১০:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

২২৭ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে রবির বিরুদ্ধে মামলা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৫৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২
  • / ৪২১৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ২২৭ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। 

সোমবার (২২ আগস্ট) ঢাকা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তিনি এ মামলা করেন। আদালত থেকে আজ বুধবার (২৪ আগস্ট) মামলার বিষয়টি জানা যায়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মামলায় বিবাদী করা হয়েছে, রবির মালয়েশিয়া-ভিত্তিক প্যারেন্ট কোম্পানি আজিয়েটা গ্রুপের সাবেক প্রধান নির্বাহী দাতো মো. ইজাজুদ্দিন ইদ্রিস, রবির চেয়ারম্যান থায়াপারান এস সাঙ্গারাপিল্লাই, রবির দুই পরিচালক ড. হান্স বিজয়সুরিয়া ও বিবেক সুদকে। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলার বাদী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ চাকরিকালীন নানা সুযোগ-সুবিধার অপরিশোধিত ভাতা বাবদ ১৬ কোটি টাকার বেশি দাবি করেছেন। ৫০ কোটি টাকা চেয়েছেন মানহানির ক্ষতিপূরণ বাবদ। আরও ৫০ কোটি টাকা দাবি করেছেন মানসিক দুর্দশার জন্য। আর চাকরির বাজারে সুযোগ হারানোর জন্য চেয়েছেন ১১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা রবি আজিয়াটায় তার চাকরিকালীন বার্ষিক বেতনভাতা কাঠামোর চেয়ে ১০ গুণ বেশি।

২০১০ সালে রবি আজিয়াটায় চাকরি শুরু করেন মাহতাব। প্রথমে যোগ দিয়েছিলেন প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (সিএফও) পদে। এরপর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এবং সবশেষে ২০১৬-২১ সময় পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত বছরের আগস্টে তিনি কোম্পানির সঙ্গে নিজের চাকরির চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুসারে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে রবির বিবৃতি সূত্রে জানা যায়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, রবির বোর্ড মাত্র তিনদিনের মধ্যে মাহতাবের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলেও চলতি বছরের মে মাসে তার বিরুদ্ধে একটি অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যায্যভাবে তাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এসময়ে চাকরির সুযোগ-সুবিধা বাবদ যে ২০ কোটি টাকা পাওনা ছিল তার মধ্যে মাহতাবকে মাত্র ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়েছে কোম্পানিটি।

মাহতাব উদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সার্বিক বিষয় নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি প্রায় তিন বছর চুপ ছিলাম। আজ আর নয়। বন্ধ দরজার আড়ালে যা যা হয়েছে সবকিছুই আমার রবি টিম, পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা জানার অধিকার রাখেন।’

‘২০১৯ এর আগস্ট থেকে এ্যাক্সিয়াটা গ্রুপ এবং গ্রুপের জিসিইও (দাতো’ ইজ্জাদিন ইদ্রিস) এর সাথে আমার সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করে। কারণ, আমার চুক্তি নবায়ন এবং ভাতা বৃদ্ধি বিষয়ে তাদের গুরুতর অবহেলা। আমি যথেষ্ঠ সম্মানের সাথে জিসিইও-এর চুক্তি ফিরিয়ে দেই। নভেম্বর ২০২০ এর এক আলোচনার পরে কোনোরকমের মনোমালিন্য ছাড়াই আমি সেখান থেকে সরে আসতে চাই, যার প্রত্যুত্তরে আমি সম্ভাব্য ফলাফলের হুমকি সহ ইমেইল পাই। সত্যি বলতে, তাদের দেয়া মিথ্যা আশ্বাস এবং সংশোধিত বেতন-ভাতা আমার চাকরী, আমার স্বপ্ন, আমার সবকিছুকেই এক অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিয়েছিল। এবং এই সবকিছুই আমার কাজের চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল।’

‘এতকিছুর পরও আমি কখনোই আমার কঠোর পরিশ্রম এবং রবি’র প্রতি আমার অঙ্গীকারে ব্যাঘাত ঘটতে দেইনি। ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি এই কোম্পানির প্রতি দায়িত্ব পালন করে গেছি। যখন আমি রবি ছেড়ে দেই, ২০২১ এর আগস্টে, তখন আমার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার এবং রবি’র পারফর্মেন্স – দুটোই সফলতার শিখরে ছিল। আমার সময়ে কোম্পানিটা উপরের কিছু মানুষের ক্ষমতার দুর্ব্যবহারে নিমজ্জিত ছিল। আমার পদত্যাগের প্রায় ১০ মাস পরে, ২৫ মে ২০২২-এ, আমাকে জানানো হয় যে- আমি অবসর সুবিধাসমূহ পাবো না, কারণ আমাকে ২০২১ এর ৩১ অক্টোবরই বহিষ্কার করা হয়েছে। একটা প্রসিদ্ধ কোম্পানি কি কখনও একজনকে বহিষ্কার করতে পারে, যে তার কোম্পানিতে আর কর্মী হিসেবেই নেই? তাও আবার পদত্যাগের ১০ মাস পরে?’

ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘জিসিইও সাহেব কিন্তু আমার পদত্যাগের পরও হয়রানি থামাননি। আমাকে বিভিন্নভাবে ফাঁসাতে চেয়েছেন, কিন্তু পারেননি। ২০১৯ এর এক ট্রানজেকশন নিয়েও কথা তুলেছেন; আইটেম এর ক্যাপেক্স/ওপেক্স হওয়া নিয়ে। বিক্রেতা থেকে শুরু করে সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষক এবং স্থানীয় ম্যানেজমেন্ট টিম কেউই কোনো অনৈতিক ঘটনা ঘটার ইঙ্গিত দেননি, যেটা রবি’র ২০২১-এর ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টেও প্রতিফলিত হয়।’

মাহতাব আহমেদ লিখেছেন, ‘নিতান্তই কর্পোরেট প্রতিহিংসার কারণে ৩১ বছরের এক্সিকিউটিভ ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করে দেখুন- চুক্তিবদ্ধ বোনাস, শেয়ার, অবসর সুবিধাসমূহ সবকিছু থেকেই আপনি বঞ্চিত হলেন; মর্যাদাহানি আর গুজবের কারণে কর্পোরেট জগতে কুখ্যাত হয়ে উঠলেন। একটি হাই প্রোফাইল ক্যারিয়ার এবং কয়েক দশকের অভিজ্ঞতার জায়গায় চলে আসে আর্থিক বঞ্চনা এবং মানসিক যন্ত্রনা। টাকা দিয়ে এই অবিচারের ক্ষতিপূরণ হবে না।

তিনি বলেন, ‘যারাই আমাকে একজন ব্যাক্তি হিসেবে চেনেন, তাদের বুঝতে একটু কষ্ট হবে যে কেন আমি আদালত থেকে বিচার পাওয়ার এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি বিলিয়ন ডলার কোম্পানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করার কথা আমাকে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে শুরু করে পরামর্শদাতা সবাই বলেছেন। আমি যেন এগুলো ভুলে গিয়ে জীবনে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবি – এই পরামর্শ দিয়েছেন। আমি কীভাবে পারবো সেটা? আমার মতো আরও অনেক বাংলাদেশি এরকম কর্পোরেট পলিটিক্স এবং ফাউল প্লে এর শিকার। এবং বেশিরভাগই ফাইট করার সাহস পাননি, সেই একই ভয়ের কারণে, কিংবা ক্যারিয়ারের ক্ষতি হবার ভয়ে। আজকে, আমি জানি আমি আমার নৈতিক দায়িত্ব পালন করছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে ফাইট করছি যারা এ রকমের অনৈতিক কাজ করতে পারে কোনোরকমের পরিণতির ভয় ছাড়াই, কারণ তাদের ক্ষমতা তাদেরকে একজন “ইন্ডিভিজুয়াল” এর চাইতে শক্তিশালী করে রেখেছে। আমার সবার প্রতি একটাই অনুরোধ – রবি এবং আমার প্রতি ন্যায্য অভিমত পোষণ করবেন, এবং মাননীয় আদালত-কে একটি প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্তে আসার সুযোগ দেবেন।’

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার ওঠানামা করবে এটা স্বাভাবিক: ছায়েদুর রহমান

