০১:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

হঠাৎ আবু ত্ব-হার শত্রু হলো কে?

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:২৯:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
  • / ৪২৮০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: সপ্তাহখানেক ধরে নিখোঁজ আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। সঙ্গে নিখোঁজ আরও ৩ ব্যক্তি ও একটি প্রাইভেট কার। কীভাবে, কেন তারা নিখোঁজ হলেন, কোনো কূলকিনারা করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিখোঁজ নাকি অন্য কোনো ঘটনা, সে ব্যাপারে এখনো কেউ নিশ্চিত নয়। তবে সবার আলোচনায় চারজনের একজন আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ। তরুণ আবু ত্ব-হা মূলত ইসলামি বক্তা হিসেবে পরিচিতি পান। এর বাইরেও আদনানের আরও পরিচয় রয়েছে।

আদনানের কোনো শত্রু নেই দাবি করে তার মা জানান, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি জানান, ছেলে আদনান ছোটবেলা থেকে ডানপিটে ও মেধাবী ছিলেন। খেলাধুলা আর পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। কোনো ধরনের দলের সঙ্গে তার ওঠাবসা বা যোগাযোগ ছিল না। পড়াশোনা শেষ করে ইসলামের প্রচার-প্রসারে মনোনিবেশ করেন। বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় ওয়াজ করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বক্তব্য প্রচার করতেন। তার কোনো শত্রু নেই।

আদনানের স্ত্রী সাবিকুন্নাহারও একই কথা বলছেন। তার স্বামীর কোনো শত্রু থাকার কথা নয়। কারণ, তিনি সরকারের বা কোনো দলের বিপক্ষে কখনো বক্তব্য দেননি। সাবিকুন্নাহার বলেন, আমার স্বামী যদি কোনো অন্যায় করে থাকেন, তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করা হোক। কিন্তু সে নিখোঁজ কেন?

আদনানের বোন রিতিকা রুবাইয়াত ইসলাম বলেন, আমার ভাইয়াকে দুজন মানুষ মোটরসাইকেলে করে কয়েক দিন ধরে ফলো করছিল। বিষয়টি আমাদের ভাইয়া জানিয়েছিলেন এবং ঢাকায় গেলে তিনি সেইফ থাকবেন বলে জানান। পরে মায়ের সম্মতি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি ঘটে। তবে শুরুতে আদনানের অভিযোগ গ্রহণে অনীহা বা বিভিন্ন অজুহাত থাকলেও পরে অভিযোগ গ্রহণ ও নিখোঁজদের সন্ধানে একটু নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব 

কোনো সন্ধান না পাওয়ায় শহরে-গ্রামে, হাটে-বন্দরে, পাড়া-মহল্লায় আলোচনার ইস্যু এখন নিখোঁজ আদনান। তার সন্ধান দাবি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দিন ধরে মানববন্ধন সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও আদনানদের খোঁজে প্রশাসন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আদনানের মায়ের নাম আজেদা বেগম। বাবা মৃত রফিকুল ইসলাম। ছোট বোন রিতিকা রুবাইয়াত ইসলাম। আদনানের প্রথম স্ত্রী আবিদা নুর, তাদের সংসারে তিন বছরের একটি মেয়ে ও দেড় বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

বাবা মারা যাওয়ার পরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে নানার বাড়িতে বড় হন আদনান। বিয়ের পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নগরীর নিউ শালবন এলাকায় বসবাস করেন। কয়েক মাস আগে আদনান আরেকটি বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারা ঢাকার মিরপুর আল ইদফান ইসলামী গার্লস মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক।

আদনানের নিখোঁজ হওয়া ও তারিখ নিয়ে বিভ্রাট

আদনানের স্ত্রী সাবিকুন্নাহারের দাবি, ৮ জুন রংপুর থেকে ঢাকায় ফেরার সময় গাবতলী থেকে তার সফরসঙ্গী আব্দুল মুকিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিন ফয়েজসহ আবু ত্ব-হা আদনান নিখোঁজ হন। তাদের ব্যবহৃত গাড়ি নম্বর (ঢাকা মেট্রো-গ ৩৩৪৩৪২)। গত আট দিনে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

সাবিকুন্নাহারের তথ্যমতে, আদনান ৮ জুন (মঙ্গলবার) থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। কিন্তু তার মা আজেদা বেগম বলছেন, তার ছেলে ১০ জুন রংপুর থেকে বিকেল চারটার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন। সেদিন রাতে ছেলে আদনানের ফোন বন্ধ পান তিনি। এরপর থেকে তার খোঁজ না পেয়ে নিশ্চিত হন তারা, আদনান নিখোঁজ হয়েছেন। ওই তারিখ উল্লেখ করে ১১ জুন রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন আজেদা বেগম।

ফেসবুক ও ইউটিউবে আদনান
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবু ত্ব-হা আদনানের ইসলামবিষয়ক বক্তব্য আছে। কিন্তু নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই এসব আলোচনা ভেসে বেড়াচ্ছে। তার ভক্ত, শ্রোতা, অনুসারী ও একশ্রেণির তরুণ এসব ইসলামি বক্তব্য ফেসবুক ও ইউটিউবে বেশি শেয়ার করছেন। তবে ‘শেষ জামানার গল্প’ নামের একটি ফেসবুক পেজে আদনানের ইসলামবিষয়ক অর্ধশত ভিডিও রয়েছে। এসব ভিডিওর বেশির ভাগই কেয়ামতের আলামত ও ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদি-খ্রিষ্টানদের নিয়ে আলোচনা।

আদনানের শিক্ষাজীবন
উত্তরের অক্সফোর্ডখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। এর আগে রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পড়ালেখার পাশাপাশি প্রচুর ইসলামিক বই পড়তেন আদনান। গবেষণা করতে করতে দর্শনশাস্ত্রে পড়া এই যুবক হয়ে ওঠেন ইসলামি বক্তা। তবে আরবি শিক্ষার জন্য স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় কিছুদিন তালিম নেন।

ক্রিকেট ও গিটার বাজানো
সদা হাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক ছিলেন আদনান। বইখাতার সঙ্গে যেমন নিবিড় সম্পর্ক ছিল, তেমনি ক্রিকেটের প্রতিও ছিল গভীর টান। স্কুলজীবন থেকে ভালো খেলতেন। রংপুরের ক্রিকেট অঙ্গনে ছিল তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলার। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। শুধু ক্রিকেটই ভালো খেলতেন তা নয়, আদনানের হাতের ছোঁয়া ছিল গিটারেও। তার অসাধারণ গিটার বাজানো বিমোহিত করত স্থানীয়দের। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট-বল, গিটার ছেড়ে আদনান নিজেকে ধর্মীয় চিন্তা-চেতনার সঙ্গে মিলিয়ে নেন। হয়ে ওঠেন তরুণ ইসলামি আলোচক ও বক্তা।

আদনানের সন্ধানে আকুতি
আট দিন ধরে নিখোঁজ থাকা ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ তার তিন সঙ্গীর সন্ধান পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরনা দিচ্ছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রাসাশিক্ষক সাবিকুন্নাহার সারা।

এ ঘটনায় আদনানের মা আজেদা বেগম রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ ছাড়া আদনানের সন্ধান চেয়ে ঢাকার পল্লবী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তার ছোট স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারা। স্বামীকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং র‍্যাবের মহাপরিচালক বরাবরও দুটি চিঠি দিয়েছেন তিনি।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

হঠাৎ আবু ত্ব-হার শত্রু হলো কে?

আপডেট: ০৬:২৯:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: সপ্তাহখানেক ধরে নিখোঁজ আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। সঙ্গে নিখোঁজ আরও ৩ ব্যক্তি ও একটি প্রাইভেট কার। কীভাবে, কেন তারা নিখোঁজ হলেন, কোনো কূলকিনারা করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিখোঁজ নাকি অন্য কোনো ঘটনা, সে ব্যাপারে এখনো কেউ নিশ্চিত নয়। তবে সবার আলোচনায় চারজনের একজন আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ। তরুণ আবু ত্ব-হা মূলত ইসলামি বক্তা হিসেবে পরিচিতি পান। এর বাইরেও আদনানের আরও পরিচয় রয়েছে।

আদনানের কোনো শত্রু নেই দাবি করে তার মা জানান, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি জানান, ছেলে আদনান ছোটবেলা থেকে ডানপিটে ও মেধাবী ছিলেন। খেলাধুলা আর পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। কোনো ধরনের দলের সঙ্গে তার ওঠাবসা বা যোগাযোগ ছিল না। পড়াশোনা শেষ করে ইসলামের প্রচার-প্রসারে মনোনিবেশ করেন। বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় ওয়াজ করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বক্তব্য প্রচার করতেন। তার কোনো শত্রু নেই।

আদনানের স্ত্রী সাবিকুন্নাহারও একই কথা বলছেন। তার স্বামীর কোনো শত্রু থাকার কথা নয়। কারণ, তিনি সরকারের বা কোনো দলের বিপক্ষে কখনো বক্তব্য দেননি। সাবিকুন্নাহার বলেন, আমার স্বামী যদি কোনো অন্যায় করে থাকেন, তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করা হোক। কিন্তু সে নিখোঁজ কেন?

আদনানের বোন রিতিকা রুবাইয়াত ইসলাম বলেন, আমার ভাইয়াকে দুজন মানুষ মোটরসাইকেলে করে কয়েক দিন ধরে ফলো করছিল। বিষয়টি আমাদের ভাইয়া জানিয়েছিলেন এবং ঢাকায় গেলে তিনি সেইফ থাকবেন বলে জানান। পরে মায়ের সম্মতি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি ঘটে। তবে শুরুতে আদনানের অভিযোগ গ্রহণে অনীহা বা বিভিন্ন অজুহাত থাকলেও পরে অভিযোগ গ্রহণ ও নিখোঁজদের সন্ধানে একটু নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব 

কোনো সন্ধান না পাওয়ায় শহরে-গ্রামে, হাটে-বন্দরে, পাড়া-মহল্লায় আলোচনার ইস্যু এখন নিখোঁজ আদনান। তার সন্ধান দাবি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দিন ধরে মানববন্ধন সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও আদনানদের খোঁজে প্রশাসন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আদনানের মায়ের নাম আজেদা বেগম। বাবা মৃত রফিকুল ইসলাম। ছোট বোন রিতিকা রুবাইয়াত ইসলাম। আদনানের প্রথম স্ত্রী আবিদা নুর, তাদের সংসারে তিন বছরের একটি মেয়ে ও দেড় বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

বাবা মারা যাওয়ার পরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে নানার বাড়িতে বড় হন আদনান। বিয়ের পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নগরীর নিউ শালবন এলাকায় বসবাস করেন। কয়েক মাস আগে আদনান আরেকটি বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারা ঢাকার মিরপুর আল ইদফান ইসলামী গার্লস মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক।

আদনানের নিখোঁজ হওয়া ও তারিখ নিয়ে বিভ্রাট

আদনানের স্ত্রী সাবিকুন্নাহারের দাবি, ৮ জুন রংপুর থেকে ঢাকায় ফেরার সময় গাবতলী থেকে তার সফরসঙ্গী আব্দুল মুকিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিন ফয়েজসহ আবু ত্ব-হা আদনান নিখোঁজ হন। তাদের ব্যবহৃত গাড়ি নম্বর (ঢাকা মেট্রো-গ ৩৩৪৩৪২)। গত আট দিনে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

সাবিকুন্নাহারের তথ্যমতে, আদনান ৮ জুন (মঙ্গলবার) থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। কিন্তু তার মা আজেদা বেগম বলছেন, তার ছেলে ১০ জুন রংপুর থেকে বিকেল চারটার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন। সেদিন রাতে ছেলে আদনানের ফোন বন্ধ পান তিনি। এরপর থেকে তার খোঁজ না পেয়ে নিশ্চিত হন তারা, আদনান নিখোঁজ হয়েছেন। ওই তারিখ উল্লেখ করে ১১ জুন রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন আজেদা বেগম।

ফেসবুক ও ইউটিউবে আদনান
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবু ত্ব-হা আদনানের ইসলামবিষয়ক বক্তব্য আছে। কিন্তু নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই এসব আলোচনা ভেসে বেড়াচ্ছে। তার ভক্ত, শ্রোতা, অনুসারী ও একশ্রেণির তরুণ এসব ইসলামি বক্তব্য ফেসবুক ও ইউটিউবে বেশি শেয়ার করছেন। তবে ‘শেষ জামানার গল্প’ নামের একটি ফেসবুক পেজে আদনানের ইসলামবিষয়ক অর্ধশত ভিডিও রয়েছে। এসব ভিডিওর বেশির ভাগই কেয়ামতের আলামত ও ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদি-খ্রিষ্টানদের নিয়ে আলোচনা।

আদনানের শিক্ষাজীবন
উত্তরের অক্সফোর্ডখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। এর আগে রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পড়ালেখার পাশাপাশি প্রচুর ইসলামিক বই পড়তেন আদনান। গবেষণা করতে করতে দর্শনশাস্ত্রে পড়া এই যুবক হয়ে ওঠেন ইসলামি বক্তা। তবে আরবি শিক্ষার জন্য স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় কিছুদিন তালিম নেন।

ক্রিকেট ও গিটার বাজানো
সদা হাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক ছিলেন আদনান। বইখাতার সঙ্গে যেমন নিবিড় সম্পর্ক ছিল, তেমনি ক্রিকেটের প্রতিও ছিল গভীর টান। স্কুলজীবন থেকে ভালো খেলতেন। রংপুরের ক্রিকেট অঙ্গনে ছিল তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলার। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। শুধু ক্রিকেটই ভালো খেলতেন তা নয়, আদনানের হাতের ছোঁয়া ছিল গিটারেও। তার অসাধারণ গিটার বাজানো বিমোহিত করত স্থানীয়দের। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট-বল, গিটার ছেড়ে আদনান নিজেকে ধর্মীয় চিন্তা-চেতনার সঙ্গে মিলিয়ে নেন। হয়ে ওঠেন তরুণ ইসলামি আলোচক ও বক্তা।

আদনানের সন্ধানে আকুতি
আট দিন ধরে নিখোঁজ থাকা ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ তার তিন সঙ্গীর সন্ধান পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরনা দিচ্ছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রাসাশিক্ষক সাবিকুন্নাহার সারা।

এ ঘটনায় আদনানের মা আজেদা বেগম রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ ছাড়া আদনানের সন্ধান চেয়ে ঢাকার পল্লবী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তার ছোট স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারা। স্বামীকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং র‍্যাবের মহাপরিচালক বরাবরও দুটি চিঠি দিয়েছেন তিনি।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: