ শনাক্ত হলে কখনোই আগুন জ্বালাবেন না এবং বৈদ্যুতিক কোনো যন্ত্র চালু করবেন না।

ঘরের দরজা-জানালা খুলে দেয়া: আবদ্ধ জায়গায় জমে থাকা গ্যাস থেকেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। এ জন্য ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকলে তা খুলে রাখুন। গ্যাস উন্মুক্ত হয়ে যাবে। বাইরে থেকে বাতাস প্রবেশ করবে ভেতরে। বিপদের কোনো ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।

গ্যাস সরবরাহের মূল জায়গা বন্ধ করা: পাইপলাইন বা সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিকেজ যদি শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে গ্যাসের যে মূল সরবরাহ রয়েছে সেটি বন্ধ করুন।

আরও পড়ুন: ইতিহাসে একবারই এসেছিল ‘৩০ ফেব্রুয়ারি’

ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করা: গ্যাস লিকেজে শনাক্ত করতে পারলে কালক্ষেপণ না করে নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে। প্রয়োজনে তারা ওই স্থানে আসবে এবং এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলা রোধ করা সম্ভব হবে।

এছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত গ্যাসলাইন রক্ষণাবেক্ষণ করা, অপ্রয়োজনে গ্যাস লাইন ব্যবহার না করা, গ্যাস সরবরাহের লাইন বন্ধ রাখার সুইচ হাতের কাছে রাখা, বাসা-বাড়িতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা ও সম্ভব হলে কার্বন মনোক্সাইড শনাক্তকারী যন্ত্র রাখতে পারেন।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x
English Version

বাসা-বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

আপডেট: ০২:৩৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪

দৈনন্দিন চাহিদার মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস অন্যতম। আধুনিক জীবনযাত্রায় গ্যাস এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রয়োজনীয় এই গ্যাস ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেই যত বিপদ। ছোট ছোট দুর্ঘটনা থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়ে থাকে। ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাসা বা বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা, সেটি জানা জরুরি। সমস্যা শনাক্ত করতে পারলে ঝুঁকি রোধ করা সম্ভব হয়। এ জন্য গ্যাস লিকেজ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এবার তাহলে কনস্টেলোশনের এক প্রতিবেদনের বরাত গ্যাস লিকেজ শনাক্ত এবং সমাধানের উপায় জেনে নেয়া যাক।

গ্যাস লিকেজের লক্ষণ:

পচা ডিমের মতো দুর্গন্ধ: কয়েক প্রকার হাইড্রোকার্বনের এক ধরনের মিশ্রণ হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। প্রকৃত অর্থে এটি গন্ধহীন হলেও এতে মার্কেপ্টেন নামক একপ্রকার গান্ধব পদার্থ যুক্ত করা হয়। ফলে গন্ধ হয়ে থাকে। এ কারণে বাসা-বাড়িতে কোথাও গ্যাস লিকেজ হলে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ আসে নাকে। এ থেকে সহজেই বুঝতে পারা যায় কোথাও গ্যাস লিকেজ রয়েছে।

হিস হিস শব্দ: পাইপে বা সিলিন্ডারে উচ্চ চাপে গ্যাস আবদ্ধ থাকে। এ জন্য গ্যাস লিকেজ হলে পাইপ বা সিলিন্ডারের উচ্চ চাপের জায়গা থেকে গ্যাস ক্রমশ বের হতে থাকে। এ কারণে গ্যাস বের হওয়ার সময় প্রচুর হিস হিস শব্দ হয়। এ ধরনের শব্দ হলে সতর্ক হতে হবে।

বাসা-বাড়ির ছোট ছোট গাছ মরে যায়: বাসা-বাড়িতে অনেকেই ছোট ছোট গাছ রাখেন সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু গ্যাস যদি লিকেজ থাকে তাহলে বাগানের বা সৌন্দর্যের জন্য আনা ছোট ছোট গাছগুলো মরে যেতে থাকে। এ থেকেও বুঝতে পারেন গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা।

বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা: গ্যাস লিকেজ হলে অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমশ কমে যায়। এতে শরীর চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন পায় না। যা থেকে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব ও মাথাব্যথার মতো নানা শারীরিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

গ্যাস লিকেজ হলে করণীয়:

স্থান ত্যাগ করা: বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে বা শনাক্ত করতে পারলে তাৎক্ষণিক ওই জায়গা ত্যাগ করে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে। ঘর থেকে দূরত্বে ফাঁকা জায়গায় আশ্রয় নিতে পারেন।

আগুন জ্বালানো ও বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালু না করা: আবদ্ধ ঘরে যদি কখনো গ্যাস লিকেজ হয় তাহলে তা ঘরে বা রুমে জমে থাকে। এ অবস্থায় ছোট্ট একটি আগুনের ফুলকি বা শিখা থেকেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে। এ জন্য লিকেজ শনাক্ত হলে কখনোই আগুন জ্বালাবেন না এবং বৈদ্যুতিক কোনো যন্ত্র চালু করবেন না।

ঘরের দরজা-জানালা খুলে দেয়া: আবদ্ধ জায়গায় জমে থাকা গ্যাস থেকেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। এ জন্য ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকলে তা খুলে রাখুন। গ্যাস উন্মুক্ত হয়ে যাবে। বাইরে থেকে বাতাস প্রবেশ করবে ভেতরে। বিপদের কোনো ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।

গ্যাস সরবরাহের মূল জায়গা বন্ধ করা: পাইপলাইন বা সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিকেজ যদি শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে গ্যাসের যে মূল সরবরাহ রয়েছে সেটি বন্ধ করুন।

আরও পড়ুন: ইতিহাসে একবারই এসেছিল ‘৩০ ফেব্রুয়ারি’

ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করা: গ্যাস লিকেজে শনাক্ত করতে পারলে কালক্ষেপণ না করে নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে। প্রয়োজনে তারা ওই স্থানে আসবে এবং এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলা রোধ করা সম্ভব হবে।

এছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত গ্যাসলাইন রক্ষণাবেক্ষণ করা, অপ্রয়োজনে গ্যাস লাইন ব্যবহার না করা, গ্যাস সরবরাহের লাইন বন্ধ রাখার সুইচ হাতের কাছে রাখা, বাসা-বাড়িতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা ও সম্ভব হলে কার্বন মনোক্সাইড শনাক্তকারী যন্ত্র রাখতে পারেন।

ঢাকা/এসএইচ