সাত বছরে ঢাকা ক্লাবের রাজস্ব ফাঁকি ৩৩.৭৪ কোটি টাকা
- আপডেট: ১২:৫২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১
- / ৪১৪৭ বার দেখা হয়েছে
ঢাকা ক্লাব লিমিটেড বিভিন্ন সেবার বিপরীতে শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ প্রায় ৩৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা আদায় করলেও তা সরকারের কোষাগারে জমা দেয়নি। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ এমন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।
শুধু তাই নয় পাওনা ভ্যাট পরিশোধে ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্তৃপক্ষ বারবার দাবিনামা জারি করলেও এখনো তা জমা হয়নি। সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি এ বিষয়ে পৃথক দুইটি দাবিনামা ইস্যু করলেও রাজস্ব পরিশোধে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার প্রমীলা সরকারের সই করা দাবিনামা ঢাকা ক্লাব লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা যায়, সাত বছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী দাবিনামা চূড়ান্ত করে নোটিশ দিলেও এই রাজস্ব পরিশোধে গড়িমসি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১৩ জুলাই প্রথম দাবিনামা ইস্যু করে ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। এরপর বিভিন্ন সময়ে ১০ বার দাবিনামা জারি করলেও ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব পরিশোধ হয়নি। এর মধ্যে পাঁচবার সময় চেয়ে আবেদন করেও শেষ পর্যন্ত পাওনা পরিশোধ করেনি ঢাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
এনবিআরের ঢাকা দক্ষিণ অফিসের দাবি অনুযায়ী, ক্লাবটির অডিট রিপোর্ট যাচাই করে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত মূসক বাবদ মোট পাওনা ২৬ কোটি ৬৯ লাখ ৮২ হাজার ৫৭৩ টাকা। এর মধ্যে সেবা বিক্রয় খাতে সুদসহ আদায়যোগ্য সম্পূরক শুল্ক এবং সুদসহ উৎসে মূসক বাবদ পাওনা সাত কোটি ১০ লাখ পাঁচ হাজার ২৫৮ টাকা, সি.এ ফার্মের অডিট রিপোর্টে বিভিন্ন সেবা ক্রয়ের বিপরীতে সুদসহ কর্তনযোগ্য ভ্যাট ৫২ লাখ ৫১ হাজার ২৪১ টাকা ও নিরীক্ষা মেয়াদে স্থান ও স্থাপনা ভাড়া গ্রহণ খাতে প্রতিষ্ঠানটির নিকট অপরিশোধিত মূসক বাবদ পাওনা এক লাখ দুই হাজার ১০৪ টাকা। মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ এর ধারা ৫৫ এর উপধারা (১) অনুযায়ী গত ২৫ জানুয়ারি অপরিশোধিত মূসক বাবদ ২৬ কোটি ৬৯ লাখ ৮২ হাজার ৫৭৩ টাকার দাবিনামা সম্বলিত কারণ দর্শানোর নোটিশ জারী করা হয় ।
অন্যদিকে ঢাকা ক্লাবের ২০১৫-১৬ এর বার্ষিক রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানটি বেকারি, বার, বিউটি পার্লার, গেস্ট হাউজ, হেলথ সার্ভিস, কার্ডরুম, লন্ড্রি সার্ভিসসহ বিভিন্ন ধরনের ভ্যাটসহ বিবেচনা করে প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। গত ২৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত দাবিনামায় সুদ ব্যতীত মোট সাত কোটি চার লাখ ৫৩ হাজার ৬৫৮ টাকার সরকারি পাওনা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করার চিঠি ইস্যু করা হয়। তা না হলে ১৯৯১ সালের মূসক আইনের ৫৬ ধারা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব অপরিচালনযোগ্য করাসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ ব্যতীত উপায় থাকবে না বলেও এ চিঠিতে বলা হয়েছে।
বারবার সময়ে বৃদ্ধি করলেও দাবি করা ভ্যাট জমা দেয়নি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বরং এনবিআরের কাছে মনে হয়েছে সরকারি পাওনা পরিশোধে বিলম্বের কারণে প্রযোজ্য সুদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করা না হলে ১৯৯১ সালের মূসক আইনের ৫৬ ধারা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব অপরিচালনযোগ্য করাসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ ব্যতীত উপায় থাকবে না বলেও বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার হুমায়ুন কবীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের আইন বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আইনগতভাবেই ওই দাবিনামা ইস্যু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর রমনা এলাকায় অবস্থিত ঢাকা ক্লাব লিমিটেডে সারা বছরই সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের যাতায়াত থাকায় বিভিন্ন ধরনের সেবা বিক্রিও ভালো হয়। ক্লাবটির প্রধান আয় আসে বার থেকে। এখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ বিক্রি করা হয়। এ ছাড়া বুকিং চার্জ, সার্ভিস চার্জ, ভাড়া, বেকারি পণ্য বিক্রি, বিউটি পার্লার, গেস্ট হাউস ভাড়া, হেলথ সার্ভিস, কার্ড রুম, লন্ড্রি সার্ভিসসহ বিভিন্ন খাত থেকেও ঢাকা ক্লাবের আয় হয়।
পাওনার চেয়ে কম ভ্যাট পরিশোধ করছে- এমন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০১৭ সালে ঢাকা ক্লাবের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। টাস্কফোর্স ক্লাবটির অডিট রিপোর্ট যাচাই করে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৬ কোটি ৬৯ লাখ ৮২ হাজার ৫৭৩ টাকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি চিহ্নিত করে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালেও সাত কোটি চার লাখ ৫৩ হাজার ৬৫৮ টাকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি পাওয়া যায়। এভাবে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ ৩৩ কোটি ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৩১ টাকা। এ অর্থের ওপর প্রতি মাসে অতিরিক্ত দুই শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। এ অতিরিক্ত সুদ নিয়মিত পাওনার সঙ্গে যোগ হবে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:
- আমান ফিড ও এবি ব্যাংকের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ব্যাংক
- মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ে অগ্নিকান্ডে ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
- উত্থানে চলছে পুঁজিবাজারের লেনদেন
- ১শ টাকার বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বীমায় ২ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ
- মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করবে ইভিন্স টেক্সটাইল
- ন্যাশনাল পলিমারের রাইট শেয়ার বিওতে জমা
- এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- ৩০ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত
- Big fall in gold prices in the world market, the lowest in eight months
- 5 people died in 24 hours in Corona
- BSEC officials demanded money!
- The government is looking for ways to stop the misuse of digital security laws
- 48 companies in the capital market received the Best Corporate Award
- Bangladesh has received the final recommendation, the Prime