০৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

১৮৪ শতাংশ পর্যন্ত রিটার্ন দিয়েছে যেসব দুর্বল কোম্পানি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৪২:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুলাই ২০২১
  • / ৪২৮৪ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: করোনা মহামারীর প্রভাব গত বছরের প্রথমার্ধে করোনা মহামারীর প্রভাবে বেহাল অবস্থায় ছিল দেশের পুঁজিবাজার। তবে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই ধীরে ধীরে গতি ফিরতে শুরু করে পুঁজিবাজারে। গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে এ বছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক এ উত্থানের সময় দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন এসেছে। অনুমাননির্ভরতার কারণেই কোনো ধরনের বাছবিচার ছাড়া বিনিয়োগকারীদের এসব শেয়ারে ঝোঁকার প্রবণতা ক্ষতির কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত ছয় মাসে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো শেয়ারদর বাড়ার প্রবণতা পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময় সবচেয়ে বেশি ১৮৪ দশমিক ৪০ শতাংশ রিটার্ন এসেছে কাট্টলি টেক্সটাইলের শেয়ারে। গত ছয় মাসে প্রতিদিন গড়ে কোম্পানিটির ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যদিও মৌলভিত্তির বিচারে কোম্পানিটি বেশ পিছিয়ে। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ছিল ২০ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কমে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময় কোম্পানিটির লভ্যাংশের পরিমাণও কমেছে। তাছাড়া আইপিওর অর্থ ব্যয়ে মিথ্যা তথ্য ও জাল ব্যাংক বিবরণী দেয়ার কারণে গত বছর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এসব কিছুই কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। মূলত নতুন একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের তথ্যকে পুঁজি করে কাট্টলি টেক্সটাইলের শেয়ারদর বেড়েছে।

প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারে গত ছয় মাসে ১৮০ দশমিক ৪৪ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। এ সময়ে প্রতিদিন কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। স্বল্পমূলধনি এ কোম্পানির আর্থিক পারফরম্যান্স এর শেয়ারদরে উল্লম্ফনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭ কোটি ৬ লাখ টাকা, যা পরের ২০২০ হিসাব বছরে বেড়ে ৯ কোটি ২০ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটি ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিলেও এর পরের বছর নগদের পরিবর্তে ১৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে। মূলত বীমা খাতের শেয়ারদর বাড়াতে কিছু বিনিয়োগকারীর সংশ্লিষ্টতার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারদরে উল্লম্ফন হয়েছে।

পুঁজিবাজারের সমস্যাগ্রস্ত কোম্পানি ঢাকা ডায়িং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড। তিতাস গ্যাসের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে বিবাদের কারণে কোম্পানিটির ডায়িং ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ ছিল অনেকদিন। গত বছরের শেষের দিকে কোম্পানিটির কারখানায় গ্যাস সরবরাহে উচ্চ আদালত নির্দেশ দেন। মূলত কোম্পানিটির সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে ভালো মুনাফা আসতে পারে বাজারে—এমন একটি গুজবকে কেন্দ্র করে এর শেয়ারদরে উল্লম্ফন হয়। পরবর্তী সময়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দেখা যায়, কোম্পানির মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারে ১৬৪ দশমিক ১০ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। এ সময় প্রতিদিন ঢাকা ডায়িংয়ের ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এমারাল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর গত ছয় মাসে ১৬২ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রতিদিন কোম্পানিটির ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মূলত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক কোম্পানিটির পর্ষদ পুনর্গঠন এবং জাপানি কোম্পানি মিনোরির বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে কোম্পানিটির শেয়ারদরে উল্লম্ফন ঘটে। সম্প্রতি কোম্পানিটি এ বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে উৎপাদনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পর্ষদ সদস্যরা বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এর পর থেকে গত চার বছরের বেশি সময় ধরে এর উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ২০১৬ সালের পর থেকে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে একেবারেই অন্ধকারে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

দেশের সিমেন্ট খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে আর্থিক ও ব্যবসায়িক পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে আরামিট সিমেন্ট। গত ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারে ১৫২ দশমিক ৩০ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। এ সময়ে প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে আরামিট সিমেন্টের। যদিও জেড ক্যাটাগরিতে থাকা এ কোম্পানি তিন বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশও দেয়নি। এমনকি করোনার সময়ে সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে তালিকাভুক্ত সব সিমেন্ট কোম্পানির ব্যবসা ও মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হলেও এ সময় আরামিট সিমেন্টের বিক্রি ও মুনাফা দুটোই কমেছে।

এছাড়া গত ছয় মাসে সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির ১৩৫ দশমিক ২১ শতাংশ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২৬ দশমিক ২৫, ম্যাকসন স্পিনিং মিলসের ১১৩, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ১১৩ ও হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশের শেয়ারে ১১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ রিটার্ন এসেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বলেন, এসব কোম্পানির শেয়ারদর তাদের আর্থিক কিংবা ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স নয়, বরং বাজার প্রবণতার কারণে বেড়েছে। ফলে যাদের স্পেকুলেশন মিলে যাবে, তারা লাভ করতে পারবেন। অন্যদিকে যাদের স্পেকুলেশন মিলবে না, তাদের লোকসান গুনতে হবে। এক্ষেত্রে লোকসানের ঝুঁকিই বেশি। তাই লাভের পরিমাণ কম হলেও দীর্ঘমেয়াদে মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত। এতে ঝুঁকি কম থাকে।

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

১৮৪ শতাংশ পর্যন্ত রিটার্ন দিয়েছে যেসব দুর্বল কোম্পানি

আপডেট: ১১:৪২:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুলাই ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: করোনা মহামারীর প্রভাব গত বছরের প্রথমার্ধে করোনা মহামারীর প্রভাবে বেহাল অবস্থায় ছিল দেশের পুঁজিবাজার। তবে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই ধীরে ধীরে গতি ফিরতে শুরু করে পুঁজিবাজারে। গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে এ বছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক এ উত্থানের সময় দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন এসেছে। অনুমাননির্ভরতার কারণেই কোনো ধরনের বাছবিচার ছাড়া বিনিয়োগকারীদের এসব শেয়ারে ঝোঁকার প্রবণতা ক্ষতির কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত ছয় মাসে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো শেয়ারদর বাড়ার প্রবণতা পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সময় সবচেয়ে বেশি ১৮৪ দশমিক ৪০ শতাংশ রিটার্ন এসেছে কাট্টলি টেক্সটাইলের শেয়ারে। গত ছয় মাসে প্রতিদিন গড়ে কোম্পানিটির ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যদিও মৌলভিত্তির বিচারে কোম্পানিটি বেশ পিছিয়ে। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ছিল ২০ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কমে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময় কোম্পানিটির লভ্যাংশের পরিমাণও কমেছে। তাছাড়া আইপিওর অর্থ ব্যয়ে মিথ্যা তথ্য ও জাল ব্যাংক বিবরণী দেয়ার কারণে গত বছর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এসব কিছুই কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। মূলত নতুন একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের তথ্যকে পুঁজি করে কাট্টলি টেক্সটাইলের শেয়ারদর বেড়েছে।

প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারে গত ছয় মাসে ১৮০ দশমিক ৪৪ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। এ সময়ে প্রতিদিন কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। স্বল্পমূলধনি এ কোম্পানির আর্থিক পারফরম্যান্স এর শেয়ারদরে উল্লম্ফনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭ কোটি ৬ লাখ টাকা, যা পরের ২০২০ হিসাব বছরে বেড়ে ৯ কোটি ২০ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটি ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিলেও এর পরের বছর নগদের পরিবর্তে ১৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে। মূলত বীমা খাতের শেয়ারদর বাড়াতে কিছু বিনিয়োগকারীর সংশ্লিষ্টতার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারদরে উল্লম্ফন হয়েছে।

পুঁজিবাজারের সমস্যাগ্রস্ত কোম্পানি ঢাকা ডায়িং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড। তিতাস গ্যাসের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে বিবাদের কারণে কোম্পানিটির ডায়িং ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ ছিল অনেকদিন। গত বছরের শেষের দিকে কোম্পানিটির কারখানায় গ্যাস সরবরাহে উচ্চ আদালত নির্দেশ দেন। মূলত কোম্পানিটির সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে ভালো মুনাফা আসতে পারে বাজারে—এমন একটি গুজবকে কেন্দ্র করে এর শেয়ারদরে উল্লম্ফন হয়। পরবর্তী সময়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দেখা যায়, কোম্পানির মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারে ১৬৪ দশমিক ১০ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। এ সময় প্রতিদিন ঢাকা ডায়িংয়ের ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এমারাল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর গত ছয় মাসে ১৬২ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রতিদিন কোম্পানিটির ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। মূলত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক কোম্পানিটির পর্ষদ পুনর্গঠন এবং জাপানি কোম্পানি মিনোরির বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে কোম্পানিটির শেয়ারদরে উল্লম্ফন ঘটে। সম্প্রতি কোম্পানিটি এ বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে উৎপাদনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পর্ষদ সদস্যরা বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এর পর থেকে গত চার বছরের বেশি সময় ধরে এর উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ২০১৬ সালের পর থেকে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে একেবারেই অন্ধকারে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

দেশের সিমেন্ট খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে আর্থিক ও ব্যবসায়িক পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে আরামিট সিমেন্ট। গত ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারে ১৫২ দশমিক ৩০ শতাংশ রিটার্ন এসেছে। এ সময়ে প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে আরামিট সিমেন্টের। যদিও জেড ক্যাটাগরিতে থাকা এ কোম্পানি তিন বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশও দেয়নি। এমনকি করোনার সময়ে সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে তালিকাভুক্ত সব সিমেন্ট কোম্পানির ব্যবসা ও মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হলেও এ সময় আরামিট সিমেন্টের বিক্রি ও মুনাফা দুটোই কমেছে।

এছাড়া গত ছয় মাসে সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির ১৩৫ দশমিক ২১ শতাংশ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২৬ দশমিক ২৫, ম্যাকসন স্পিনিং মিলসের ১১৩, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ১১৩ ও হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশের শেয়ারে ১১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ রিটার্ন এসেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বলেন, এসব কোম্পানির শেয়ারদর তাদের আর্থিক কিংবা ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স নয়, বরং বাজার প্রবণতার কারণে বেড়েছে। ফলে যাদের স্পেকুলেশন মিলে যাবে, তারা লাভ করতে পারবেন। অন্যদিকে যাদের স্পেকুলেশন মিলবে না, তাদের লোকসান গুনতে হবে। এক্ষেত্রে লোকসানের ঝুঁকিই বেশি। তাই লাভের পরিমাণ কম হলেও দীর্ঘমেয়াদে মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত। এতে ঝুঁকি কম থাকে।