১১:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

পুঁজিবাজার থেকে ১০ কোম্পানি নিচ্ছে ১,১৭৬ কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৩১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০২০
  • / ৪১৭১ বার দেখা হয়েছে

গত চার মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ১০ কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে রবি, এনার্জিপ্যাক ও ওয়ালটনের মতো কোম্পানিও রয়েছে। এছাড়া ৫ হাজার ২৬০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুরও অনুমোদন দিয়েছে বর্তমান কমিশন।

সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কতি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিএসইসি কর্তৃক উপস্থাপিত এক প্রতিবেদেন এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে পুঁজিবাজারের দ্রুত ওঠানামার ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। সেই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি একটি প্রতিবেদন তৈরি করে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করে। পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন নতুন নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তি, তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন এবং এক্সচেঞ্জের লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে বিএসইসির নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

বিএসইসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে সিকিউরিটিজের মূল্য নির্ধারিত হয়; সার্বিকভাবে যা তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সূচকের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য বৃদ্ধি ও হ্রাসের ফলে ইনডেক্সের উত্থান-পতন হয়। ফলে পুঁজিবাজারের দ্রুত ওঠানামার ব্যাপারে কমিশনের নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগ নেই। পুঁজিবাজারে সিকিউরিটিজের মূল্যর ওঠানামা তার স্বাভাবিক গতিতে হয়ে থাকে। তবে বাজারের লেনদেনে কোনো অস্বাভাবিকতা বা কারসাজি হচ্ছে কিনা তা নিয়মিত সার্ভিল্যান্স কার্যক্রমের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন প্রদানের মাধ্যমে তালিকাভুক্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যা বাজারের গভীরতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

সেকেন্ডারি মার্কেটের লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ইনসাইডার ট্রেডিং নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক, উদ্যোক্তা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য ইনসাইডারের তথ্যসংবলিত একটি ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাজার মধ্যস্থতাকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব বন্ধের বিষয়ে আদেশ জারির মাধ্যমে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

ঋণ নিয়ে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বিবেচনা করে ডিএসইএক্স সূচককে ভিত্তি করে ইকুইটি ও ঋণের অনুপাত পুনর্বিন্যাস করে আদেশ জারি করা হয়েছে। সামনের বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে।

কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের ফলে পুঁজিবাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব থেকে উত্তরণের জন্য ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে বাজারকে অস্বাভাবিক দরপতন হতে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ উদ্যোগ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর সুশাসন নিশ্চিত করতেও নানা উদ্যোগের কথা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বা বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) অনুষ্ঠানের সুযোগ দেয়া। দীর্ঘদিন ধরে যেসব কোম্পনি জেড ক্যাটাগরিতে সেসব কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতে ১২টি কোম্পানি জেড থেকে এ ও বি ক্যাটগরিতে উন্নীত হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডের স্বচ্ছতা আনতে প্রত্যেক ফান্ডের পোর্টফোলিও বিবরণী ওয়েবসাইটে প্রকাশের আদেশ জারি করা হয়েছে। দীর্ঘদিন যেসব কোম্পানি ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে রয়েছে সেসব কোম্পানির মৌলভিত্তি বিবেচনায় মূল মার্কেটে আনার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেসব কোম্পানির উৎপাদন বা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বা ভালো মুনাফা করছে না কিংবা বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে সেসব কোম্পানিকে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত করার পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনার আলোকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেয়া হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

পুঁজিবাজার থেকে ১০ কোম্পানি নিচ্ছে ১,১৭৬ কোটি টাকা

আপডেট: ০৪:৩১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০২০

গত চার মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ১০ কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে রবি, এনার্জিপ্যাক ও ওয়ালটনের মতো কোম্পানিও রয়েছে। এছাড়া ৫ হাজার ২৬০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুরও অনুমোদন দিয়েছে বর্তমান কমিশন।

সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কতি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিএসইসি কর্তৃক উপস্থাপিত এক প্রতিবেদেন এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে পুঁজিবাজারের দ্রুত ওঠানামার ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। সেই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি একটি প্রতিবেদন তৈরি করে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করে। পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন নতুন নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তি, তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন এবং এক্সচেঞ্জের লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে বিএসইসির নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

বিএসইসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে সিকিউরিটিজের মূল্য নির্ধারিত হয়; সার্বিকভাবে যা তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সূচকের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য বৃদ্ধি ও হ্রাসের ফলে ইনডেক্সের উত্থান-পতন হয়। ফলে পুঁজিবাজারের দ্রুত ওঠানামার ব্যাপারে কমিশনের নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগ নেই। পুঁজিবাজারে সিকিউরিটিজের মূল্যর ওঠানামা তার স্বাভাবিক গতিতে হয়ে থাকে। তবে বাজারের লেনদেনে কোনো অস্বাভাবিকতা বা কারসাজি হচ্ছে কিনা তা নিয়মিত সার্ভিল্যান্স কার্যক্রমের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন প্রদানের মাধ্যমে তালিকাভুক্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যা বাজারের গভীরতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

সেকেন্ডারি মার্কেটের লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ইনসাইডার ট্রেডিং নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক, উদ্যোক্তা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য ইনসাইডারের তথ্যসংবলিত একটি ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাজার মধ্যস্থতাকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব বন্ধের বিষয়ে আদেশ জারির মাধ্যমে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

ঋণ নিয়ে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বিবেচনা করে ডিএসইএক্স সূচককে ভিত্তি করে ইকুইটি ও ঋণের অনুপাত পুনর্বিন্যাস করে আদেশ জারি করা হয়েছে। সামনের বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে।

কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবের ফলে পুঁজিবাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব থেকে উত্তরণের জন্য ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে বাজারকে অস্বাভাবিক দরপতন হতে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ উদ্যোগ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর সুশাসন নিশ্চিত করতেও নানা উদ্যোগের কথা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বা বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) অনুষ্ঠানের সুযোগ দেয়া। দীর্ঘদিন ধরে যেসব কোম্পনি জেড ক্যাটাগরিতে সেসব কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতে ১২টি কোম্পানি জেড থেকে এ ও বি ক্যাটগরিতে উন্নীত হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডের স্বচ্ছতা আনতে প্রত্যেক ফান্ডের পোর্টফোলিও বিবরণী ওয়েবসাইটে প্রকাশের আদেশ জারি করা হয়েছে। দীর্ঘদিন যেসব কোম্পানি ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে রয়েছে সেসব কোম্পানির মৌলভিত্তি বিবেচনায় মূল মার্কেটে আনার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেসব কোম্পানির উৎপাদন বা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বা ভালো মুনাফা করছে না কিংবা বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে সেসব কোম্পানিকে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত করার পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনার আলোকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেয়া হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।