১১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র: হোয়াইট হাউস

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫৮:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৪১৮২ বার দেখা হয়েছে

লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করছে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি। এর জেরে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর অবস্থানে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনের গাজার বাইরেও নতুন করে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তবে হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র। এমন কথাই জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না বলে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘আমরা এটিকে (সংঘাত) প্রসারিত করতে চাইছি না। হুথিদের একটি ইচ্ছা আছে এবং তাদের কাছে এখনও সঠিক পথ বেছে নেওয়ার জন্য সময়ও আছে। আর তা হচ্ছে এই বেপরোয়া হামলা বন্ধ করা।’

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওই অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিরোধী ইরানের মিত্ররাও লেবানন, সিরিয়া এবং ইরাক থেকে মার্কিন স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু বানানোয় এতে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

এর মাঝেই হুথিদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

হুথিরা মূলত ইয়েমেনের শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু জাইদি নামের উপ-সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী। বেশিরভাগ ইয়েমেনি হুথিদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বসবাস করে। পাশাপাশি সানা এবং ইয়েমেনের উত্তরে হুথিরা লোহিত সাগরের উপকূলরেখাও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাথে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের চলমান তীব্র উত্তেজনার মাঝে লোহিত সাগরে মাল্টার পতাকাবাহী গ্রিসের মালিকানাধীন একটি জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার লোহিত সাগরে ইয়েমেনের সালিফ বন্দর থেকে ৭৬ নটিক্যাল মাইল উত্তর-পশ্চিমে ওই জাহাজে হামলা হয়।

হামলায় জাহাজের কেউ হতাহত হননি। তবে জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া হুথিদের লক্ষ্য করে মঙ্গলবার ফের হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। লোহিত সাগরে জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালানোর জবাব দিতে হুথিদের ওপর নতুন এ হামলা চালায় দেশটি। নাম গোপন রাখার শর্তে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় চারটি জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন জায়গায় যৌথ হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য।

মূলত ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে গত প্রায় তিন মাস ধরে লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট ও ইসরায়েলগামী জাহাজে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে আসছে হুথি বিদ্রোহীরা। ইরান সমর্থিত সশস্ত্র এই গোষ্ঠী জানিয়েছে, যতদিন গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা চলবে ততদিন তারা হামলা চালিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: গাজা ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রেণেই থাকবে: ইয়োভ গ্যালেন্ত

এদিকে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হুথিদের এসব হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এর অনেক প্রভাব পড়েছে। লোহিত সাগর থেকে মিসরের সুয়েজ খাল হয়ে যেসব জাহাজ ইউরোপে যেত; সেসব জাহাজকে এখন আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে।

এতে করে আগের তুলনায় জাহাজকে আরও ১০দিন বেশি চলতে হচ্ছে। এমনকি এশিয়া থেকে ইউরোপ যেতে ৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের অতিরিক্ত জ্বালানিও লাগছে। আর এ কারণে জিনিসপত্রের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x
English Version

হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র: হোয়াইট হাউস

আপডেট: ১০:৫৮:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করছে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি। এর জেরে ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর অবস্থানে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনের গাজার বাইরেও নতুন করে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তবে হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র। এমন কথাই জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না বলে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘আমরা এটিকে (সংঘাত) প্রসারিত করতে চাইছি না। হুথিদের একটি ইচ্ছা আছে এবং তাদের কাছে এখনও সঠিক পথ বেছে নেওয়ার জন্য সময়ও আছে। আর তা হচ্ছে এই বেপরোয়া হামলা বন্ধ করা।’

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ওই অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিরোধী ইরানের মিত্ররাও লেবানন, সিরিয়া এবং ইরাক থেকে মার্কিন স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু বানানোয় এতে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

এর মাঝেই হুথিদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

হুথিরা মূলত ইয়েমেনের শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু জাইদি নামের উপ-সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী। বেশিরভাগ ইয়েমেনি হুথিদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বসবাস করে। পাশাপাশি সানা এবং ইয়েমেনের উত্তরে হুথিরা লোহিত সাগরের উপকূলরেখাও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাথে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের চলমান তীব্র উত্তেজনার মাঝে লোহিত সাগরে মাল্টার পতাকাবাহী গ্রিসের মালিকানাধীন একটি জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার লোহিত সাগরে ইয়েমেনের সালিফ বন্দর থেকে ৭৬ নটিক্যাল মাইল উত্তর-পশ্চিমে ওই জাহাজে হামলা হয়।

হামলায় জাহাজের কেউ হতাহত হননি। তবে জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া হুথিদের লক্ষ্য করে মঙ্গলবার ফের হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। লোহিত সাগরে জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালানোর জবাব দিতে হুথিদের ওপর নতুন এ হামলা চালায় দেশটি। নাম গোপন রাখার শর্তে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় চারটি জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন জায়গায় যৌথ হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য।

মূলত ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে গত প্রায় তিন মাস ধরে লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট ও ইসরায়েলগামী জাহাজে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে আসছে হুথি বিদ্রোহীরা। ইরান সমর্থিত সশস্ত্র এই গোষ্ঠী জানিয়েছে, যতদিন গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা চলবে ততদিন তারা হামলা চালিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: গাজা ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রেণেই থাকবে: ইয়োভ গ্যালেন্ত

এদিকে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হুথিদের এসব হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এর অনেক প্রভাব পড়েছে। লোহিত সাগর থেকে মিসরের সুয়েজ খাল হয়ে যেসব জাহাজ ইউরোপে যেত; সেসব জাহাজকে এখন আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে।

এতে করে আগের তুলনায় জাহাজকে আরও ১০দিন বেশি চলতে হচ্ছে। এমনকি এশিয়া থেকে ইউরোপ যেতে ৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের অতিরিক্ত জ্বালানিও লাগছে। আর এ কারণে জিনিসপত্রের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঢাকা/এসএইচ