০৩:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পাওনা টাকা পেতে আইডিআরএ’র দ্বারস্থ যমুনা লাইফের সাবেক সিইও

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:৩৫:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১
  • / ৪১৫১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: টানা ছয় বছর যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল। চাকরি ছেড়েছেন ২০২০ সালে ৭ এপ্রিল অর্থাৎ, একবছর আড়াই মাস আগে।

এরপর পাওনা টাকা বুঝে নিতে কোম্পানির চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনেকবার দেখা করেছেন তিনি। কিন্তু কোম্পানির কাছ থেকে পাওনা টাকা এখনও বুঝে পাননি তিনি। ফলে করোনার এই সময়ে অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আর্থিক সমস্যার কারণে তার একমাত্র ছেলের পড়াশোনাও বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

নানাভাবে তদবির করেও বকেয়া অর্থ আদায় করতে না পেরে সবশেষ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। সোমবার (১৪ জুন) আইডিআরএ-তে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন সাবেক এই সিইও।

এ বিষয়ে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ যাদের কাছে গেলে টাকা পাওয়া যাবে, এরকম সবাইকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমাকে টাকা দিতে সময় ক্ষেপণ করছেন। কোনো উপায় না পেয়ে আমি আইডিআরএ-কে অবহিত করেছি। অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আইডিআরএ’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এসএম শাকিল আখতার। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এমন একটা অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা শিগগিরই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সাবেক সিইও’র বকেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন যমুনা লাইফের চেয়ারম্যান বদরুল আলম খন্দকার। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তার পাওনা যখন যত টুকু পেরেছি, পরিশোধ করেছি। আমরা তার পাওনার কথা অস্বীকার করছি না, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আইডিআরএ’র কাছে করা অভিযোগে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সিইও হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ১ম দফায় তিন বছর আপনাদের অনুমোদন নিয়ে চাকরি করি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

২য় দফায় আরও তিন বছরের জন্য পরিচালনা পর্ষদ আমার চাকরি নবায়ন করে এবং আপনাদের অনুমোদন নিয়ে গত ৭ এপ্রিল চাকরির মেয়াদ সম্পন্ন করি এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশে আমার সব দায়িত্ব চিফ মার্কেটিং অফিসারের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে ছাড়পত্র নিই। উল্লেখ্য যে, কোম্পানির প্রথম অবস্থায় প্রাথমিক ব্যয় বেশি এবং প্রিমিয়াম আয় কম হওয়ার কারণে নিয়মিতভাবে বেতন নিতে না পারায় আমার ২০ মাসের বেতন বাবদ ৬০ লাখ টাকা বকেয়া থেকে যায়।

পরিচালনা পর্ষদ আশ্বাস প্রদান করেন, চাকরি থেকে রিলিজ নেওয়ার সময় আমার বকেয়া বেতন পরিশোধ করে দেবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, প্রতিশ্রুতি প্রদান সত্ত্বেও আমাকে পাওনা অর্থ প্রদান করা হয়নি। পরবর্তীতে অনেক অনুনয়-বিনয় করার পর গত ১৩ মে ৯ লাখ টাকা এবং ২০২০ সালের শেষ দিকে এসে প্রথমে এক লাখ টকা এবং তারও তিন মাস পর ২০২১ সালের প্রথম দিকে দুই লাখ টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ১২ লাখ টাকা প্রদান করে। আরও ৪৮ লাখ টাকা (আয়কর বাদে ৪৪ লাখ টাকা) বকেয়া আছে।

চিঠিতে বলা হয়, বারবার করে চিঠি দিয়ে এবং ব্যক্তিগতভাবে চেয়ারম্যান সঙ্গে দেখা করে আমার পাওনা অর্থ চাওয়ার পরও আমাকে তা দেওয়া হচ্ছে না। আমাকে বলা হচ্ছে, ব্যবসার অবস্থা ভালো হলে আমার টাকা দেওয়া হবে। আমি এক দফায় টাকা না দিয়ে মাসে মাসে আমার প্রাপ্য দিতে অনুরোধ করেছি, তারপরও তা দেওয়া হচ্ছে না।

অথচ আপনাদের গত ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখের সার্কুলার (নং ধী: উ: নি; কাজি এ ডি১০০৩৩) ২০১১২১৬ এর ৫ম দফায় বলা আছে, অব্যাহতিপত্র দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেনা-পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে। আমার দীর্ঘদিনের পাওনা অর্থ না পাওয়ার দরুন আমি মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমার একমাত্র ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এমতাবস্থায় আমার পাওনা দ্রুত পরিশোধে কোম্পানিকে নির্দেশনা প্রদানের বিনীত অনুরোধ করছি।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

