০৩:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

রপ্তানি সহায়ক ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫০:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪২০৮ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি রপ্তানি খাত। বাংলাদেশ ব্যাংক শিল্পের বিকাশ ও প্রসারের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং পর্যাপ্ত তারল্য নিশ্চিতে সহজ শর্তে ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি সহায়ক তহবিল গঠন করেছে।

রোববার (১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ বিআরপিডি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তহবিলের বিষয়ে জানিয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানি বা স্থানীয় মার্কেট থেকে ক্রয়ের জন্য এ তহবিল। গ্রাহকপর্যায়ে এর সুদের হার হবে ৪ শতাংশ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতিশীল রাখতে রপ্তানি খাতকে সহায়তা করা প্রয়োজন। কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর রপ্তানি কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক বিরূপ অর্থনৈতিক অবস্থার বিপরীতে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে নতুন ‘রপ্তানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিল’ গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব এ তহবিলের আকার ১০ হাজার কোটি টাকা। স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঁচামাল আমদানি ও স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহের জন্য এ অর্থ ব্যবহার করা হবে। সব তফসিলি ব্যাংক এখান থেকে ঋণ সুবিধা নিতে পারবে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার

তবে এ তহবিল গ্রহণে আগ্রহী ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের সঙ্গে আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে একটি অংশগ্রহণকারী চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এ তহবিলের সামগ্রিক তদারকি, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার কাজে তদারকি করবে। এক্ষেত্রে তহবিল ব্যবস্থাপনায় বিআরপিডি থেকে জারি করা নির্দেশনাগুলো অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলোকে অনুসরণ করতে হবে।

তহবিল থেকে ঋণ পাবেন যারা
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এ ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। এ তহবিলের অর্থ রপ্তানিকারকের ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে পণ্যের কাঁচামাল আমদানি পাশাপাশি ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিপরীতে স্থানীয় উৎপাদনকারী বা সরবরাহকারীর কাঁচামাল আমদানিতেও ব্যবহার করা যাবে।

কোনো খেলাপি গ্রাহক বা প্রতিষ্ঠান এ তহবিলের সুবিধা নিতে পারবেন না। এ তহবিল থেকে ঋণ সুবিধাগ্রহণকারী কোনো গ্রাহকের রপ্তানিমূল্য অপরিশোধিত থাকলে তিনি নতুন করে কোনো ঋণ সুবিধা পাবেন না।

তবে ডলার সংকট বা অন্য কোনো কারণে রপ্তানিমূল্য যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারলে তিনি আবারও ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু নতুন ঋণ সুবিধা গ্রহণের আগে পূর্বের ইস্যুকৃত ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিপরীতে সৃষ্ট দায়ের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নগদে পরিশোধ করতে হবে।

এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণগুলো সন্তোষজনক হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। রপ্তানি এলসির বিপরীতে কাঁচামাল আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য কোনো তহবিল থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত হলে ওই গ্রাহক এ তহবিল থেকে কোনো ঋণসুবিধা পাবেন না।

এ ঋণে গ্রাহকপর্যায়ে সুদের হার হবে ৪ শতাংশ। এছাড়া গ্রাহকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ফিসের বাইরে অন্য কোনো ফিস গ্রহণ করা যাবে না। ব্যাংকগুলো প্রাক-অর্থায়ন তহবিলের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে।

গ্রাহকপর্যায়ে ঋণের মেয়াদ যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সর্বোচ্চ ১৮০ দিন বা ছয়মাস মেয়াদে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক এ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে, যা মেয়াদ শেষে সুদসহ এককালীন পরিশোধ করতে হবে।

তবে যৌক্তিক কারণে রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটির অনুমোদনক্রমে মেয়াদ অনধিক ৯০ দিন বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রস্তাব করা যাবে। এক্ষেত্রে কেইস টু কেইস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আবার ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক রেস্ট্রিকটেড মুদারাবা পদ্ধতিতে বিনিয়োগের বিপরীতে এ তহবিল হতে প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।

মুদারিবের অবহেলা, অসদাচরণ বা চুক্তির কোনো শর্তের ব্যত্যয়ের কারণে সাহিবুল মালের মূলধন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মুদারিব হতে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

রপ্তানি সহায়ক ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন

আপডেট: ১০:৫০:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি রপ্তানি খাত। বাংলাদেশ ব্যাংক শিল্পের বিকাশ ও প্রসারের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং পর্যাপ্ত তারল্য নিশ্চিতে সহজ শর্তে ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি সহায়ক তহবিল গঠন করেছে।

রোববার (১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ বিআরপিডি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তহবিলের বিষয়ে জানিয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানি বা স্থানীয় মার্কেট থেকে ক্রয়ের জন্য এ তহবিল। গ্রাহকপর্যায়ে এর সুদের হার হবে ৪ শতাংশ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতিশীল রাখতে রপ্তানি খাতকে সহায়তা করা প্রয়োজন। কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর রপ্তানি কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক বিরূপ অর্থনৈতিক অবস্থার বিপরীতে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে নতুন ‘রপ্তানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিল’ গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব এ তহবিলের আকার ১০ হাজার কোটি টাকা। স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঁচামাল আমদানি ও স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহের জন্য এ অর্থ ব্যবহার করা হবে। সব তফসিলি ব্যাংক এখান থেকে ঋণ সুবিধা নিতে পারবে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার

তবে এ তহবিল গ্রহণে আগ্রহী ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের সঙ্গে আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে একটি অংশগ্রহণকারী চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এ তহবিলের সামগ্রিক তদারকি, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার কাজে তদারকি করবে। এক্ষেত্রে তহবিল ব্যবস্থাপনায় বিআরপিডি থেকে জারি করা নির্দেশনাগুলো অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলোকে অনুসরণ করতে হবে।

তহবিল থেকে ঋণ পাবেন যারা
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এ ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। এ তহবিলের অর্থ রপ্তানিকারকের ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে পণ্যের কাঁচামাল আমদানি পাশাপাশি ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিপরীতে স্থানীয় উৎপাদনকারী বা সরবরাহকারীর কাঁচামাল আমদানিতেও ব্যবহার করা যাবে।

কোনো খেলাপি গ্রাহক বা প্রতিষ্ঠান এ তহবিলের সুবিধা নিতে পারবেন না। এ তহবিল থেকে ঋণ সুবিধাগ্রহণকারী কোনো গ্রাহকের রপ্তানিমূল্য অপরিশোধিত থাকলে তিনি নতুন করে কোনো ঋণ সুবিধা পাবেন না।

তবে ডলার সংকট বা অন্য কোনো কারণে রপ্তানিমূল্য যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারলে তিনি আবারও ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু নতুন ঋণ সুবিধা গ্রহণের আগে পূর্বের ইস্যুকৃত ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিপরীতে সৃষ্ট দায়ের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নগদে পরিশোধ করতে হবে।

এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণগুলো সন্তোষজনক হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। রপ্তানি এলসির বিপরীতে কাঁচামাল আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য কোনো তহবিল থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত হলে ওই গ্রাহক এ তহবিল থেকে কোনো ঋণসুবিধা পাবেন না।

এ ঋণে গ্রাহকপর্যায়ে সুদের হার হবে ৪ শতাংশ। এছাড়া গ্রাহকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ফিসের বাইরে অন্য কোনো ফিস গ্রহণ করা যাবে না। ব্যাংকগুলো প্রাক-অর্থায়ন তহবিলের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে।

গ্রাহকপর্যায়ে ঋণের মেয়াদ যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সর্বোচ্চ ১৮০ দিন বা ছয়মাস মেয়াদে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক এ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে, যা মেয়াদ শেষে সুদসহ এককালীন পরিশোধ করতে হবে।

তবে যৌক্তিক কারণে রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটির অনুমোদনক্রমে মেয়াদ অনধিক ৯০ দিন বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রস্তাব করা যাবে। এক্ষেত্রে কেইস টু কেইস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আবার ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক রেস্ট্রিকটেড মুদারাবা পদ্ধতিতে বিনিয়োগের বিপরীতে এ তহবিল হতে প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।

মুদারিবের অবহেলা, অসদাচরণ বা চুক্তির কোনো শর্তের ব্যত্যয়ের কারণে সাহিবুল মালের মূলধন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মুদারিব হতে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।

ঢাকা/টিএ