০২:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

চার ফান্ডের ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও ইউএফএসের এমডি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:০৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪৬৯৫ বার দেখা হয়েছে

জাল ব্যাংক প্রতিবেদন ও ভুয়া এফডিআরের মাধ্যমে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশন (ইউএফএস) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি মিউচুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ১৩ অক্টোবর দুবাই পালিয়েছে কোম্পানিটির এমডি হামজা আলমগীর। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা গেছে।

ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

বিএসইসির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি বিদেশে অর্থ পাচার করছে। এ ক্ষেত্রে ৪টি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের তথ্য মিলেছে। আবার তদন্তকালীন সময় পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে আরও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। শেয়ার বিক্রির এই তথ্য যোগ হলে আত্মসাতের অর্থের অঙ্ক আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে কমিশন ধারণা করছে, প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক পর্যায়ে বিএসইসি তদন্ত করে। ওই তদন্তে বেশ কিছু অনিয়ম পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হলে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও শুনানি করতে হবে। তাই পরবর্তীতে একটা চূড়ান্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে। সেটা শেষ হলে একটি প্রতিবেদন কমিশনে জমা হবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনের ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হবে। পরে যে সকল সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন হবে তার বিপরীতে কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নিবে। যেখানে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সেখানে কমিশন কোনো ছাড় দিবে না।

৫টি মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনা করছে ইউএফএস। এসব তহবিলের আকার ৪৪০ কোটি টাকা। এই ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান (গ্যারান্টি দেয়া প্রতিষ্ঠান) হিসাবে রয়েছে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।

বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লুটে নেয়ার তথ্য মিলেছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি বছর ইউএফএস তাদের যে রিপোর্ট দিয়েছে, তার অধিকাংশ ভুয়া। এর মধ্যে তহবিল থেকে সরাসরি নগদ নেয়া হয়েছে ১২৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এই টাকার সুদ আয় দেখানো হয়েছে ৩১ কোটি ৭৬ লাখ, ব্যবস্থাপনা ফির নামে অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ এবং ট্রাস্টি ফি বাবদ অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

এতে সবমিলিয়ে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। তবে কোম্পানির সম্পদ ও বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর সম্পদ বাদ দিলে মোট হাতিয়ে নেয়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির সম্পদ দেখানো হয়েছে, ২৮১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১২৫ কোটি ২৮ লাখ লুটে নিয়েছে এই চক্র। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ব্যাংক ব্যালেন্স দেখিয়েছে ৭৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং এফডিআর ৪৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। কিন্তু বাস্তবে কোনো এফডিআর খুঁজে পায়নি কমিশন। অর্থাৎ ব্যাংক ব্যালেন্সের যে তথ্য দিয়েছে, তার পুরোটাই অস্তিত্বহীন।

আবার গত বছরের ২১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকে ব্যালেন্স দেখানো হয় ১০৮ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার ৫২৩ টাকা। কিন্তু বাস্তবে ব্যালেন্স ছিল ২৭ লাখ ৯৩ হাজার ৯৮০ টাকা। অর্থাৎ ১০৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার তথ্য ভুয়া। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের ভুয়া স্টেটমেন্ট করে কমিশনে জমা দেয়া হয়েছে। যে সব ফান্ডের অর্থ লুটে নেয়া হয়েছে সেগুলো হলো আইবিবিএল শরিয়াহ ইউনিট ফান্ড, পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড, ব্যাংক এশিয়া ইউনিট ফান্ড এবং পদ্মা লাইফ ইউনিট ফান্ড।

প্রসঙ্গত, ভুয়া সম্পদ দেখানো এবং অস্তিত্বহীন ব্যাংক ব্যালেন্স দেখানোর অভিযোগ এলে ১৯ জুন তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিশন। ৪ মাস ১০ দিন পর ৩০ অক্টোবর প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।

আরও পড়ুন: ডিএসইতে এটিবি চালু কাল

এ ছাড়াও মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা থেকে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছে হামজা আলমগীর। এগুলো হলো- আর আই এন্টারপ্রাইজ, নেত্রকোনা এক্সেসরিস লিমিটেড, ভেনগার্ড ট্রেডার্স লিমিটেড এবং তানজিল ফ্যাশন লিমিটেড এবং মাল্টি ম্যাক্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হামজা আলমগীর এবং তার নিকটাত্মীয়রা। স্বাভাবিক এ বিষয়ে অডিটে ধরা পড়ার কথা। কিন্তু দুটি অডিট কোম্পানি আহমেদ জাকের অ্যান্ড কো এবং রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং এসব ভুয়া আর্থিক রিপোর্টের বৈধতা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইউএফএসের ফান্ডগুলোর মধ্যে- আইবিবিএল ২০০ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়া ১০০ কোটি, পপুলার লাইফ ৮০ কোটি, পদ্মা লাইফ ৫০ কোটি এবং প্রগতি লাইফ ইউনিট ফান্ডের ১০ কোটি টাকার তহবিল পরিচালনা করছে এই প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও সানলাইফ ইউনিট ফান্ডের ১০ কোটি এবং ইউএফএস ইউনিট ফান্ডের ১০ কোটি টাকার তহবিল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে গত বছরের ১৩ অক্টোবর দুবাই পালিয়েছে কোম্পানির এমডি হামজা আলমগীর। এর আগে দুবাই এবং ঢাকায় বারবার আসা-যাওয়া করলেও, তদন্তের শেষ দিকে তিনি আর দেশে ফেরেননি।

ইতিমধ্যে কোম্পানিটির সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন না করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বিএসইসি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। এর ফলে মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

