১১:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:১৩:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩
  • / ৪১৮৩ বার দেখা হয়েছে

টাইব্রেকারের পঞ্চম শট। মোহামেডানের কামরুলের নেয়া শট গোললাইন অতিক্রম করার পরপরই কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মোহামেডানের উল্লাস। পুরো ডাগ আউট ফেটে পড়ল আনন্দে। গ্যালারীতেও বয়ে যায় সাদা-কালো উল্লাস। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতল মোহামেডান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউভ

১৯৮০ সালে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের অভিষেক চ্যাম্পিয়নও ছিল মোহামেডান। যৌথভাবে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে জিতেছিল সাদা-কালো দলটি। প্রথম আসরে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটির বিদেশি খেলোয়াড় আজকে করলেন এক বিশেষ ইতিহাস। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আর কোনো ফুটবলার চারটি গোলের কৃতিত্ব নেই। আসরের ৪৩ বছরের ইতিহাসে এমন বিরল রেকর্ড গড়লেন এই মালির ফুটবলার।

কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে যেন ফিরে এসেছিল কাতার বিশ্বকাপের লুসাইলের ফাইনাল। আর্জেন্টিনা দুই গোলে লীড নিয়েছিল এরপর ফ্রান্স জোড়া গোল করে সমতা আনে। আজকের ম্যাচেও এমন হয়েছে। আবাহনী দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মোহামেডান ২-২ এ সমতা আনে।

ম্যাচের প্রথমার্ধে আবাহনী ২-০ গোলে লীড নিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে চার মিনিটের ব্যবধানে মোহামেডান এই দুই গোল পরিশোধ করে। এর কিছুক্ষণ পরই আবার আবাহনী গোল করে লীড নেয়। তবে ৮০ মিনিটের পর সুলেমান দিয়াবাতের হ্যাটট্রিকে মোহামেডান ম্যাচে সমতা আনে। ফেডারেশন কাপের ফাইনালের ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম হ্যাটট্রিকের ঘটনা।

নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ গোলের সমতায় খেলা শেষ হয়। ফলে আট বছর পর ফেডারেশন কাপের ফাইনাল অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। বিশ্বকাপের ফাইনালের মতোই বাংলাদেশের ফেডারেশন কাপের ফাইনালেও একটি করে গোল হয়। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শুরুতে আবাহনী চেপে ধরে মোহামেডানকে। গোলরক্ষক সুজন দুর্দান্ত দু’টি সেভ না করলে মোহামেডান ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে পারত।আবাহনীর বিপক্ষে সেরাটা দিয়ে অবিষ্মরণীয় জয়ের পর মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা

রেফারিং নিয়ে দাবি তোলা মোহামেডান এই ম্যাচে পেনাল্টি পায়। অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতেকে ফাউল করলে রেফারি আলমগীর পেনাল্টির বাঁশি বাজান। এখান থেকে দিয়াবাতের গোলে মোহামেডান ম্যাচে প্রথমবারের মতো লীড নেয়।

আরও পড়ুন: চরম নাটকীয়তা শেষে চেন্নাইয়ের পঞ্চম শিরোপা

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন। বদলি গোলরক্ষক বিপু মাঠে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই রহমতের গোলে সমতা আনে আবাহনী। ফলে ৪-৪ গোলে সমতা থাকা ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ায়।

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনালেও এমবাপের ন্যায় সুলেমান প্রথমে শট নিতে আসেন। সুলেমান গোলও করেন। আবাহনীর প্রথম শটটি মিস করেন রাফায়েল। মোহামেডান টাইব্রেকারে শুরুতেই লীড বজায় রাখে। মোহামেডানের চতুর্থ শট মিস হলে টাইব্রেকারে সমতা আনার সুযোগ ছিল আবাহনীর। বিশ্বকাপ খেলা ফুটবলার কোস্টারিকান ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস টাইব্রেকার মিস করেন। পঞ্চম শটে কামরুল গোল করলে ১৪ বছরের ফেডারেশন কাপের শিরোপা বন্ধ্যাত্বতা ঘোচায় মোহামেডান।

প্রথমবারের মতো আবাহনী-মোহামেডানের ফাইনাল ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লাবাসী অসাধারণ একটি ম্যাচের সাক্ষী হয়েছে। কর্মব্যস্ত মঙ্গলবার ও জৈষ্ঠের ভরদুপুরে যারা এসেছিলেন তারা সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম সেরা ম্যাচের স্বাক্ষীও হয়েছেন। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামও যেন চেয়েছে মোহামেডানের হাতেই উঠুক শিরোপা। পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া মোহামেডান ও কুমিল্লার সন্তান বাদল রায়ও যেন দলের এমন পারফরম্যান্সে তৃপ্তি পেয়েছেন। সাবেক এই ফুটবলারের উদ্যোগেই এটি মোহামেডানের হোম ভেন্যু হয় এবং এখন দেশের অন্যতম সেরা ফুটবল ভেন্যু।

