০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকেই চিকিৎসককে হত্যার হুমকি: র‍্যাব

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:৩৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪১৬৬ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক এস এম মোস্তফা জামানকে হুমকিদাতা গ্রেফতার তাফসিরুল ইসলাম (২৩) ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য। তাফসিরুলের বাবা রফিকুল ইসলাম রফিও এলাকার জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। ২০১৩-১৪ সালে এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির অপরাধে রফির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয় এবং তিনি কারাভোগ করেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে বুধবার (১৬ আগস্ট) দিনগত রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে তাফসিরুলকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রমণ থেকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই তাফসিরুল ওই চিকিৎসককে হত্যার হুমকি দেন। চিকিৎসায় সাঈদীর পরিবারও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারপরও যারা এই চিকিৎসককে হেয় করে কথা বলছেন ও হুমকি দিচ্ছেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব কাজ করছে।

তিনি জানান, গত ১৩ আগস্ট জামায়াত নেতা সাঈদী অসুস্থ হওয়ায় তাকে বিএসএমএমইউর জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। ১৪ আগস্ট রাতে তিনি মারা যান। সাঈদী চিকিৎসারত থাকা অবস্থায় বিশেষজ্ঞ টিম আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা করেন। সাঈদীর পরিবারও তার চিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসকদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ চিকিৎসক সমাজকে হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ছাড়া সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া এস এম মোস্তফা জামানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউবে বিভিন্ন আইডি থেকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পাশাপাশি তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ভুক্তভোগী চিকিৎসকের এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রেক্ষিতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-২ ও ৬ এর একটি আভিযানিক দল ঝিনাইদহের মহেশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাফসিরুল ইসলামকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার তাফসিরুল জামায়াত নেতা সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারসহ চিকিৎসক মোস্তফা জামানকে ফেসবুকে ও মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে তাফসিরুলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব

তাফসিরুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তাফসিরুল স্থানীয় একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছে। সে স্কুলজীবন থেকেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য। সে আইটিতে দক্ষ হওয়ায় অনলাইনে ইমেইল-মার্কেটিংয়ের কাজ করে মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করতো।

এ ছাড়া তাফসিরুলের বাবা রফিকুল ইসলাম রফি এলাকার জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৩-১৪ সালে এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির অপরাধে তার পিতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয় এবং এসব মামলায় সে কারাভোগ করেন।

তাফসিরুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর#তাফসিরুল ইসলাম’ ও ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর@তাফসিরুল ইসলাম’ নামে দুটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে পরিচালনা করে।

মূলত সে দলীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকে সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক মোস্তাফা জামানের মোবাইল নম্বর খুঁজে বের করে হোয়াটসঅ্যাপে হত্যার হুমকি দেয়। পরে চিকিৎসক জিডি করলে তাফসিরুল মেসেজ হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মুছে ফেলে। কিন্তু তার মোবাইলে হত্যার হুমকি সংবলিত মেসেজের স্ক্রিনশট পাওয়া যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রমণ থেকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই সে ডাক্তারকে হুমকি দেয়। সাঈদী সাহেবের পরিবারও চিকিৎসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যারা এই চিকিৎসককে হেয় করে কথা বলছেন ও হুমকি দিচ্ছেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি।

নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য একটি স্বার্থন্বেষী দল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ডাক্তারের নম্বর ছড়ানো হয়েছে। সেখান থেকে তার নম্বর সংগ্রহ করে তাফসিরুল। তা ছাড়া সে নিজেও আইটি বিশেষজ্ঞ। গ্রুপ থেকে নম্বর সংগ্রহ করে ডাক্তারকে হুমকি দিয়েছে সে।

এ ছাড়া এসব গ্রুপ থেকে অনেকেই নম্বর সংগ্রহ করে ডাক্তারকে হুমকি দিচ্ছেন। তাদেরকেও গ্রেফতার কাজ করছে র‍্যাব। এছাড়া গ্রুপগুলোকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকেই চিকিৎসককে হত্যার হুমকি: র‍্যাব

আপডেট: ০২:৩৫:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩

মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক এস এম মোস্তফা জামানকে হুমকিদাতা গ্রেফতার তাফসিরুল ইসলাম (২৩) ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য। তাফসিরুলের বাবা রফিকুল ইসলাম রফিও এলাকার জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। ২০১৩-১৪ সালে এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির অপরাধে রফির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয় এবং তিনি কারাভোগ করেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে বুধবার (১৬ আগস্ট) দিনগত রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে তাফসিরুলকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রমণ থেকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই তাফসিরুল ওই চিকিৎসককে হত্যার হুমকি দেন। চিকিৎসায় সাঈদীর পরিবারও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারপরও যারা এই চিকিৎসককে হেয় করে কথা বলছেন ও হুমকি দিচ্ছেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব কাজ করছে।

তিনি জানান, গত ১৩ আগস্ট জামায়াত নেতা সাঈদী অসুস্থ হওয়ায় তাকে বিএসএমএমইউর জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। ১৪ আগস্ট রাতে তিনি মারা যান। সাঈদী চিকিৎসারত থাকা অবস্থায় বিশেষজ্ঞ টিম আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা করেন। সাঈদীর পরিবারও তার চিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসকদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ চিকিৎসক সমাজকে হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ছাড়া সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া এস এম মোস্তফা জামানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউবে বিভিন্ন আইডি থেকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পাশাপাশি তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ভুক্তভোগী চিকিৎসকের এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রেক্ষিতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-২ ও ৬ এর একটি আভিযানিক দল ঝিনাইদহের মহেশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাফসিরুল ইসলামকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার তাফসিরুল জামায়াত নেতা সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারসহ চিকিৎসক মোস্তফা জামানকে ফেসবুকে ও মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে তাফসিরুলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব

তাফসিরুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তাফসিরুল স্থানীয় একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছে। সে স্কুলজীবন থেকেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য। সে আইটিতে দক্ষ হওয়ায় অনলাইনে ইমেইল-মার্কেটিংয়ের কাজ করে মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করতো।

এ ছাড়া তাফসিরুলের বাবা রফিকুল ইসলাম রফি এলাকার জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৩-১৪ সালে এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির অপরাধে তার পিতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয় এবং এসব মামলায় সে কারাভোগ করেন।

তাফসিরুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর#তাফসিরুল ইসলাম’ ও ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর@তাফসিরুল ইসলাম’ নামে দুটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে পরিচালনা করে।

মূলত সে দলীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকে সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক মোস্তাফা জামানের মোবাইল নম্বর খুঁজে বের করে হোয়াটসঅ্যাপে হত্যার হুমকি দেয়। পরে চিকিৎসক জিডি করলে তাফসিরুল মেসেজ হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মুছে ফেলে। কিন্তু তার মোবাইলে হত্যার হুমকি সংবলিত মেসেজের স্ক্রিনশট পাওয়া যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রমণ থেকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই সে ডাক্তারকে হুমকি দেয়। সাঈদী সাহেবের পরিবারও চিকিৎসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যারা এই চিকিৎসককে হেয় করে কথা বলছেন ও হুমকি দিচ্ছেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি।

নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য একটি স্বার্থন্বেষী দল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ডাক্তারের নম্বর ছড়ানো হয়েছে। সেখান থেকে তার নম্বর সংগ্রহ করে তাফসিরুল। তা ছাড়া সে নিজেও আইটি বিশেষজ্ঞ। গ্রুপ থেকে নম্বর সংগ্রহ করে ডাক্তারকে হুমকি দিয়েছে সে।

এ ছাড়া এসব গ্রুপ থেকে অনেকেই নম্বর সংগ্রহ করে ডাক্তারকে হুমকি দিচ্ছেন। তাদেরকেও গ্রেফতার কাজ করছে র‍্যাব। এছাড়া গ্রুপগুলোকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

ঢাকা/টিএ