০৬:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

মারণাস্ত্রের হুমকি উপেক্ষা: বিক্ষোভ ধর্মঘটে মিয়ানমারের মানুষ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:০০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৬৮ বার দেখা হয়েছে

সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদ এবং গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছেন মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দেশজুড়ে এই সাধারণ ধর্মঘট চলছে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দুইজন নিহতের পর আন্দোলন অব্যাহত রাখলে আরও মানুষ মারা যেতে পারে বলে সামরিক কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও বিক্ষোভ-ধর্মঘটে নেমেছেন সাধারণ মানুষ।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ডাকা সোমবারের এই ধর্মঘটে মিয়ানমারের প্রায় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সোমবার সকাল থেকেই দেশের বৃহত্তম শহরগুলোর পাশাপাশি মফস্বল শহরগুলোতেও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন অভ্যুত্থানবিরোধীরা। অস্ত্রের জোরে ক্ষমতা দখলের পর তিন সপ্তাহ পার হলেও মিয়ানমারের জান্তা সরকার একটানা প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হওয়া এই বিক্ষোভ দমনে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।

হরের হ্লেদান জংশনে সোমবার বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ৪৬ বছর বয়সী সান সান মাউ। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘সবাই আমাদের আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। আমাদের (সবার) বাইরে বের হয়ে আসা প্রয়োজন।’

এদিকে সোমবার রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল এমআরটিভি। এখানে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে হুমকির সুরে বলা হয়েছে, ‘বিক্ষোভকারীরা এখন (রাস্তায় নামতে) মানুষকে উস্কানি দিচ্ছে। বিশেষ করে আবেগপ্রবণ কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের উস্কানি দিচ্ছে তারা। এতে করে তারা তাদের জীবন হারাতে পারে।’

২২ বছর বয়সী তেত তেত হ্লেইং নামে এক তরুণী বিক্ষোভকারী বলেন, সোমবারের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ভীত ছিলেন এবং প্রার্থনা করে তবেই তিনি রাস্তায় নেছেন। এরপরও তিনি ঘরে বসে থাকেননি। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমরা সামরিক শাসন চাই না, আমরা গণতন্ত্র চাই। আমরা নিজেরাই আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে নিতে চাই।’

বিক্ষোভে যোগ দেওয়া থেকে আমার মা আমাকে বিরত রাখতে পারেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘নিজের প্রতি খেয়াল রেখো’

জান্তা সরকারের হুমকি প্রসঙ্গে বিক্ষোভকারী তেত তেত হ্লেইং

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর থেকে দেশটির লাখ লাখ মানুষ সেনাশাসনের অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন। অভ্যুত্থানবিরোধীদের এই বিক্ষোভ দেশটির বড় বড় শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান এই বিক্ষোভে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু, লেখক-কবি এবং পরিবহন শ্রমিকরাও যোগ দিয়েছেন। তারা সেনাশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশটির নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি এবং অন্যান্যদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি তুলেছেন।

সর্বশেষ গত শনিবার মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের ছোড়া গুলিতে দু’জন নিহত হয়। এসময় আহত হয় আরও ২০ জন।

সূত্র: রয়টার্স

 

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

মারণাস্ত্রের হুমকি উপেক্ষা: বিক্ষোভ ধর্মঘটে মিয়ানমারের মানুষ

আপডেট: ০২:০০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১

সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদ এবং গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছেন মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দেশজুড়ে এই সাধারণ ধর্মঘট চলছে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দুইজন নিহতের পর আন্দোলন অব্যাহত রাখলে আরও মানুষ মারা যেতে পারে বলে সামরিক কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও বিক্ষোভ-ধর্মঘটে নেমেছেন সাধারণ মানুষ।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ডাকা সোমবারের এই ধর্মঘটে মিয়ানমারের প্রায় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সোমবার সকাল থেকেই দেশের বৃহত্তম শহরগুলোর পাশাপাশি মফস্বল শহরগুলোতেও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন অভ্যুত্থানবিরোধীরা। অস্ত্রের জোরে ক্ষমতা দখলের পর তিন সপ্তাহ পার হলেও মিয়ানমারের জান্তা সরকার একটানা প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হওয়া এই বিক্ষোভ দমনে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।

হরের হ্লেদান জংশনে সোমবার বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ৪৬ বছর বয়সী সান সান মাউ। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘সবাই আমাদের আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। আমাদের (সবার) বাইরে বের হয়ে আসা প্রয়োজন।’

এদিকে সোমবার রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল এমআরটিভি। এখানে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে হুমকির সুরে বলা হয়েছে, ‘বিক্ষোভকারীরা এখন (রাস্তায় নামতে) মানুষকে উস্কানি দিচ্ছে। বিশেষ করে আবেগপ্রবণ কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের উস্কানি দিচ্ছে তারা। এতে করে তারা তাদের জীবন হারাতে পারে।’

২২ বছর বয়সী তেত তেত হ্লেইং নামে এক তরুণী বিক্ষোভকারী বলেন, সোমবারের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ভীত ছিলেন এবং প্রার্থনা করে তবেই তিনি রাস্তায় নেছেন। এরপরও তিনি ঘরে বসে থাকেননি। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমরা সামরিক শাসন চাই না, আমরা গণতন্ত্র চাই। আমরা নিজেরাই আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে নিতে চাই।’

বিক্ষোভে যোগ দেওয়া থেকে আমার মা আমাকে বিরত রাখতে পারেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘নিজের প্রতি খেয়াল রেখো’

জান্তা সরকারের হুমকি প্রসঙ্গে বিক্ষোভকারী তেত তেত হ্লেইং

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর থেকে দেশটির লাখ লাখ মানুষ সেনাশাসনের অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন। অভ্যুত্থানবিরোধীদের এই বিক্ষোভ দেশটির বড় বড় শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান এই বিক্ষোভে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু, লেখক-কবি এবং পরিবহন শ্রমিকরাও যোগ দিয়েছেন। তারা সেনাশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশটির নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি এবং অন্যান্যদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি তুলেছেন।

সর্বশেষ গত শনিবার মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে সামরিক জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের ছোড়া গুলিতে দু’জন নিহত হয়। এসময় আহত হয় আরও ২০ জন।

সূত্র: রয়টার্স

 

আরও পড়ুন: