১২:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিবিএস ক্যাবলসের জরিমানা মওকুফ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মে ২০২১
  • / ৪১৯৭ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (Price Sensitive Information-PSI) সংক্রান্ত জটিলতায় পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিবিএস ক্যাবলস লিমিটেডের পরিচালকদেরকে করা জরিমানা মওকুফ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানির পক্ষ থেকে বিএসইসিতে জরিমানা মওকুফের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, বিএসইসির করা জরিমানা মওকুফ করার জন্য কোম্পানি আবেদন করলে গত এপ্রিল মাসে শুনানির আয়োজন করা হয়। ওই শুনানীতে তাদের দেওয়া বক্তব্যকে সন্তুষজনক মনে করেছে কমিশন। তার প্রেক্ষিতে ওই জরিমানা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ৯ মে কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জরিমানা মওকুফের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩১ মে) বিবিএস ক্যাবলসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ আইন সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা না থাকার কারণে তালিকাভুক্তির পর কিছু সমস্যা তৈরি হয়। অনিচ্ছাকৃতভাবে সিকিউরিটিজ আইন লংঘনের ছোটখাট ঘটনা ঘটে। তাতে কোম্পানির পরিচালকসহ কয়েকজনকে জরিমানা করে বিএসইসি। পরবর্তীতে কোম্পানি জরিমানা মওকুফের জন্য বিএসইসিতে আবেদন করে। কোম্পানির শুনানি শেষে বিষয়টি সমাধান করে বিএসইসি। এখন সকল ধরণের অভিযোগ থেকে মুক্ত বিবিএস ক্যাবল লিমিটেড।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এ বিষয়ে বিবিএস ক্যাবলসের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবু নোমান হাওলাদার বলেন, তালিকাভুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো কোম্পানির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তাদের মধ্যে সিকিউরিটিজ আইন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে না। তখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের সব মনোযোগ থাকে ব্যবসা সম্প্রসারণের দিকে। আমাদের ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে। নতুন হওয়ার কারণে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম কিছুদিন সিকিউরিটিজ আইন নিয়ে আমাদের ধারণা পরিস্কার ছিলো না। জ্ঞান পরিধিও ছিল সীমিত। তাই একান্ত অনিচ্ছাকৃতভাবে শুরুর দিকে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আইনগত বিষয়াবলী প্রতিপালনে কিছুটা সমস্যা হয়েছিলো। মূলত আমাদেরকে জরিমানা করা হয় মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ না করার জন্য। কিন্তু সেটি আসলে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিলো না। বিষয়টি আমরা বিএসইসিরকে অবহিত ও ব্যাখ্যা প্রদান করেছি যার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের উপর আরোপিত জরিমানা মওকুফ করেন। এছাড়া অন্যান্যদের উপর আরোপিত জরিমানার বিষয়টি ও সমাধান হয়েছে। এখন আর কোনো অমীমাংসিত বিষয় নেই।

তিনি বলেন, বিবিএস ক্যাবলস তালিকাভুক্তির পর থেকেই প্রতি বছর ভালো প্রতিবেদেনর জন্য কর্পোরেট গভর্নেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আসছে। গভর্ন্যন্সের বিষয়ে তারা যথেষ্ট মনোযোগী এবং আগামী দিনে এ বিষয়ে তারা আরও গুরুত্ব দেবেন।

তিনি বলেন, বিএসইসি আমাদের বিষয়গুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে সুন্দরভাবে সমাধান করে দিয়েছে। ফলে এই সাথে সম্পৃক্ত বিএসইসির চেয়ারম্যান, কমিশনারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি আগামী দিনেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ, দেশের অন্যতম শীর্ষ ক্যাবলস প্রস্তুতকারী কোম্পানি বিবিএস ক্যাবলস ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তালিকাভুক্তর পর একটি পিএসআইকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হয়। এর প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৩ আগস্ট বিএসইসির ৭৩৫তম কমিশন সভায় বিবিএস ক্যাবলসের প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতিত) ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

কোম্পানিটি এই জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করলে শুনানীসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে বিএসইসি তা মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বিষয়ে বিবিএস ক্যাবলসের কোম্পানি সচিব নাজমুল হাসান এফসিএস অর্থসূচককে বলেন, যে তথ্যটিকে পিএসআই বলা হয়েছিল, বাস্তবে তা পিএসআই নয়। শুনানীতে এই বিষয়টি আমরা পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ওই বক্তব্যকে গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করে কমিশন জরিমানা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, পিএসআই নিয়ে একটি ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। জরিমানা মওকুফের মধ্য দিয়ে এর চূড়ান্ত অবসান হয়েছে। আর যাতে কোনো ভুল বুঝাবুঝির ঘটনা না ঘটে সে সম্পর্কে আমরা আরও বেশি করে সতর্ক থাকবো। করপোরেট গভর্ন্যান্সের বিষয়ে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক।

ক্যাবলসের বাজারের মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে বিবিএস ক্যাবলস দেশের শীর্ষ ২টি কোম্পানির একটি। ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পরও ওই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে কোম্পানিটি। বর্তমানে এটি পুঁজিবাজারের অন্যতম ব্লুচিপ কোম্পানি। সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস। এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছিলো ৬ টাকা ৬৬ পয়সা। এই অর্থবছরে সর্বশেষ নয় মাসে (জুলাই-মার্চ ২০২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪ টাকা ১০ পয়সা।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