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

২২৭ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে রবির বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট: ০৪:৫৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ২২৭ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। 

সোমবার (২২ আগস্ট) ঢাকা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তিনি এ মামলা করেন। আদালত থেকে আজ বুধবার (২৪ আগস্ট) মামলার বিষয়টি জানা যায়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মামলায় বিবাদী করা হয়েছে, রবির মালয়েশিয়া-ভিত্তিক প্যারেন্ট কোম্পানি আজিয়েটা গ্রুপের সাবেক প্রধান নির্বাহী দাতো মো. ইজাজুদ্দিন ইদ্রিস, রবির চেয়ারম্যান থায়াপারান এস সাঙ্গারাপিল্লাই, রবির দুই পরিচালক ড. হান্স বিজয়সুরিয়া ও বিবেক সুদকে। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মামলার বাদী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ চাকরিকালীন নানা সুযোগ-সুবিধার অপরিশোধিত ভাতা বাবদ ১৬ কোটি টাকার বেশি দাবি করেছেন। ৫০ কোটি টাকা চেয়েছেন মানহানির ক্ষতিপূরণ বাবদ। আরও ৫০ কোটি টাকা দাবি করেছেন মানসিক দুর্দশার জন্য। আর চাকরির বাজারে সুযোগ হারানোর জন্য চেয়েছেন ১১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা রবি আজিয়াটায় তার চাকরিকালীন বার্ষিক বেতনভাতা কাঠামোর চেয়ে ১০ গুণ বেশি।

২০১০ সালে রবি আজিয়াটায় চাকরি শুরু করেন মাহতাব। প্রথমে যোগ দিয়েছিলেন প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (সিএফও) পদে। এরপর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এবং সবশেষে ২০১৬-২১ সময় পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত বছরের আগস্টে তিনি কোম্পানির সঙ্গে নিজের চাকরির চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুসারে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে রবির বিবৃতি সূত্রে জানা যায়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, রবির বোর্ড মাত্র তিনদিনের মধ্যে মাহতাবের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলেও চলতি বছরের মে মাসে তার বিরুদ্ধে একটি অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যায্যভাবে তাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এসময়ে চাকরির সুযোগ-সুবিধা বাবদ যে ২০ কোটি টাকা পাওনা ছিল তার মধ্যে মাহতাবকে মাত্র ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়েছে কোম্পানিটি।

মাহতাব উদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সার্বিক বিষয় নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি প্রায় তিন বছর চুপ ছিলাম। আজ আর নয়। বন্ধ দরজার আড়ালে যা যা হয়েছে সবকিছুই আমার রবি টিম, পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা জানার অধিকার রাখেন।’

‘২০১৯ এর আগস্ট থেকে এ্যাক্সিয়াটা গ্রুপ এবং গ্রুপের জিসিইও (দাতো’ ইজ্জাদিন ইদ্রিস) এর সাথে আমার সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করে। কারণ, আমার চুক্তি নবায়ন এবং ভাতা বৃদ্ধি বিষয়ে তাদের গুরুতর অবহেলা। আমি যথেষ্ঠ সম্মানের সাথে জিসিইও-এর চুক্তি ফিরিয়ে দেই। নভেম্বর ২০২০ এর এক আলোচনার পরে কোনোরকমের মনোমালিন্য ছাড়াই আমি সেখান থেকে সরে আসতে চাই, যার প্রত্যুত্তরে আমি সম্ভাব্য ফলাফলের হুমকি সহ ইমেইল পাই। সত্যি বলতে, তাদের দেয়া মিথ্যা আশ্বাস এবং সংশোধিত বেতন-ভাতা আমার চাকরী, আমার স্বপ্ন, আমার সবকিছুকেই এক অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিয়েছিল। এবং এই সবকিছুই আমার কাজের চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল।’

‘এতকিছুর পরও আমি কখনোই আমার কঠোর পরিশ্রম এবং রবি’র প্রতি আমার অঙ্গীকারে ব্যাঘাত ঘটতে দেইনি। ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি এই কোম্পানির প্রতি দায়িত্ব পালন করে গেছি। যখন আমি রবি ছেড়ে দেই, ২০২১ এর আগস্টে, তখন আমার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার এবং রবি’র পারফর্মেন্স – দুটোই সফলতার শিখরে ছিল। আমার সময়ে কোম্পানিটা উপরের কিছু মানুষের ক্ষমতার দুর্ব্যবহারে নিমজ্জিত ছিল। আমার পদত্যাগের প্রায় ১০ মাস পরে, ২৫ মে ২০২২-এ, আমাকে জানানো হয় যে- আমি অবসর সুবিধাসমূহ পাবো না, কারণ আমাকে ২০২১ এর ৩১ অক্টোবরই বহিষ্কার করা হয়েছে। একটা প্রসিদ্ধ কোম্পানি কি কখনও একজনকে বহিষ্কার করতে পারে, যে তার কোম্পানিতে আর কর্মী হিসেবেই নেই? তাও আবার পদত্যাগের ১০ মাস পরে?’

ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘জিসিইও সাহেব কিন্তু আমার পদত্যাগের পরও হয়রানি থামাননি। আমাকে বিভিন্নভাবে ফাঁসাতে চেয়েছেন, কিন্তু পারেননি। ২০১৯ এর এক ট্রানজেকশন নিয়েও কথা তুলেছেন; আইটেম এর ক্যাপেক্স/ওপেক্স হওয়া নিয়ে। বিক্রেতা থেকে শুরু করে সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষক এবং স্থানীয় ম্যানেজমেন্ট টিম কেউই কোনো অনৈতিক ঘটনা ঘটার ইঙ্গিত দেননি, যেটা রবি’র ২০২১-এর ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্টেও প্রতিফলিত হয়।’

মাহতাব আহমেদ লিখেছেন, ‘নিতান্তই কর্পোরেট প্রতিহিংসার কারণে ৩১ বছরের এক্সিকিউটিভ ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করে দেখুন- চুক্তিবদ্ধ বোনাস, শেয়ার, অবসর সুবিধাসমূহ সবকিছু থেকেই আপনি বঞ্চিত হলেন; মর্যাদাহানি আর গুজবের কারণে কর্পোরেট জগতে কুখ্যাত হয়ে উঠলেন। একটি হাই প্রোফাইল ক্যারিয়ার এবং কয়েক দশকের অভিজ্ঞতার জায়গায় চলে আসে আর্থিক বঞ্চনা এবং মানসিক যন্ত্রনা। টাকা দিয়ে এই অবিচারের ক্ষতিপূরণ হবে না।

তিনি বলেন, ‘যারাই আমাকে একজন ব্যাক্তি হিসেবে চেনেন, তাদের বুঝতে একটু কষ্ট হবে যে কেন আমি আদালত থেকে বিচার পাওয়ার এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একটি বিলিয়ন ডলার কোম্পানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করার কথা আমাকে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে শুরু করে পরামর্শদাতা সবাই বলেছেন। আমি যেন এগুলো ভুলে গিয়ে জীবনে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবি – এই পরামর্শ দিয়েছেন। আমি কীভাবে পারবো সেটা? আমার মতো আরও অনেক বাংলাদেশি এরকম কর্পোরেট পলিটিক্স এবং ফাউল প্লে এর শিকার। এবং বেশিরভাগই ফাইট করার সাহস পাননি, সেই একই ভয়ের কারণে, কিংবা ক্যারিয়ারের ক্ষতি হবার ভয়ে। আজকে, আমি জানি আমি আমার নৈতিক দায়িত্ব পালন করছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে ফাইট করছি যারা এ রকমের অনৈতিক কাজ করতে পারে কোনোরকমের পরিণতির ভয় ছাড়াই, কারণ তাদের ক্ষমতা তাদেরকে একজন “ইন্ডিভিজুয়াল” এর চাইতে শক্তিশালী করে রেখেছে। আমার সবার প্রতি একটাই অনুরোধ – রবি এবং আমার প্রতি ন্যায্য অভিমত পোষণ করবেন, এবং মাননীয় আদালত-কে একটি প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্তে আসার সুযোগ দেবেন।’

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার ওঠানামা করবে এটা স্বাভাবিক: ছায়েদুর রহমান

ঢাকা/টিএ