০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলেই বিপদ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৪০:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৯১ বার দেখা হয়েছে

শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি হলে তাকে বলা হয় হাইপার ইউরিসেমিয়া। যা বেড়ে গেলে সন্ধিতে প্রদাহ এবং ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেউ কেউ বলে থাকে গেঁটেবাত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সাধারণত বয়স্ক ও কিডনি রোগীদের ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির প্রবাণতা বেশি দেখা দেয়। তবে বর্তমান সময়ে কম বয়সীদের মধ্যে এর হার দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ স্থূলতা ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। একজন পুরুষের ৩ দশমিক ৪ থেকে ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল এবং নারীর জন্য ২ দশমিক ৪ থেকে ৫ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল হচ্ছে স্বাভাবিক ইউরিক অ্যাসিড।

ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন। এবার তাহলে তার ভাষ্যমতে ইউরিক অ্যাসিড সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক—

যেসব কারণে বাড়ার সম্ভাবনা থাকে: পিউরিনসমৃদ্ধ ও আমিষজাতীয় খাবার খুব বেশি খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। কেননা, কিডনি ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে যথেষ্ট পরিমাণ নিষ্কাশন করতে না পারলে তখন এর মাত্রা বেড়ে যায়। ইউরিক অ্যাসিড বিপাকের এনজাইমে যদি ঘাটতি থাকে, ওজন বেশি হলে এবং খাদ্যাভ্যাস অনিয়ন্ত্রিত হলেও এর হার বেশি হয়। আবার ধূমপান বা নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ এবং অনেক সময় বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যেতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে যেসব ক্ষতি হয়: ইউরিক অ্যাসিড যদি বেড়ে যায় তাহলে হার্ট সংক্রান্ত অসুখ ও কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পায়ের সন্ধিগুলো লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে। অনেক সময় পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হয়, সকালে ঘুম থেকে উঠার পর হাঁটতে গেলে কাঁটা ফোটার মতো মনে হতে পারে।

আরও পড়ুন: রাতে ভালো ঘুম হবে যে উপায়ে

যেসব খাবারে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে: মাছের ডিম, সামুদ্রিক মাছ, খাসি-গরুর মাংস, হাঁস বা ভেড়ার মাংস, মাংসের স্যুপ, কলিজা, মগজ, ফুসফুস, মাশরুম, হাঁস-মুরগির চামড়া, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শুঁটকি ও ইলিশ মাছ খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। আবার মাষকালাই, মসুর ও বুটের ডাল, বাদাম, শিম ও কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, পুঁইশাক, পালংশাক, সরিষার শাক, পাটশাক, কচুর লতি ইত্যাদি খেলে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে থাকে। এছাড়া ক্রুসিফেরি গোত্রের উদ্ভিত-মুলা, ওলকপি, ব্রকলি, টমেটো, ফুলকপি, শজনে, বেগুন এবং অতিরিক্ত লবণযুক্ত কিংবা প্যাকেটজাত খাবার, চর্বিযুক্ত তেলে ভাজা খাবার খেলেও বেড়ে যায় ইউরিক অ্যাসিড।

যেসব খাবার খেতে হবে: প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মিঠা পানির মাছ, চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস, ডিম, টক দই, মুগডাল ও দুধ পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। নিয়মিত চালকুমড়া, কুমড়া শাক, সবুজ শাক. লাউশাক, ডাঁটাশাক, লালশাক, পেঁপে, কাঁকরোল, পটোল, করলা, লাউ ইত্যাদি খেতে হবে। এছাড়া মৌসুমি ফলমূলও পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।

ইউরিক অ্যাসিড হলে করণীয়: অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড হলে নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু সন্ধি ফুলে লাল হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। ইউরিক অ্যাসিড নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে বেশি হলে, কিডনি রোগ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস করতে হবে।

ঢাকা/কেএ

শেয়ার করুন

x
English Version

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলেই বিপদ

আপডেট: ০৭:৪০:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি হলে তাকে বলা হয় হাইপার ইউরিসেমিয়া। যা বেড়ে গেলে সন্ধিতে প্রদাহ এবং ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেউ কেউ বলে থাকে গেঁটেবাত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সাধারণত বয়স্ক ও কিডনি রোগীদের ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির প্রবাণতা বেশি দেখা দেয়। তবে বর্তমান সময়ে কম বয়সীদের মধ্যে এর হার দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ স্থূলতা ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। একজন পুরুষের ৩ দশমিক ৪ থেকে ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল এবং নারীর জন্য ২ দশমিক ৪ থেকে ৫ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম/ডিএল হচ্ছে স্বাভাবিক ইউরিক অ্যাসিড।

ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন। এবার তাহলে তার ভাষ্যমতে ইউরিক অ্যাসিড সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক—

যেসব কারণে বাড়ার সম্ভাবনা থাকে: পিউরিনসমৃদ্ধ ও আমিষজাতীয় খাবার খুব বেশি খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। কেননা, কিডনি ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে যথেষ্ট পরিমাণ নিষ্কাশন করতে না পারলে তখন এর মাত্রা বেড়ে যায়। ইউরিক অ্যাসিড বিপাকের এনজাইমে যদি ঘাটতি থাকে, ওজন বেশি হলে এবং খাদ্যাভ্যাস অনিয়ন্ত্রিত হলেও এর হার বেশি হয়। আবার ধূমপান বা নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ এবং অনেক সময় বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যেতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে যেসব ক্ষতি হয়: ইউরিক অ্যাসিড যদি বেড়ে যায় তাহলে হার্ট সংক্রান্ত অসুখ ও কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পায়ের সন্ধিগুলো লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে। অনেক সময় পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হয়, সকালে ঘুম থেকে উঠার পর হাঁটতে গেলে কাঁটা ফোটার মতো মনে হতে পারে।

আরও পড়ুন: রাতে ভালো ঘুম হবে যে উপায়ে

যেসব খাবারে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে: মাছের ডিম, সামুদ্রিক মাছ, খাসি-গরুর মাংস, হাঁস বা ভেড়ার মাংস, মাংসের স্যুপ, কলিজা, মগজ, ফুসফুস, মাশরুম, হাঁস-মুরগির চামড়া, কাঁকড়া, সামুদ্রিক শুঁটকি ও ইলিশ মাছ খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। আবার মাষকালাই, মসুর ও বুটের ডাল, বাদাম, শিম ও কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, পুঁইশাক, পালংশাক, সরিষার শাক, পাটশাক, কচুর লতি ইত্যাদি খেলে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে থাকে। এছাড়া ক্রুসিফেরি গোত্রের উদ্ভিত-মুলা, ওলকপি, ব্রকলি, টমেটো, ফুলকপি, শজনে, বেগুন এবং অতিরিক্ত লবণযুক্ত কিংবা প্যাকেটজাত খাবার, চর্বিযুক্ত তেলে ভাজা খাবার খেলেও বেড়ে যায় ইউরিক অ্যাসিড।

যেসব খাবার খেতে হবে: প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মিঠা পানির মাছ, চামড়া ছাড়া মুরগির মাংস, ডিম, টক দই, মুগডাল ও দুধ পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। নিয়মিত চালকুমড়া, কুমড়া শাক, সবুজ শাক. লাউশাক, ডাঁটাশাক, লালশাক, পেঁপে, কাঁকরোল, পটোল, করলা, লাউ ইত্যাদি খেতে হবে। এছাড়া মৌসুমি ফলমূলও পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে।

ইউরিক অ্যাসিড হলে করণীয়: অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড হলে নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু সন্ধি ফুলে লাল হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। ইউরিক অ্যাসিড নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে বেশি হলে, কিডনি রোগ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস করতে হবে।

ঢাকা/কেএ