বিবিএস ক্যাবলসের জরিমানা মওকুফ

আপডেট: ০৪:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মে ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (Price Sensitive Information-PSI) সংক্রান্ত জটিলতায় পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিবিএস ক্যাবলস লিমিটেডের পরিচালকদেরকে করা জরিমানা মওকুফ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানির পক্ষ থেকে বিএসইসিতে জরিমানা মওকুফের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, বিএসইসির করা জরিমানা মওকুফ করার জন্য কোম্পানি আবেদন করলে গত এপ্রিল মাসে শুনানির আয়োজন করা হয়। ওই শুনানীতে তাদের দেওয়া বক্তব্যকে সন্তুষজনক মনে করেছে কমিশন। তার প্রেক্ষিতে ওই জরিমানা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ৯ মে কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জরিমানা মওকুফের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩১ মে) বিবিএস ক্যাবলসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ আইন সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা না থাকার কারণে তালিকাভুক্তির পর কিছু সমস্যা তৈরি হয়। অনিচ্ছাকৃতভাবে সিকিউরিটিজ আইন লংঘনের ছোটখাট ঘটনা ঘটে। তাতে কোম্পানির পরিচালকসহ কয়েকজনকে জরিমানা করে বিএসইসি। পরবর্তীতে কোম্পানি জরিমানা মওকুফের জন্য বিএসইসিতে আবেদন করে। কোম্পানির শুনানি শেষে বিষয়টি সমাধান করে বিএসইসি। এখন সকল ধরণের অভিযোগ থেকে মুক্ত বিবিএস ক্যাবল লিমিটেড।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এ বিষয়ে বিবিএস ক্যাবলসের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবু নোমান হাওলাদার বলেন, তালিকাভুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো কোম্পানির উদ্যোক্তা ও কর্মকর্তাদের মধ্যে সিকিউরিটিজ আইন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে না। তখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের সব মনোযোগ থাকে ব্যবসা সম্প্রসারণের দিকে। আমাদের ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে। নতুন হওয়ার কারণে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রথম কিছুদিন সিকিউরিটিজ আইন নিয়ে আমাদের ধারণা পরিস্কার ছিলো না। জ্ঞান পরিধিও ছিল সীমিত। তাই একান্ত অনিচ্ছাকৃতভাবে শুরুর দিকে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আইনগত বিষয়াবলী প্রতিপালনে কিছুটা সমস্যা হয়েছিলো। মূলত আমাদেরকে জরিমানা করা হয় মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ না করার জন্য। কিন্তু সেটি আসলে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিলো না। বিষয়টি আমরা বিএসইসিরকে অবহিত ও ব্যাখ্যা প্রদান করেছি যার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের উপর আরোপিত জরিমানা মওকুফ করেন। এছাড়া অন্যান্যদের উপর আরোপিত জরিমানার বিষয়টি ও সমাধান হয়েছে। এখন আর কোনো অমীমাংসিত বিষয় নেই।

তিনি বলেন, বিবিএস ক্যাবলস তালিকাভুক্তির পর থেকেই প্রতি বছর ভালো প্রতিবেদেনর জন্য কর্পোরেট গভর্নেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আসছে। গভর্ন্যন্সের বিষয়ে তারা যথেষ্ট মনোযোগী এবং আগামী দিনে এ বিষয়ে তারা আরও গুরুত্ব দেবেন।

তিনি বলেন, বিএসইসি আমাদের বিষয়গুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে সুন্দরভাবে সমাধান করে দিয়েছে। ফলে এই সাথে সম্পৃক্ত বিএসইসির চেয়ারম্যান, কমিশনারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি আগামী দিনেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ, দেশের অন্যতম শীর্ষ ক্যাবলস প্রস্তুতকারী কোম্পানি বিবিএস ক্যাবলস ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তালিকাভুক্তর পর একটি পিএসআইকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হয়। এর প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৩ আগস্ট বিএসইসির ৭৩৫তম কমিশন সভায় বিবিএস ক্যাবলসের প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতিত) ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

কোম্পানিটি এই জরিমানা মওকুফের জন্য আবেদন করলে শুনানীসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে বিএসইসি তা মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বিষয়ে বিবিএস ক্যাবলসের কোম্পানি সচিব নাজমুল হাসান এফসিএস অর্থসূচককে বলেন, যে তথ্যটিকে পিএসআই বলা হয়েছিল, বাস্তবে তা পিএসআই নয়। শুনানীতে এই বিষয়টি আমরা পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ওই বক্তব্যকে গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করে কমিশন জরিমানা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, পিএসআই নিয়ে একটি ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। জরিমানা মওকুফের মধ্য দিয়ে এর চূড়ান্ত অবসান হয়েছে। আর যাতে কোনো ভুল বুঝাবুঝির ঘটনা না ঘটে সে সম্পর্কে আমরা আরও বেশি করে সতর্ক থাকবো। করপোরেট গভর্ন্যান্সের বিষয়ে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক।

ক্যাবলসের বাজারের মার্কেট শেয়ারের দিক থেকে বিবিএস ক্যাবলস দেশের শীর্ষ ২টি কোম্পানির একটি। ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পরও ওই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে কোম্পানিটি। বর্তমানে এটি পুঁজিবাজারের অন্যতম ব্লুচিপ কোম্পানি। সর্বশেষ ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস। এই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছিলো ৬ টাকা ৬৬ পয়সা। এই অর্থবছরে সর্বশেষ নয় মাসে (জুলাই-মার্চ ২০২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪ টাকা ১০ পয়সা।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: