০৩:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা নিয়েছিলেন এসকে সিনহা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:৫৮:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মে ২০১৮
  • / ৪৩১৮ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে তার বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার দুই আইনজীবী সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। আইনজীবীরা হলেন— আফাজ মাহমুদ রুবেল ও নাজমুল আলম।

আইনজীবী আফাজ মাহমুদ রুবেল জানান, উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের পাঁচ কাঠা জমির উপর ৫১ নম্বরের ছয়তলা বাড়িটির মালিক সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা। তিনি ছয় কোটি টাকার মূল্যে বাড়িটি বিক্রি করেন টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রনজিত চন্দ্র সাহার স্ত্রী শান্ত্রী রায়ের কাছে।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের মে মাসের দিকে বায়না দলিলের মাধ্যমে বিচারপতি এস কে সিনহার কাছ থেকে বাড়িটি শান্ত্রী রায় মালিক হন। তখনই বাড়ি বাবদ দুই কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। এরপর একই বছরের ৮ নভেম্বর দুইটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় বিচারপতি এস কে সিনহার অ্যাকাউন্টে চার কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়। পরে ২৪ নভেম্বর এস কে সিনহা হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে শান্ত্রী রায়কে বাড়িটি লিখে দেন।

দুদকে তলব করা নিরঞ্জন সাহা, শান্ত্রী রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা আর শাহজাহান রনজিতের বন্ধু। তাদের সবার বাড়ি টাঙ্গাইল।

আরেক আইনজীবী নাজমুল আলম বলেন, নিরঞ্জন ও শাহজাহান ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নেন। এতে থার্ড পার্টি হিসেবে শান্ত্রী রায়ের বিভিন্ন জমি মর্টগেজ হিসাবে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়। এই ঋণ থেকেই বাড়ির চার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়।

ওই চার কোটি টাকা একই বছরের ১৬ নভেম্বর অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ওই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করেন।

এদিকে ব্যবসায়ী নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ও শাহজাহানকে ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি উত্তোলন করে অবৈধভাবে আত্মসাৎ করার অভিযোগে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে আজ রোববার দুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয় মোহাম্মদ শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা। ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় দুদক কার্যলয়ে আসেন তারা।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘ফারমার্স ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ী নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ও মোহাম্মদ শাহজাহান ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে একই দিনে প্রত্যেকেই দুই কোটি করে চার কোটি টাকা উত্তোলন করে একই দিনে পে অর্ডারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে জমা দেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে একই দিনে টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়।

তিনি বলেন, এই অভিযোগ অনুসন্ধানে তাদেরকে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে এই টাকা মূলত সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার অ্যাকাউন্টে জমা হয়। সেখান থেকে টাকাগুলো আত্মসাৎ হয়।

শেয়ার করুন

x
English Version

বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা নিয়েছিলেন এসকে সিনহা

আপডেট: ০৩:৫৮:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মে ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে তার বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার দুই আইনজীবী সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। আইনজীবীরা হলেন— আফাজ মাহমুদ রুবেল ও নাজমুল আলম।

আইনজীবী আফাজ মাহমুদ রুবেল জানান, উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের পাঁচ কাঠা জমির উপর ৫১ নম্বরের ছয়তলা বাড়িটির মালিক সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা। তিনি ছয় কোটি টাকার মূল্যে বাড়িটি বিক্রি করেন টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রনজিত চন্দ্র সাহার স্ত্রী শান্ত্রী রায়ের কাছে।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের মে মাসের দিকে বায়না দলিলের মাধ্যমে বিচারপতি এস কে সিনহার কাছ থেকে বাড়িটি শান্ত্রী রায় মালিক হন। তখনই বাড়ি বাবদ দুই কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। এরপর একই বছরের ৮ নভেম্বর দুইটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় বিচারপতি এস কে সিনহার অ্যাকাউন্টে চার কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়। পরে ২৪ নভেম্বর এস কে সিনহা হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে শান্ত্রী রায়কে বাড়িটি লিখে দেন।

দুদকে তলব করা নিরঞ্জন সাহা, শান্ত্রী রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা আর শাহজাহান রনজিতের বন্ধু। তাদের সবার বাড়ি টাঙ্গাইল।

আরেক আইনজীবী নাজমুল আলম বলেন, নিরঞ্জন ও শাহজাহান ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নেন। এতে থার্ড পার্টি হিসেবে শান্ত্রী রায়ের বিভিন্ন জমি মর্টগেজ হিসাবে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়। এই ঋণ থেকেই বাড়ির চার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়।

ওই চার কোটি টাকা একই বছরের ১৬ নভেম্বর অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ওই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করেন।

এদিকে ব্যবসায়ী নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ও শাহজাহানকে ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি উত্তোলন করে অবৈধভাবে আত্মসাৎ করার অভিযোগে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে আজ রোববার দুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয় মোহাম্মদ শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা। ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় দুদক কার্যলয়ে আসেন তারা।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘ফারমার্স ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ী নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ও মোহাম্মদ শাহজাহান ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে একই দিনে প্রত্যেকেই দুই কোটি করে চার কোটি টাকা উত্তোলন করে একই দিনে পে অর্ডারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে জমা দেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে একই দিনে টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়।

তিনি বলেন, এই অভিযোগ অনুসন্ধানে তাদেরকে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে এই টাকা মূলত সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার অ্যাকাউন্টে জমা হয়। সেখান থেকে টাকাগুলো আত্মসাৎ হয়।