১১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

পি কে হালদারের বিচার শুরু

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:৪৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ১০৩২৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় দেশে গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। আর এর মধ্য দিয়ে এই মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের এই আদেশ দেয়। সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম। পি কে হালদার বর্তমানে ভারতের কারাগারে আছেন। তাঁকে হস্তান্তরের জন্য দিল্লিকে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা।

পিপি সালাম বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় পি কে হালদারসহ তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। মামলায় আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ঠিক করেছেন আদালত। পি কে হালদারসহ এই এই মামলার ১০ আসামি পলাতক। কারাগারে রয়েছেন চার আসামি।

আজ শুনানির সময় কারাগারে থাকা পি কে হালদারের মামাতো ভাই শঙ্খ ব্যাপারী, ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা ও অবন্তিকা বড়ালকে আদালতে হাজির করা হয়। অভিযোগ গঠনের সময় উপস্থিত আসামিরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন। তাঁরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। 

মামলার পলাতক অন্য আসামিরা হলেন- পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, সহযোগী অমিতাভ অধিকারী, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, রাজীব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি। 

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই মামলায় গত জানুয়ারিতে পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এর আগে পলাতক অবস্থায় ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক।

দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রের তথ্য অনুযায়ী, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৯৩৩ কোটি টাকার জমি, ফ্ল্যাট ও হোটেল কিনেছে। এ ছাড়া তিনি কানাডায় পাচার করেছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। 

দুদক বলেছে, পিরোজপুরের নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান পি কে হালদার মাত্র ১০ বছরের (২০০৯-২০১৯ সাল) ব্যবধানে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। তাঁর বৈধ আয়ের পরিমাণ মাত্র ১২ কোটি টাকা। 

দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পি কে হালদার নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বের করে নেন। এই টাকা আর ফেরত না আসায় প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। 

টাকা বের করার আগে শেয়ার কিনে এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন পি কে হালদার। এই আর্থিক কেলেঙ্কারি জানাজানি হয় ২০২০ সালের শুরুতে। আর পি কে হালদার দেশ ছাড়েন ২০১৯ সালের শেষ দিকে। গত মে মাসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে পি কে হালদারসহ পাঁচজনকে  গ্রেপ্তার করে দেশটির আর্থিক দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা ইডি। গ্রেপ্তারের আগে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পি কে হালদারের প্রাসাদসম বাড়িসহ অনেক সম্পদের সন্ধান পায় ইডি।

গত ৭ জুন ইডি দেশটির আদালতকে জানায়, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় পি কে হালদারসহ তাঁর সহযোগীদের ৮৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছেন তারা। পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীদের ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়ার কথাও আদালতকে জানিয়েছে ইডি।

আরো পড়ুন: আজমির শরিফ পরিদর্শনে রাজস্থানে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

পি কে হালদারের বিচার শুরু

আপডেট: ০১:৪৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় দেশে গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। আর এর মধ্য দিয়ে এই মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের এই আদেশ দেয়। সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম। পি কে হালদার বর্তমানে ভারতের কারাগারে আছেন। তাঁকে হস্তান্তরের জন্য দিল্লিকে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা।

পিপি সালাম বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় পি কে হালদারসহ তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। মামলায় আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ঠিক করেছেন আদালত। পি কে হালদারসহ এই এই মামলার ১০ আসামি পলাতক। কারাগারে রয়েছেন চার আসামি।

আজ শুনানির সময় কারাগারে থাকা পি কে হালদারের মামাতো ভাই শঙ্খ ব্যাপারী, ঘনিষ্ঠ সহযোগী সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা ও অবন্তিকা বড়ালকে আদালতে হাজির করা হয়। অভিযোগ গঠনের সময় উপস্থিত আসামিরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন। তাঁরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। 

মামলার পলাতক অন্য আসামিরা হলেন- পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, সহযোগী অমিতাভ অধিকারী, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, রাজীব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি। 

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই মামলায় গত জানুয়ারিতে পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এর আগে পলাতক অবস্থায় ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক।

দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রের তথ্য অনুযায়ী, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৯৩৩ কোটি টাকার জমি, ফ্ল্যাট ও হোটেল কিনেছে। এ ছাড়া তিনি কানাডায় পাচার করেছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। 

দুদক বলেছে, পিরোজপুরের নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান পি কে হালদার মাত্র ১০ বছরের (২০০৯-২০১৯ সাল) ব্যবধানে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। তাঁর বৈধ আয়ের পরিমাণ মাত্র ১২ কোটি টাকা। 

দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পি কে হালদার নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বের করে নেন। এই টাকা আর ফেরত না আসায় প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। 

টাকা বের করার আগে শেয়ার কিনে এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন পি কে হালদার। এই আর্থিক কেলেঙ্কারি জানাজানি হয় ২০২০ সালের শুরুতে। আর পি কে হালদার দেশ ছাড়েন ২০১৯ সালের শেষ দিকে। গত মে মাসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে পি কে হালদারসহ পাঁচজনকে  গ্রেপ্তার করে দেশটির আর্থিক দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা ইডি। গ্রেপ্তারের আগে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পি কে হালদারের প্রাসাদসম বাড়িসহ অনেক সম্পদের সন্ধান পায় ইডি।

গত ৭ জুন ইডি দেশটির আদালতকে জানায়, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় পি কে হালদারসহ তাঁর সহযোগীদের ৮৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছেন তারা। পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীদের ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়ার কথাও আদালতকে জানিয়েছে ইডি।

আরো পড়ুন: আজমির শরিফ পরিদর্শনে রাজস্থানে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা/এসএ