চার ফান্ডের ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও ইউএফএসের এমডি

আপডেট: ০২:০৩:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩

জাল ব্যাংক প্রতিবেদন ও ভুয়া এফডিআরের মাধ্যমে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশন (ইউএফএস) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি মিউচুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ১৩ অক্টোবর দুবাই পালিয়েছে কোম্পানিটির এমডি হামজা আলমগীর। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা গেছে।

ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

বিএসইসির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি বিদেশে অর্থ পাচার করছে। এ ক্ষেত্রে ৪টি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের তথ্য মিলেছে। আবার তদন্তকালীন সময় পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে আরও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। শেয়ার বিক্রির এই তথ্য যোগ হলে আত্মসাতের অর্থের অঙ্ক আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে কমিশন ধারণা করছে, প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্র।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক পর্যায়ে বিএসইসি তদন্ত করে। ওই তদন্তে বেশ কিছু অনিয়ম পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হলে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও শুনানি করতে হবে। তাই পরবর্তীতে একটা চূড়ান্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে। সেটা শেষ হলে একটি প্রতিবেদন কমিশনে জমা হবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনের ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হবে। পরে যে সকল সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন হবে তার বিপরীতে কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নিবে। যেখানে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সেখানে কমিশন কোনো ছাড় দিবে না।

৫টি মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনা করছে ইউএফএস। এসব তহবিলের আকার ৪৪০ কোটি টাকা। এই ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান (গ্যারান্টি দেয়া প্রতিষ্ঠান) হিসাবে রয়েছে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।

বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লুটে নেয়ার তথ্য মিলেছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি বছর ইউএফএস তাদের যে রিপোর্ট দিয়েছে, তার অধিকাংশ ভুয়া। এর মধ্যে তহবিল থেকে সরাসরি নগদ নেয়া হয়েছে ১২৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এই টাকার সুদ আয় দেখানো হয়েছে ৩১ কোটি ৭৬ লাখ, ব্যবস্থাপনা ফির নামে অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ এবং ট্রাস্টি ফি বাবদ অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

এতে সবমিলিয়ে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। তবে কোম্পানির সম্পদ ও বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর সম্পদ বাদ দিলে মোট হাতিয়ে নেয়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির সম্পদ দেখানো হয়েছে, ২৮১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১২৫ কোটি ২৮ লাখ লুটে নিয়েছে এই চক্র। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ব্যাংক ব্যালেন্স দেখিয়েছে ৭৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং এফডিআর ৪৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। কিন্তু বাস্তবে কোনো এফডিআর খুঁজে পায়নি কমিশন। অর্থাৎ ব্যাংক ব্যালেন্সের যে তথ্য দিয়েছে, তার পুরোটাই অস্তিত্বহীন।

আবার গত বছরের ২১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকে ব্যালেন্স দেখানো হয় ১০৮ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার ৫২৩ টাকা। কিন্তু বাস্তবে ব্যালেন্স ছিল ২৭ লাখ ৯৩ হাজার ৯৮০ টাকা। অর্থাৎ ১০৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার তথ্য ভুয়া। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের ভুয়া স্টেটমেন্ট করে কমিশনে জমা দেয়া হয়েছে। যে সব ফান্ডের অর্থ লুটে নেয়া হয়েছে সেগুলো হলো আইবিবিএল শরিয়াহ ইউনিট ফান্ড, পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড, ব্যাংক এশিয়া ইউনিট ফান্ড এবং পদ্মা লাইফ ইউনিট ফান্ড।

প্রসঙ্গত, ভুয়া সম্পদ দেখানো এবং অস্তিত্বহীন ব্যাংক ব্যালেন্স দেখানোর অভিযোগ এলে ১৯ জুন তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিশন। ৪ মাস ১০ দিন পর ৩০ অক্টোবর প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।

আরও পড়ুন: ডিএসইতে এটিবি চালু কাল

এ ছাড়াও মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা থেকে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছে হামজা আলমগীর। এগুলো হলো- আর আই এন্টারপ্রাইজ, নেত্রকোনা এক্সেসরিস লিমিটেড, ভেনগার্ড ট্রেডার্স লিমিটেড এবং তানজিল ফ্যাশন লিমিটেড এবং মাল্টি ম্যাক্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হামজা আলমগীর এবং তার নিকটাত্মীয়রা। স্বাভাবিক এ বিষয়ে অডিটে ধরা পড়ার কথা। কিন্তু দুটি অডিট কোম্পানি আহমেদ জাকের অ্যান্ড কো এবং রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং এসব ভুয়া আর্থিক রিপোর্টের বৈধতা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইউএফএসের ফান্ডগুলোর মধ্যে- আইবিবিএল ২০০ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়া ১০০ কোটি, পপুলার লাইফ ৮০ কোটি, পদ্মা লাইফ ৫০ কোটি এবং প্রগতি লাইফ ইউনিট ফান্ডের ১০ কোটি টাকার তহবিল পরিচালনা করছে এই প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও সানলাইফ ইউনিট ফান্ডের ১০ কোটি এবং ইউএফএস ইউনিট ফান্ডের ১০ কোটি টাকার তহবিল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে গত বছরের ১৩ অক্টোবর দুবাই পালিয়েছে কোম্পানির এমডি হামজা আলমগীর। এর আগে দুবাই এবং ঢাকায় বারবার আসা-যাওয়া করলেও, তদন্তের শেষ দিকে তিনি আর দেশে ফেরেননি।

ইতিমধ্যে কোম্পানিটির সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন না করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বিএসইসি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। এর ফলে মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে।

ঢাকা/এসএ