০৬:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

‘স্বল্প সময়ে বঙ্গবন্ধু জাতিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন’

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:৪২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪২০৮ বার দেখা হয়েছে

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।’

আজ রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ৭ এপ্রিল আনিত এক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা এ কথা বলেন।

গণপরিষদের সাবেক সদস্য ও চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার আক্ষেপ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে দেশে কোনও প্রতিবাদ হয়নি। আমরা অঝোরে কেঁদেছি। আমাদের হাতে কিছুই ছিল না, কিছুই করতে পারি নাই। আমরা মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের হাতিয়ার ছিল না, কিছুই ছিল না। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করেছি।’

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তিনি বলেন, ‘জেনারেল ওসমানীকে বঙ্গবন্ধু ভালোবাসতো। তার ওপরে সব দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বীর উত্তম, বীর বিক্রম সবকিছু। সে যাকে পাইছে, তাকে খেতাব দিছে। এর কোনও হিসাব ছিল না।’

জেনারেল ওসমানী তার প্রতিষ্ঠিত জাতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিতে মোশাররফ হোসেনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘উনি (ওসমানী) আমাকে টেলিফোন করে আমি জনতা পার্টি করেছি, আপনি আমার দলে থাকবেন। আমি বললাম, কী বললেন? আমি তো দল করি। আমাকে জিজ্ঞেস করে কোন দল করেন? আমি বললাম, আওয়ামী লীগ করি। সে আমাকে বলে, আওয়ামী লীগ কি এখনো আছে?’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকরা শুধু একটা মানুষকে হত্যা করেনি, তারা একটি স্বাধীন সংসদকেই নয়, একটা জাতিকে হত্যা করেছিল। বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পদদলিত করেছিল। এসব ঘটনা চোখ মেলে দেখা দরকার, তা না হলে বার বার আমাদের হোঁচট খেতে হবে।’

স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের শাস্তির আওতায় আনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি ল’ কমিশন নাকি এ ধরনের একটি আইনের প্রস্তাবনা দিয়েছে। এ আইনটিকে যাতে জাতিকে সেফ গার্ডে রাখার জন্য এ সংসদে পাস করা যায়, সে আহ্বান জানাব।’

মন্ত্রী বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা নেই বলেই বিএনপি সুযোগ পেলেই দেশের গণতন্ত্র, সংসদ ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করে। দেশকে সংবিধান অনুযায়ী চলতে হলে, সংসদকে সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে রূপান্তর এবং দেশ ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করতে হলে একটি আইন প্রণয়ন জরুরি।’

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, একটি রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ থাকে-নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা এবং বিচার বিভাগ। জাতীয় সংসদ সেই আইন সভা। এই সংসদ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত। বঙ্গবন্ধু আমাদের শুধু স্বাধীনতা দেননি। স্বাধীনতার ১০ মাস ১৩ দিনের মধ্যে আমাদেরকে একটি সংবিধান দিয়েছিলেন। এই সংবিধানে তিনি জাতীয় সংসদকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে রেখেছেন। তিনি এই সংসদের মাধ্যমে ৩ বছর ৭ মাস ৫ দিন শুধু আইন প্রণয়ন করেই এই দেশের আইনের ভীত স্থাপন করে দেননি।

সংসদের অধিবেশনের মাধ্যমে তিনি সংসদের রীতিনীতি, সংসদীয় প্র্যাকটিস এবং সংসদের মর্যাদা স্থাপন করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আমরা দেখেছি সেই সংসদের অবজ্ঞা, অশ্রদ্ধা এবং অকার্যকর করার জন্য স্বৈরাচার সরকার যত রকম পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তাই নিয়েছে। এই সংসদেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাস হয়েছে। আবার এই সংসদেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে। স্বৈরাচারী সরকার সংসদীয় রীতিনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আবার সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। তিনি এই সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। সংসদীয় কমিটি গুলোকে কার্যকর করেছেন। এতে সংসদের নিকট সরকারের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের সকল কার্যক্রম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করছে।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই সংসদ আমাদের সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এই সংসদকে বলা হয় ‘হাউস অব দ্য ন্যাশন’ অর্থাৎ সমগ্র জাতির ঠিকানা এই সংসদ। এই সংসদকে কার্যকর করতে জাতির পিতা তাঁর জীবনের সর্বস্ব দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের জন্য ছিলেন বিপজ্জনক, আর আমাদের জন্য ছিলেন আশীর্বাদ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।

সরকারি দলের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দেশের মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আজকে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গঠনে কাজ করছে। বাংলাদেশকে তিনি এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছেন যে, বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের অনেক দেশ অনুকরণ করে। মেহের আফরোজ বলেন, যে সংসদ জাতির পিতা দিয়ে গিয়েছিলেন খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেই সংসদকে কুলষিত করেছে।

আরও পড়ুন: ঈদে সড়কে শৃঙ্খলা কার্যকর করা বড় চ্যালেঞ্জ: সেতুমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণ করে সরকারি দলের সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন। কারণ, তাঁর ৪৪ মাস শাসনামলে ৭০টির বেশি অর্থনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে যারা সরাসরি জড়িত, তারাই শুধু নয়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও অনেকে ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা ছিল তাদেরকে খুঁজে বের করতে একটি কমিশন গঠন করতে হবে।

গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। জাতির অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখতে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত এই কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, সরকারি দলের সদস্য সরকারি দলের সদস্য ইকবালুর রহিম, শামীম ওসমান, সেলিম আলতাফ জর্জ, কাজী কেরামত আলী, সাইমুম সারওয়ার কমল, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, জাকিয়া তাবাসসুম, খান আহমেদ শুভ, শাহদাব আকবর, কাজী কানিজ ফাতেমা, বি এম কবিরুল হক, বেগম জাকিয়া পারভিন খানম, বেগম ফেরদৌসী ইসলাম ও বেগম মনিরা সুলতানা আলোচনায় অংশ নেন।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

‘স্বল্প সময়ে বঙ্গবন্ধু জাতিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন’

আপডেট: ০৮:৪২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।’

আজ রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ৭ এপ্রিল আনিত এক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা এ কথা বলেন।

গণপরিষদের সাবেক সদস্য ও চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার আক্ষেপ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে দেশে কোনও প্রতিবাদ হয়নি। আমরা অঝোরে কেঁদেছি। আমাদের হাতে কিছুই ছিল না, কিছুই করতে পারি নাই। আমরা মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের হাতিয়ার ছিল না, কিছুই ছিল না। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করেছি।’

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তিনি বলেন, ‘জেনারেল ওসমানীকে বঙ্গবন্ধু ভালোবাসতো। তার ওপরে সব দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বীর উত্তম, বীর বিক্রম সবকিছু। সে যাকে পাইছে, তাকে খেতাব দিছে। এর কোনও হিসাব ছিল না।’

জেনারেল ওসমানী তার প্রতিষ্ঠিত জাতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিতে মোশাররফ হোসেনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘উনি (ওসমানী) আমাকে টেলিফোন করে আমি জনতা পার্টি করেছি, আপনি আমার দলে থাকবেন। আমি বললাম, কী বললেন? আমি তো দল করি। আমাকে জিজ্ঞেস করে কোন দল করেন? আমি বললাম, আওয়ামী লীগ করি। সে আমাকে বলে, আওয়ামী লীগ কি এখনো আছে?’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ঘাতকরা শুধু একটা মানুষকে হত্যা করেনি, তারা একটি স্বাধীন সংসদকেই নয়, একটা জাতিকে হত্যা করেছিল। বাংলার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পদদলিত করেছিল। এসব ঘটনা চোখ মেলে দেখা দরকার, তা না হলে বার বার আমাদের হোঁচট খেতে হবে।’

স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের শাস্তির আওতায় আনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি ল’ কমিশন নাকি এ ধরনের একটি আইনের প্রস্তাবনা দিয়েছে। এ আইনটিকে যাতে জাতিকে সেফ গার্ডে রাখার জন্য এ সংসদে পাস করা যায়, সে আহ্বান জানাব।’

মন্ত্রী বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা নেই বলেই বিএনপি সুযোগ পেলেই দেশের গণতন্ত্র, সংসদ ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করে। দেশকে সংবিধান অনুযায়ী চলতে হলে, সংসদকে সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে রূপান্তর এবং দেশ ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করতে হলে একটি আইন প্রণয়ন জরুরি।’

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, একটি রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ থাকে-নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা এবং বিচার বিভাগ। জাতীয় সংসদ সেই আইন সভা। এই সংসদ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত। বঙ্গবন্ধু আমাদের শুধু স্বাধীনতা দেননি। স্বাধীনতার ১০ মাস ১৩ দিনের মধ্যে আমাদেরকে একটি সংবিধান দিয়েছিলেন। এই সংবিধানে তিনি জাতীয় সংসদকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে রেখেছেন। তিনি এই সংসদের মাধ্যমে ৩ বছর ৭ মাস ৫ দিন শুধু আইন প্রণয়ন করেই এই দেশের আইনের ভীত স্থাপন করে দেননি।

সংসদের অধিবেশনের মাধ্যমে তিনি সংসদের রীতিনীতি, সংসদীয় প্র্যাকটিস এবং সংসদের মর্যাদা স্থাপন করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আমরা দেখেছি সেই সংসদের অবজ্ঞা, অশ্রদ্ধা এবং অকার্যকর করার জন্য স্বৈরাচার সরকার যত রকম পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তাই নিয়েছে। এই সংসদেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাস হয়েছে। আবার এই সংসদেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে। স্বৈরাচারী সরকার সংসদীয় রীতিনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আবার সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। তিনি এই সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। সংসদীয় কমিটি গুলোকে কার্যকর করেছেন। এতে সংসদের নিকট সরকারের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের সকল কার্যক্রম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করছে।

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই সংসদ আমাদের সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এই সংসদকে বলা হয় ‘হাউস অব দ্য ন্যাশন’ অর্থাৎ সমগ্র জাতির ঠিকানা এই সংসদ। এই সংসদকে কার্যকর করতে জাতির পিতা তাঁর জীবনের সর্বস্ব দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের জন্য ছিলেন বিপজ্জনক, আর আমাদের জন্য ছিলেন আশীর্বাদ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।

সরকারি দলের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দেশের মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আজকে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গঠনে কাজ করছে। বাংলাদেশকে তিনি এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছেন যে, বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের অনেক দেশ অনুকরণ করে। মেহের আফরোজ বলেন, যে সংসদ জাতির পিতা দিয়ে গিয়েছিলেন খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেই সংসদকে কুলষিত করেছে।

আরও পড়ুন: ঈদে সড়কে শৃঙ্খলা কার্যকর করা বড় চ্যালেঞ্জ: সেতুমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণ করে সরকারি দলের সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন। কারণ, তাঁর ৪৪ মাস শাসনামলে ৭০টির বেশি অর্থনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে যারা সরাসরি জড়িত, তারাই শুধু নয়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও অনেকে ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা ছিল তাদেরকে খুঁজে বের করতে একটি কমিশন গঠন করতে হবে।

গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। জাতির অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখতে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত এই কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, সরকারি দলের সদস্য সরকারি দলের সদস্য ইকবালুর রহিম, শামীম ওসমান, সেলিম আলতাফ জর্জ, কাজী কেরামত আলী, সাইমুম সারওয়ার কমল, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, জাকিয়া তাবাসসুম, খান আহমেদ শুভ, শাহদাব আকবর, কাজী কানিজ ফাতেমা, বি এম কবিরুল হক, বেগম জাকিয়া পারভিন খানম, বেগম ফেরদৌসী ইসলাম ও বেগম মনিরা সুলতানা আলোচনায় অংশ নেন।

ঢাকা/এসএ