ঢাকা/এসএম

শেয়ার করুন

x
English Version

১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান

আপডেট: ০৭:১৩:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

টাইব্রেকারের পঞ্চম শট। মোহামেডানের কামরুলের নেয়া শট গোললাইন অতিক্রম করার পরপরই কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মোহামেডানের উল্লাস। পুরো ডাগ আউট ফেটে পড়ল আনন্দে। গ্যালারীতেও বয়ে যায় সাদা-কালো উল্লাস। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতল মোহামেডান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউভ

১৯৮০ সালে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের অভিষেক চ্যাম্পিয়নও ছিল মোহামেডান। যৌথভাবে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে জিতেছিল সাদা-কালো দলটি। প্রথম আসরে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটির বিদেশি খেলোয়াড় আজকে করলেন এক বিশেষ ইতিহাস। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আর কোনো ফুটবলার চারটি গোলের কৃতিত্ব নেই। আসরের ৪৩ বছরের ইতিহাসে এমন বিরল রেকর্ড গড়লেন এই মালির ফুটবলার।

কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে যেন ফিরে এসেছিল কাতার বিশ্বকাপের লুসাইলের ফাইনাল। আর্জেন্টিনা দুই গোলে লীড নিয়েছিল এরপর ফ্রান্স জোড়া গোল করে সমতা আনে। আজকের ম্যাচেও এমন হয়েছে। আবাহনী দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মোহামেডান ২-২ এ সমতা আনে।

ম্যাচের প্রথমার্ধে আবাহনী ২-০ গোলে লীড নিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে চার মিনিটের ব্যবধানে মোহামেডান এই দুই গোল পরিশোধ করে। এর কিছুক্ষণ পরই আবার আবাহনী গোল করে লীড নেয়। তবে ৮০ মিনিটের পর সুলেমান দিয়াবাতের হ্যাটট্রিকে মোহামেডান ম্যাচে সমতা আনে। ফেডারেশন কাপের ফাইনালের ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম হ্যাটট্রিকের ঘটনা।

নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ গোলের সমতায় খেলা শেষ হয়। ফলে আট বছর পর ফেডারেশন কাপের ফাইনাল অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। বিশ্বকাপের ফাইনালের মতোই বাংলাদেশের ফেডারেশন কাপের ফাইনালেও একটি করে গোল হয়। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শুরুতে আবাহনী চেপে ধরে মোহামেডানকে। গোলরক্ষক সুজন দুর্দান্ত দু’টি সেভ না করলে মোহামেডান ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে পারত।আবাহনীর বিপক্ষে সেরাটা দিয়ে অবিষ্মরণীয় জয়ের পর মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা

রেফারিং নিয়ে দাবি তোলা মোহামেডান এই ম্যাচে পেনাল্টি পায়। অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতেকে ফাউল করলে রেফারি আলমগীর পেনাল্টির বাঁশি বাজান। এখান থেকে দিয়াবাতের গোলে মোহামেডান ম্যাচে প্রথমবারের মতো লীড নেয়।

আরও পড়ুন: চরম নাটকীয়তা শেষে চেন্নাইয়ের পঞ্চম শিরোপা

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন। বদলি গোলরক্ষক বিপু মাঠে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই রহমতের গোলে সমতা আনে আবাহনী। ফলে ৪-৪ গোলে সমতা থাকা ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ায়।

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনালেও এমবাপের ন্যায় সুলেমান প্রথমে শট নিতে আসেন। সুলেমান গোলও করেন। আবাহনীর প্রথম শটটি মিস করেন রাফায়েল। মোহামেডান টাইব্রেকারে শুরুতেই লীড বজায় রাখে। মোহামেডানের চতুর্থ শট মিস হলে টাইব্রেকারে সমতা আনার সুযোগ ছিল আবাহনীর। বিশ্বকাপ খেলা ফুটবলার কোস্টারিকান ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস টাইব্রেকার মিস করেন। পঞ্চম শটে কামরুল গোল করলে ১৪ বছরের ফেডারেশন কাপের শিরোপা বন্ধ্যাত্বতা ঘোচায় মোহামেডান।

প্রথমবারের মতো আবাহনী-মোহামেডানের ফাইনাল ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লাবাসী অসাধারণ একটি ম্যাচের সাক্ষী হয়েছে। কর্মব্যস্ত মঙ্গলবার ও জৈষ্ঠের ভরদুপুরে যারা এসেছিলেন তারা সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম সেরা ম্যাচের স্বাক্ষীও হয়েছেন। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামও যেন চেয়েছে মোহামেডানের হাতেই উঠুক শিরোপা। পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া মোহামেডান ও কুমিল্লার সন্তান বাদল রায়ও যেন দলের এমন পারফরম্যান্সে তৃপ্তি পেয়েছেন। সাবেক এই ফুটবলারের উদ্যোগেই এটি মোহামেডানের হোম ভেন্যু হয় এবং এখন দেশের অন্যতম সেরা ফুটবল ভেন্যু।

ঢাকা/এসএম