পাওনা টাকা পেতে আইডিআরএ’র দ্বারস্থ যমুনা লাইফের সাবেক সিইও

আপডেট: ০২:৩৫:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: টানা ছয় বছর যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল। চাকরি ছেড়েছেন ২০২০ সালে ৭ এপ্রিল অর্থাৎ, একবছর আড়াই মাস আগে।

এরপর পাওনা টাকা বুঝে নিতে কোম্পানির চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনেকবার দেখা করেছেন তিনি। কিন্তু কোম্পানির কাছ থেকে পাওনা টাকা এখনও বুঝে পাননি তিনি। ফলে করোনার এই সময়ে অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আর্থিক সমস্যার কারণে তার একমাত্র ছেলের পড়াশোনাও বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

নানাভাবে তদবির করেও বকেয়া অর্থ আদায় করতে না পেরে সবশেষ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। সোমবার (১৪ জুন) আইডিআরএ-তে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন সাবেক এই সিইও।

এ বিষয়ে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ যাদের কাছে গেলে টাকা পাওয়া যাবে, এরকম সবাইকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমাকে টাকা দিতে সময় ক্ষেপণ করছেন। কোনো উপায় না পেয়ে আমি আইডিআরএ-কে অবহিত করেছি। অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আইডিআরএ’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এসএম শাকিল আখতার। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এমন একটা অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা শিগগিরই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সাবেক সিইও’র বকেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন যমুনা লাইফের চেয়ারম্যান বদরুল আলম খন্দকার। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তার পাওনা যখন যত টুকু পেরেছি, পরিশোধ করেছি। আমরা তার পাওনার কথা অস্বীকার করছি না, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আইডিআরএ’র কাছে করা অভিযোগে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সিইও হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ১ম দফায় তিন বছর আপনাদের অনুমোদন নিয়ে চাকরি করি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

২য় দফায় আরও তিন বছরের জন্য পরিচালনা পর্ষদ আমার চাকরি নবায়ন করে এবং আপনাদের অনুমোদন নিয়ে গত ৭ এপ্রিল চাকরির মেয়াদ সম্পন্ন করি এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশে আমার সব দায়িত্ব চিফ মার্কেটিং অফিসারের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে ছাড়পত্র নিই। উল্লেখ্য যে, কোম্পানির প্রথম অবস্থায় প্রাথমিক ব্যয় বেশি এবং প্রিমিয়াম আয় কম হওয়ার কারণে নিয়মিতভাবে বেতন নিতে না পারায় আমার ২০ মাসের বেতন বাবদ ৬০ লাখ টাকা বকেয়া থেকে যায়।

পরিচালনা পর্ষদ আশ্বাস প্রদান করেন, চাকরি থেকে রিলিজ নেওয়ার সময় আমার বকেয়া বেতন পরিশোধ করে দেবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, প্রতিশ্রুতি প্রদান সত্ত্বেও আমাকে পাওনা অর্থ প্রদান করা হয়নি। পরবর্তীতে অনেক অনুনয়-বিনয় করার পর গত ১৩ মে ৯ লাখ টাকা এবং ২০২০ সালের শেষ দিকে এসে প্রথমে এক লাখ টকা এবং তারও তিন মাস পর ২০২১ সালের প্রথম দিকে দুই লাখ টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ১২ লাখ টাকা প্রদান করে। আরও ৪৮ লাখ টাকা (আয়কর বাদে ৪৪ লাখ টাকা) বকেয়া আছে।

চিঠিতে বলা হয়, বারবার করে চিঠি দিয়ে এবং ব্যক্তিগতভাবে চেয়ারম্যান সঙ্গে দেখা করে আমার পাওনা অর্থ চাওয়ার পরও আমাকে তা দেওয়া হচ্ছে না। আমাকে বলা হচ্ছে, ব্যবসার অবস্থা ভালো হলে আমার টাকা দেওয়া হবে। আমি এক দফায় টাকা না দিয়ে মাসে মাসে আমার প্রাপ্য দিতে অনুরোধ করেছি, তারপরও তা দেওয়া হচ্ছে না।

অথচ আপনাদের গত ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখের সার্কুলার (নং ধী: উ: নি; কাজি এ ডি১০০৩৩) ২০১১২১৬ এর ৫ম দফায় বলা আছে, অব্যাহতিপত্র দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পদত্যাগকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেনা-পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে। আমার দীর্ঘদিনের পাওনা অর্থ না পাওয়ার দরুন আমি মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমার একমাত্র ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এমতাবস্থায় আমার পাওনা দ্রুত পরিশোধে কোম্পানিকে নির্দেশনা প্রদানের বিনীত অনুরোধ করছি।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: